Tuesday, April 23, 2024
Homeরংপুর বিভাগরংপুর জেলারংপুরে উপবৃত্তি পেতে কতৃপক্ষকে দুই হাজার টাকা উৎকোচ

রংপুরে উপবৃত্তি পেতে কতৃপক্ষকে দুই হাজার টাকা উৎকোচ

হারুন-অর-রশিদ- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার খলেয়া খাপড়ীখাল স্কুল এন্ড কলেজে উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি দের থেকে থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, উপবৃত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ আদায় করা যাবে না। রাষ্ট্রীয় পজ্ঞাপন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের যোগসাজশে উপবৃত্তির তালিকাভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের নিকট অনৈতিক উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা।

একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সুত্রে জানা যায়- অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত খাপড়ীখাল স্কুল এন্ড কলেজের ষ্টাফরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্য দিবালোকে শিক্ষার্থীদের উপর প্রেসার দিয়ে টাকা আদায় করে নিচ্ছেন।

অভিভাবক পরিচয়ে কলেজে ফোন দিলে দূর্ণীতির অন্যতম হোতা কলেজের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর বলেন, আপনি যত গরিব হন না কেন আপনি উপবৃত্তি পেতে চাইলে কমপক্ষে ১৫০০ টাকা দিতে হবে। ফরম পুরন করতে অনলাইন খরচ আছে। অফিসের অফিস স্টাফকে দেওয়া লাগবে তাই পনেরো শত টাকা ছাড়া উপবৃত্তি হবে না। সরজমিন তদন্তে টাকা নেয়ার যথার্থ প্রমানও মিলে। যদিও সাংবাদিক পরিচয় জেনে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেন অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর হোসেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খলেয়া খাপড়ীখাল স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন- আমাদের কাছ থেকে উপবৃত্তি করে দেওয়ার জন্য দুই হাজার করে টাকা নিচ্ছেন। যারা বেশী দরিদ্র বিশেষ অনুরোধ ও পরিচিতদের মাধ্যমে তদবির করলে তাদের নিকট পাঁচশত টাকা কমিয়ে দের হাজার করে টাকা নিচ্ছে। এমন অভিযোগ দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও করেন সাংবাদিকদের নিকট, তারা বলেন আমাদের কাছ থেকে ও উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার সময় দুই হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, আমি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান, আমার পরিবারের সামর্থ নেই লেখা পড়ার খরচ চালাবার। আমি নিজে উপার্জন করে আমার লেখাপড়ার খরচ চালাই।

আমার কলেজে উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য স্যারেরা যে টাকা চাচ্ছেন তা দেওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। যদিও সেই টাকা দিতেই হয় তাহলে আমাকে অনাহারে থাকতে হবে।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন- আমার মতো অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী আছে, যাদের পরিবারের পক্ষে দুই হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।

একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন- দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আমাদের শিক্ষাবান্ধব সরকার উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন, অথচ এই কলেজ কতৃপক্ষ এখানেও চাঁদাবাজি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখিত অনিয়মের বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেনি। গত ১৯শে মার্চ দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে কলেজে গিয়ে দেখা যায় তিনি প্রতিষ্ঠান ছুটি দিয়ে অন্যন্য স্টাফ সহ কলেজ থেকে বেড়িয়ে গেছেন।পরে তাকে একাধিক গণমাধ্যমকর্মী ফোন দিলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেনি।

এবিষয়ে গংগাচড়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম বলেন- উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো টাকা নেওয়ার বিধান নেই।’ যাদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন- এ ব্যাপারে আমি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি ‘উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের টাকা নিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments