Friday, April 19, 2024
Homeরংপুর বিভাগরংপুর জেলারংপুরে জাল দলিল আদালতে দাখিল ১ অপরাধীর মাসের কারাদণ্ড

রংপুরে জাল দলিল আদালতে দাখিল ১ অপরাধীর মাসের কারাদণ্ড

রবিন চৌধুরী রাসেল- রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
নিজ নামীয় সম্পত্তি যথারীতি নিয়ম মেনেই ১৯৯৬ইং সালে কবলামুলে রেষ্ট্রি করে দেন ময়েন উদ্দীন সামছুল মিয়াকে। জমির ভোগদখলও নেন সামছুল মিয়া। কিন্তু বিধিবাম রংপুর বিভাগ ঘোষনার পরপরেই রংপুরে জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চতুর অর্থলোভী ময়েন উদ্দিন ২০০৯ইং সালে আবারো ১৯৯৬ইং সালের বিক্রিকৃত দলিলের আদলে আরো দুইটি ভুয়া বন্ধকী দলিল তৈরি করে আবারও বন্ধকী জমি ফেরতের জন্য আদালতে মামলা আনায়ন করেন। এবার তার সেই বিক্রিকৃত সম্পত্তি দেখানো হয়েছে বন্ধকী দলিল মুলে সামছুল মিয়ার কাছে বন্ধক রাখা হয়েছে।

উলেখ্য যে প্রথম মামলা খারিজ হলেও একটি ইতিহাস তৈরি করেন মহামান্য আদালত। আদালত নিজেই বাদী হয়ে ভুয়া ও যোগসাজসের মামলা করে ময়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে। ফলে ক্রয় সুত্রে সম্পত্তি ভুয়া দলিলে বন্ধক দিয়ে নিজেই বেকায়দায় পড়েছেন রংপুর নগরীর কোতয়ালী থানার দর্শনা পাহাড়ী পাড়া গ্রামের মোঃ ময়েন উদ্দীন।

তিনি তার মামলায় নিজেই অভিযোগ করেছেন সাংসারিক প্রয়োজনে জরুরী ভিত্তিতে টাকার দরকার হলে রংপুর সদরের সাতগাড়া গুড়াতিপাড়ার বাসিন্দা সামছুল আলম এর নিকট মাত্র ২০ হাজার টাকায় পয়েন্ট ৪৮ একর জমি বন্ধক রাখেন। কিছু দিন পর আবারো টাকার প্রয়োজন হলে বাকী পয়েন্ট ৪৮ একর জমি বন্ধক রাখিয়া টাকা নেন তিনি।সেই মোতাবেক রেজিষ্ট্রি অফিস গিয়ে কবলা করে দেন ও আলাদা ৫০ টাকার ষ্ট্যাম্পে টাকা ফেরত দিলে ষ্ট্যাম্প ফেরত দেওয়া হবে বলে মোচলেকা করে দেন সামছুল মিয়াকে।

৭ বছর পর বন্ধকি জমি ফেরত পেলেও ফেরত পাননি সেই সময়ে কবলা করে দেওয়া জমির দলিল। কালক্ষেপন করতে থাকেন সামছুল মিয়া। শুরু হয় বিভিন্ন সময়ে অভিন্ন কারনে জমি নিয়ে তর্কাতর্কী অবশেষে হাতাহাতি। অনেক আলোচনা সভা আপোষ মিমাংসা তাতেও মিটে না সেই জমি নিয়ে বিরোধ। অবশেষে তা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। দীর্ঘ দুই বছর পর এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার ৫ই জানুয়ারী বিকেলে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর বিজ্ঞ বিচারক এফ এম আহসানুল হক মামলার বাদী ময়েন উদ্দীন কে জালিয়াতির কারন দেখিয়ে দন্ডবিধির ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারার বিধান মোতাবেক শাস্তি যোগ্য অপরাধ প্রমানিত হলে ১ মাসের কারাদণ্ড ও আরো ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি। যাহার সি আর নং ৯০/২১ তারিখ ০৫/০১/২৩ইং।

এবিষয়ে সরজমিনে আদালতে গেলে জানা যায়- ময়েন উদ্দীন ও মোমেনা বেগম বিভিন্ন সময়ে সামছুল ইসলামের কাছে জমিজমা সংক্রান্ত দফায় দফায় অর্থ নিয়ে তারাই আবার দাতার বিরুদ্ধে আদালতে জমি ফেরতের মামলা করেন। আর আদালত সুত্রে জানা যায়, ৩৭১/১০ নং মোকাদ্দমার ২-৭ নং বিবাদীর দরখাস্তের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট রায় পর্যালোচনায় দৃষ্টি হয় যে,অত্র বিচারিক আদালত কর্তৃক রায়ের (রায়ের তারিখ ২৮/০৩/১৬ ইং ) মর্মে ৩০/০৬/৯৬ ইং মোতাবেক ৬৮৮৫নং এবং ০৭/০৮/৯৬ ইং মোতাবেক ৮৪৬৬নং বিক্রয় দলিল দুইটিকে বন্ধকী দলিল হিসাবে বাদী দাবী করিয়া ২টি অঙ্গীকার নামা (প্রদর্শনী-৪/৫) উপস্থাপন করেন।

যাহা কাল্পনিক ভুয়া ও যোগসাজসী বলিয়া সিদান্ত গৃহীত হইয়াছে। এমতবস্থায় উক্ত বিবাদীগন অত্র আদালত মাধ্যমে দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় ফৌজদারী মামলা রুজু করিবার প্রার্থনা করেন। উক্ত রায় দৃষ্টি প্রতিয়মান হয় বাদী ময়েন উদ্দীন ইচ্ছাকৃত ভাবে এবং সম্পূর্ণরুপে অবগত থাকার পরেও অপরকে প্রতারিত করিবার উদ্দেশ্যে সঠিক হিসেবে ব্যবহারের নিমিত্ত এই আদালতে উক্ত জাল ভুয়া ও যোগসাজসী অঙ্গীকারনামা দুইটি উপস্থাপন করিয়াছেন যাহা দন্ডবিধির ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারার বিধান মোতাবেক শাস্তি যোগ্য অপরাধ।

এমতবস্থায় অভিযুক্ত মোঃ ময়েন উদ্দিন পিতা খয়ের উদ্দীন জেলা রংপুর এর বিরুদ্ধে উক্ত ধারাসমুহ অনুযায়ী অভিযোগ আমলে গ্রহন করতঃ পরে আদালত সাক্ষী প্রমানে জাল ও ভুয়া দলিল পাওয়ায় ময়েনউদ্দীনকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও আরো ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে এই রায় প্রদান করে আদালত।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments