Thursday, April 25, 2024
Homeরংপুর বিভাগগাইবান্ধা জেলাগাইবান্ধার পলাশবাড়ীর গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠেছে ভেড়ার খামার

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠেছে ভেড়ার খামার

শাহরিয়ার কবির আকন্দ- গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠেছে দেশী-বিদেশী জাতের ভেড়ার খামার। এসব খামার করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বি হয়েছেন।

উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের চকবালা গ্রামের আকালু-সাদেকা দম্পতি প্রথমে ১০টি বাচ্চা ভেড়া দিয়ে পাঁচ বছর আগে শুরু করে আজ তার খামারে ভেড়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে শতাধিক। বতর্মানে ২৫টি ভেড়া প্রেগনেন্ট এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ভেড়াগুলো বাচ্চা প্রসব করবে।

গাই
আকালু-সাদেকা দম্পতির মত প্রত‍্যন্ত অঞ্চলের নারী-পুরুষেরা ভেড়ার খামার করে পরিবারের বাড়তি আয়ের যোগান দিচ্ছেন। শিক্ষিত বেকার তরুণেরাও বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে গড়ে তুলেছেন ভেড়ার খামার।তারা বেকারত্ব দূর করে নিজেরা যেমন স্বাবলন্বি হচ্ছেন পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অবদান রাখছেন।

অন‍্যান‍্য প্রাণীর মতো বানিজ‍্যিকভাবে ভেড়া পালনের সুযোগ রয়েছে পলাশবাড়ী উপজেলায়।

অন‍্যান‍্য প্রাণীর চেয়ে এই প্রাণী লালন-পালনে খরচ ও রোগব‍্যাধি কম হওয়ায় ক্রমেই মানুষ এর খামারের দিকে ঝুঁকছে। আগে শুধু গরু বা ছাগল পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন নতুনত্ব ও সৃষ্টিশীল চিন্তা নিয়ে গ্রামগঞ্জের মানুষেরা নানান কিছু লালন-পালন করছেন। এরই প্রেক্ষিতে পলাশবাড়ী উপজেলায় গড়ে উঠেছে ব‍্যাপক ভেড়ার খামার। তুলনামূলক কম পুঁজিতে গড়ে তোলা ৪০ থেকে ৫০ টি ভাড়ার খামারে বছরে আয় হয় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা। দেশে ভেড়ার মাংসের ব‍্যাপক চাহিদা না থাকলেও বিদেশে রয়েছে এর ব‍্যাপক চাহিদা।

ভেড়ার খামারি আকালু-সাদেকা দম্পতি জানান- আমরা অর্থনৈতিকভাবে দৃর্বল। বাড়ীর মাত্র তিন শতাংশ জমিতে এই ভেড়ার খামার দিয়েছি। আশা আছে একশ ভেড়া করার। পুঁজি অভাবে খামার বৃদ্ধি করতে পারছি না। সরকারি-বেসরকারি ব‍্যাংক থেকে যদি সহজ শর্তে ঋণ পেতাম তাহলে আরো বেশি সফল হতাম।

এদম্পতি আরো বলেন- দশটি বাচ্চা ভেড়া দিয়ে শুরু করলেও এখন আমাদের ৫০টি ভেড়া রয়েছে। একটি ভেড়া বছরে দুইবার এবং প্রতিবারে ২ থেকে ৩ টি বাচ্চা দেয়। ছাগলের চেয়ে এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং বাচ্চার মৃত্যুর হারও কম। এছাড়াও শুকনো খড় এবং শস‍্যের অবশিষ্টাংশ খেয়েও জীবন ধারণ করতে পারে। আমরা এদের জঙ্গলে বা পতিত জমিতে ছেড়ে দিয়ে পালন করি।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জানান- পলাশবাড়ী উপজেলায় অজস্র ভেড়া-ছাগলের খামার গড়ে উঠেছে। ভেড়া পালনের সুবিধা অনেক। খুব অল্পসংখ‍্যক খাদ‍্য হলেই এদের চলে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক ভেড়া ২০ থেকে ২৫ কেজি হতে পারে। প্রতিটি ভেড়া থেকে ১ থেকে ১.৫ কেজি পশম পাওয়া যায়। যা দিয়ে উন্নতমানের শীতবস্ত্র নির্মাণ করা যায়। ভেড়া শতকরা ১২ ভাগ বাড়, যা গরু ছাগলও এত দ্রুত বাড়ে না। এদের বাসস্থানের খরচও কম। নরম, রসালো ও সুস্বাদু ভেড়ার মাংসে আমিষের পরিমাণ গরু ও ছাগলের চেয়ে বেশি। বানিজ‍্যিকভাবে গারোল প্রজাতির ভেড়া পালনে বেশ লাভজনক। একারণে খামারিদের আগ্রহ এখন ভেড়া পালনে।

এছাড়াও শিক্ষিতরা যদি বেকার বসে না থেকে সময় নষ্ট না করে বিভিন্ন খামারের প্রতি আকৃষ্ট হয় তবে শুধু নিজেকে স্বাবলম্বি নয় ;বরং অন‍্যদের চাকুরীর সুযোগ তৈরী হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সচ্ছলতাও আসবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments