শাহরিয়ার কবির আকন্দ- গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের কৃষক আয়তাল হক মূখি কচুসহ বেগুন, করলা ও পোটল চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
এখন তার বছরে ইনকাম ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা। এক সময় পরের জমিতে কৃষি শ্রমিক ও বাজারে মাছ বিক্রি করে সংসার চলত। বতর্মানে তার মাধ্যমে প্রায় দেড়শ নারী পুরুষ শ্রমিক ক্ষেতে খামারে কাজ করছে।
উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের মহদীপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত বাবু মিয়া শেখের ছেলে আয়তাল হক ৬ বিঘা জমিতে সিলেটী মূখি কচু লাগিয়েছেন। কচুর ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।
সফল কৃষক আয়তাল হক বলেন- আমি এবছর ৬ বিঘা জমিতে কচু,দু'বিঘা জমিতে করলা, দু'বিঘা জমিতে পোটল ও দু'বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছি।
ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। কচু প্রতি মন বিক্রি করছি ১৪'শ থেকে ১৫'শ টাকা। বিঘা প্রতি খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। কচু জমি থেকেই বিক্রি হয় বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।
খরচ বাদে বিঘায় ৩০ হাজার টাকার একটু বেশি লাভ হয়। আমি দীর্ঘ ২৪ বছর থেকে কচু চাষ করে আসছি। বাবার সংসারে অভাব অনাটন সব সময় লেগেই থাকত। ঠিকমত খেতে পারতাম না। বাজারে মাছ বিক্রি করে খেতাম। প্রতিবেশীর ক্ষেত খামারে কাজ কর্ম করতাম।
অর্থাৎ সৎ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য এমন কোন কাজ নাই যেটা আমি করি নাই। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকতে গেলে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। আমাকেও তাই করতে হয়েছে। আজ আমি যা কিছু করেছি সব ধর্য্য আর মহান আল্লাহ পাকের রহমতের বদৌলতে পেয়েছি। তবে আমার মনোবল সব সময় ঠিক ছিল।
এখন আর আমাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয় না। আমার আন্ডারে প্রায় প্রতিদিন দেড় শতাধিক কৃষি শ্রমিক কাজ করে বাড়ীতে এবং জমিতে। বছর শেষে কচু, পোটল, করলা ও বেগুন বিক্রি করে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘরে তুলতে পারি।
তিনি কৃষকদের উদ্যেশ্যয় বলেন- কৃষক হলেই হবে না। কৃষকের মত কৃষক হতে হবে। ফসল কি চাচ্ছে তা বোঝার পদ্ধতি জানতে হবে। সার ওষুধ কি পরিমান প্রয়োগ করতে হবে তা ভালোভাবে জানতে হবে। তবেই সে কৃষক লাভবান হতে পারবে।
নয়ত তাকে প্রতিটি ফসলে শুধু লোকশানই গুনতে হবে। সেকোনো দিন লাভের মুখ দেখতে পারবে না। যেমন মাঝখানে কচুতে লোকশান হয়েছে। আমি কচু না বিক্রি করে রেখে দিয়েছিলাম। এখন বাজার উঠেছে। আমি বিক্রি করা শুরু করে দিয়েছি।
আমার ৬ বিঘা কচু থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাব ইনশাইনশাআল্লা। আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে এস,এস,সি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর একজন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছে, মেয়ে ছোট।
সফল কচু চাষী আয়তাল আরো বলেন- সব ফসলেই মোটামুটি খরচ আছে। কচু মাঘ থেকে বৈশাখ পযর্ন্ত রোপন করা যায়। প্রতি শতকে দুইবারে ৮ কেজি সার দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। রোগ বালাই আছে তবে সেটা ধরে সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবস্থা নিলে, বেশি ক্ষতি করতে পারে না।
কচুর জমিতে কথা হয় নারী শ্রমিক আমেনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন- আমি সকাল ৯টা থেকে আসরের নামাজের আযান পযর্ন্ত কাজ করে পাব ৩০০শ টাকা।
আর একসঙ্গে কাজ করে পুরুষ শ্রমিকেরা পাবে ৫০০শ টাকা। এটা আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। তবে দুপুরে ভাত খাওয়ার এক ঘন্টা বিরতি আছে।
কৃষক আয়তাল হকের বাড়ীতে কচু বাছতে আসা শিল্পী রানী জানান, প্রতিমন কচু বাছনা করে পাই ৬৫ টাকা। সারাদিন দুই মন কচু বাছতে পারি।
আমার স্বামী মাছ বিক্রি করে। আমি সংসারের সব কাজ শেষ করে এখানে এসে কচু বাছাই করি।
আরেক নারী নুপুর রানী বলেন- আমার স্বামী মানুষের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে। তার একার পক্ষে সংসার চালানো একটু কষ্টকর। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে সিজনাল বিভিন্ন কৃষি কাজগুলো করে থাকি। যেগুলো আমার পক্ষে করা একটু সহজ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা কাওসার মিশু জানান- কৃষক আয়তাল হককে কৃষি উপকরণ দিয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছি। পাশাপাশি তার ফসলের বিভিন্ন রোগ বালাই নাশকের জন্য পরামর্শ অব্যাহত রেখেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন জানান- আমরা সরকারিভাবে কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনাসহ কৃষি উপকরণ ও সার বীজ বিনামুল্যেয় প্রদান করছি। কৃষক আয়তাল হক একজন সফল কৃষক বছর শেষে সে লাভবান হচ্ছে জেনে ভালো লাগছে।
“উপদেষ্টা
ও সম্পাদক
মন্ডলী”
প্রধান উপদেষ্টা- মোঃ মকবুল হোসেন।
আইন উপদেষ্টা- মোঃ জুয়েল ইসলাম।
প্রকাশক ও সম্পাদক- লাতিফুল সাফি ডায়মন্ড।
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক- বাপ্পি সরকার।
“বার্তা
সম্পাদকীয় অস্থায়ী
কার্যালয়”
নিরাপদ টেলিকম এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট,
কিশোরগঞ্জ রোড, তারাগঞ্জ বাজার- রংপুর মোবাইলঃ +8801735661194.
সংবাদ পাঠানোর ই-মেইলঃ 71sangbad24.com@gmail.com,
পত্রিকাটি বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশনে নিবন্ধিত-(আই ডি নং-364) এবং বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।