রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূল’সহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সারা দেশব্যাপী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক যথারীতি অভিযান চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর মিরপুরে ও ঢাকার সাভারে অবস্থিত 'চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার' আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা- মিরপুর বিভাগ। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। রাতে ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) বলেন, মিল্টন সমাদ্দারকে সুর্নিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ গুলো অত্যান্ত ভয়ংকর। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। যদি তিনি এগুলো করে থাকেন, তবে ভয়ংকর অপরাধ করেছেন। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ উঠেছে। তার প্রতিষ্ঠিত আশ্রয়কেন্দ্রে অসহায় শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আসতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তিনি স্বীকার করেছেন, তার আশ্রয়কেন্দ্রে অপারেশন থিয়েটার আছে। যদি অপারেশন থিয়েটার থাকে বা হাসপাতাল থাকে, সেটির লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু তিনি এ-সংক্রান্ত কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, মিল্টন সমাদ্দার আশ্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বেশির ভাগ লাশ রাতে দাফন করতেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, রাতে লাশ দাফন করেন কেন? তিনি জবাব দিয়েছেন, রাতে লাশ দাফন না করলে মানুষ আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে।
তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দার লাশ দাফনের যে হিসাব দিয়েছেন, সেখানেও গরমিল আছে। আমরা এটাও জেনেছি, ইতিমধ্যে তিনি ৯০০ লাশ দাফন করেছেন। কিন্তু ৮৩৫টি লাশের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। এসব লাশ দাফনের কোনো ডকুমেন্ট তার কাছে নেই। তিনি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন, নিজেই মৃত্যু সনদ তৈরি করে চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল জাল করতেন। তার আশ্রমের পাশে একটা মসজিদ আছে, সেখান থেকেও প্রশ্ন উঠেছে, লাশের শরীরে কিডনির পাশে রক্তের দাগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মিল্টন সমাদ্দারের দুটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, তার একটি আশ্রয়কেন্দ্র মিরপুরে এবং অন্যটি সাভারে। আশ্রয়কেন্দ্রে ৫০০ থেকে ৭০০ লোক রয়েছে। কিন্তু সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০-৩০ বা ৪০ জনের বেশি নেই। আমাদের কথা হলো, আমরা তাকে নিয়ে এসেছি। কিছু অভিযোগকারী রয়েছে, তারা মামলা করবেন। আমরা তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করব, কত সংখ্যক মানুষ তার আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে ছিলেন। সেখানে কত সংখ্যক মানুষ মারা গেলেন। তিনি যেখানে অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করেছেন, সেখান থেকে কিডনি বিক্রি করেছেন কি না, সেই অভিযোগটিও তদন্ত করা হবে।
মিল্টন সমাদ্দারের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে জানিয়ে তিনি বলেন, মিল্টনের উত্থান হচ্ছে বাবাকে পেটানোর পর এলাকাবাসী তাকে এলাকাছাড়া করে। তারপর শাহবাগে এসে একটি ফার্মেসিতে কাজ করেন। সেখানে ওষুধ চুরির কারণে তাকে বের করে দেওয়া হয়। একটা পর্যায়ে কিছু লেখাপড়া করেন। পরে মিঠু হালদার নামের এক নার্সকে বিয়ে করেন। বিয়ে করার পর স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুরে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) ২০২৪ইং ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) জানান, গ্রেফতারকৃত মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় ৩-টি মামলা রুজু হয়েছে। আজকে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে ৭-দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৩-দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। উল্লেখ্য, গত (২৫ এপ্রিল) একটি জাতীয় দৈনিকে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে প্রতারণার নানা অভিযোগ উঠে আসে।
এতে বলা হয়, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ১৬-টির বেশি নম্বর এবং তিনটি ব্যাংক হিসাবে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা জমা হয়। এর বাইরে অনেকেই তার প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অনুদান দিয়ে আসেন। এই অর্থের অপব্যবহার করেন লিটন সমাদ্দার। মানবিক কাজের জন্য এ পর্যন্ত তিনি তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।
“উপদেষ্টা
ও সম্পাদক
মন্ডলী”
প্রধান উপদেষ্টা- মোঃ মকবুল হোসেন।
আইন উপদেষ্টা- মোঃ জুয়েল ইসলাম।
প্রকাশক ও সম্পাদক- লাতিফুল সাফি ডায়মন্ড।
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক- বাপ্পি সরকার।
“বার্তা
সম্পাদকীয় অস্থায়ী
কার্যালয়”
নিরাপদ টেলিকম এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট,
কিশোরগঞ্জ রোড, তারাগঞ্জ বাজার- রংপুর মোবাইলঃ +8801735661194.
সংবাদ পাঠানোর ই-মেইলঃ 71sangbad24.com@gmail.com,
পত্রিকাটি বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশনে নিবন্ধিত-(আই ডি নং-364) এবং বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।