Saturday, April 20, 2024
Homeরংপুর বিভাগরংপুর জেলারংপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষের দূর্ণীতি সাড়া ফেলেছে শিক্ষাঙ্গনে

রংপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষের দূর্ণীতি সাড়া ফেলেছে শিক্ষাঙ্গনে

হারুন-অর-রশিদ- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা ৬ মাসের বেশী সাময়িক বরখাস্ত নয়, অথচ রংপুর কালেক্টরেট স্কুল এ্যান্ড কলজ শিক্ষক আলতাফ হাসন ১১ বছর ধরে বরখাস্ত! একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ অধ্যক্ষের খুঁটিরজোরেই তিনি আইন কানুনের তোয়াক্কা করেন না।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত রাখা হলে তিনি বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি সমুদয় প্রাপ্য হবেন। স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০০৭.১৫-৬৯৪ তারিখ ৬ইং আগষ্ট ২০১৭ইং উল্লেখিত স্মারকে আরো বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত’র মেয়াদ ছয় মাসের বেশী সময় পার হলে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে এবং স্বয়ংক্রিয় ভাবে তিনি স্বপদে পূনঃবহাল হবেন ও বকেয়া বেতন ভাতাদি প্রাপ্য হবেন। রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী কৃষি শিক্ষক আলতাফ হোসন কে ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে ছাত্র পেটানোর ভিত্তিহীন অভিযাগ এনে বিগত ২৪শে মার্চ ২০১২ইং তারিখে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঐ সকল ছাত্র ও অভিভাবক গন মিথ্যা অভিযাগ বলে উক্ত অভিযোগ লিখিত ভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট অধ্যক্ষ ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে আলতাফ হোসেনকে প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা থেকে বিরত রেখেছেন মর্মে লিখিত অভিযাগ তিনি রংপুর জেলা প্রশাসক ও সভাপতি কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর নিকট করেছেন। আবেদন পত্রে ভুক্তভাগী মহামান্য হাইকোর্টের রায় মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত’র আদেশ প্রতাহার স্ব-পদে যোগদানের আদেশ প্রদান এবং বরখাস্ত কালীন সময়ের বকেয়া বেতন ভাতাদি প্রদানর জন্য মানবিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। জানা গেছে আলতাফ হোসেন সহকারী শিক্ষক হিসেবে থাকাকালীন পদ শুন্য দেখিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ন এডহক কমিটি এবং বিশেষ ধরনের কমিটির মাধ্যমে অবৈধভাবে কেকা সরকার নামক ব্যাক্তিকে অধ্যক্ষ হিসেবে গত ২৬শে নভেম্বর ২০১১ইং তারিখে নিয়োগ দেন। উক্ত নিয়োগের বিষয় ৮ই জুলাই ২০১২ইং তারিখে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় (সার্বিক) রংপুর পুংখানুপুক্ষ তদন্ত করে কেকা সরকারের নিয়োগ অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত বল ঘোষণা করেন।

এব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সহকারী শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন- আমাদের অধ্যক্ষ তাহার ক্ষমতাবলে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছেন। কারণ তার খুটির জোর অনেক।

গত ৩০শে জানুয়ারী রংপুর জেলা প্রশাসক এবং কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি বরাবর অধ্যক্ষের অর্থ তছ্বরুপ করাসহ নানা অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এক হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারিগন উল্লেখ করেন, রংপুর জেলা প্রশাসন কতৃক পরিচালিত কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ এখন অনিয়মের রোল মডেল! অধ্যক্ষের আর্থিক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারীতা মধ্যে কোন কিছুই বাদ যায়নি। ১| ভর্তি বানিজ্যঃ প্রতি বছর কেজি শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেনিতে ভর্তির নামে চলে ২৭০ টাকা দরে ফরম বিক্রি। ২০১৩ইং সাল থেকে ২০২৩ ইং সাল পর্যন্ত ১৬৫০০টি ফরম বিক্রি করা হয়েছে, যার আনুমানিক মুল্য চুয়াল্লিশ লাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকা। যা নিয়মানুযায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে জমা থাকার কথা থাকলেও অধ্যক্ষের বিশেষ খুঁটিরজোরে, নিজের লোকদের মাধ্যমে ভাগাভাগি করে বিভিন্ন অংকে তা গ্রহণ করেন। PSC, JSC, SSC এবং HSC পরীক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন বাবদ আনুমানিক ১ হাজার জন পাঁচশত টাকা করে প্রতি বছর পাঁচ লাখ টাকা অংকে ১১বছরে ৫৫ লাখ টাকা আদায় করেন।নিয়মানুযায়ী উক্ত টাকা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে জমা করার বিধান থাকলেও তা না করে, অধ্যক্ষ এবং তার পছন্দমতো লোকদের মাঝে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। ৩| ব্যাজ, ডায়রী, আইডিকার্ড বাবদ আনুমানিক ২৭০০জন শিক্ষার্থী ৬০০ টাকা হিসেবে মোট ১৬ লাখ বিশ হাজার টাকা প্রতি বছরে আয় করেন স্কুল কতৃপক্ষ।

হিসেব অনুযায়ী নয় বছরে অংক গিয়ে দাড়ায় ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। এ টাকাও বিধি অনুয়ায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে জমা না করে অধ্যক্ষ এবং তার দোষরদের নিয়ে ভাগাভাগি করেছেন প্রতিষ্ঠান কর্তা। ৪। পুনঃপরীক্ষা ব্যবসাঃ প্রতি বছর ৯ম থেকে ১০ম SSC টেষ্ট এবং একাদশ বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করার পর প্রতি বিষয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পরীক্ষার ফি নিয়ে পুনঃপরীক্ষা নিয়ে লাখ-লাখ টাকা অবৈধভাবে ভাগ বাটোয়ারা করে নিজের পকেটে ভরেছেন অধ্যক্ষ এবং তার সহযোগীরা। ৫। শিক্ষক সংকট দেখিয়ে নিয়োগ বানিজ্যঃ প্রতিষ্ঠানটির প্রথম নাম ছিল “উচ্চ বিদ্যালয়, কিন্তু পরে, “স্কুল এন্ড কলেজ” করা হয়েছে এই জন্যই যে, প্রভাষক স্কুলে সংশ্লিষ্ট বিষয় পাঠদান করলে ছাত্র ছাত্রীরা অপেক্ষাকৃত ভালো শিখবে।

কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান মঞ্জুয়ারা পারভীন নিজের খেয়াল খুশিমতো তার মনোনীত শিক্ষকদের অবৈধভাবে সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছেন। রংপুর জেলা প্রশাসক বরাবর গণ-স্বাক্ষরকৃত কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের অর্থ আত্নসাৎ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের তথ্যানুযায়ী জানা গেছে- অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন’র দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় সার্বিকভাবে যারা সহযোগিতা করে আসছেন, তাদেরকে বিভিন্নভাবে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে আসছেন তিনি। আব্দুর রহমান আল মাহমুদ (সহকারী অধ্যাপক ইসলামের ইতিহাস) সপ্তাহে ক্লাস নেন মাত্র ৬টা! বাস্তবে শিক্ষক প্রবিধান অনুযায়ী তার ক্লাস নেয়ার কথা কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ টা। তিনি বেতন উত্তোলন করেন ৬৭,৬৩২ টাকা, পিএফ ফান্ডে জমা ১১,০২২টাকা মোট বেতন ৭৬,৬৫৪ টাকা।

নাহেদ ফরিদ (সহকারী অধ্যাপক ব্যবস্থাপনা) তিনি প্রতি সপ্তাহে ক্লাস নেন মাত্র ৬টা! শিক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী তার ক্লাস নেবার বিধান ১৫/১৬ টি। বেতন উত্তোলন করেন ৭৫,৯৪৩/ টাকা পিএফ ফান্ডে জমা ১৫,৫৫৫/ টাকা সর্বমোট বেতন ৯১,৪৯৮ টাকা। মাহমুদুল হাসান (প্রভাষক ইসলাম শিক্ষা) প্রতি সপ্তাহে ক্লাস নেন ৬টা, শিক্ষক প্রবিধান অনুযায়ী তার ক্লাস নেবার কথা ২০ থেকে ২২টা তিনি বেতন উত্তোলন করেন ৪৭,৯৪৪ টাকা তার পিএফ ফান্ডে জমা ৭১৪৪ টাকা সর্বমোট বেতন ৫৫,০৮৮ টাকা। আখিনুর (প্রভাষক ভূগোল) সপ্তাহে ক্লাস নেন মাত্র ৬টি বিধান অনুযায়ী তারও ক্লাস নেবার কথা ২০/২২ টি তিনি প্রতি মাসে বেতন উত্তোলন করেন ৩৫,১৯৮/ টাকা পিএফ ফান্ডে জমা, ৫০৯৬ টাকা, সর্বমোট বেতন ৪০,২৯৮ টাকা। মশিউর রহমান (প্রভাষক ইতিহাস) তিনি সপ্তাহে ক্লাস নেন ৬টা শিক্ষক প্রবিধান অনুযায়ী তারও ক্লাস নেবার কথা ২০/২২টি। তিনি বেতন উত্তোলন করেন ৩৫,১৯৮/ টাকা পিএফ ফান্ডে জমা থাকে, ৫০৯৬ টাকা। হাশিবুল ইসলাম (প্রভাষক যুক্তি) তিনি সপ্তাহে ক্লাস নেন ৬টি শিক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী তার ক্লাস নেবার কথা ২০ থেকে ২২টি। তিনি বেতন উত্তোলন করেন ৩৫,১৯৮ টাকা পিএফ ফান্ডে জমা থাকে ৫,০৯৬ টাকা তার সর্বমোট বেতন ৪০,২৯৮/ টাকা।

স্কুলের একাধিক শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মহল সুত্রে জানা যায়- বিগত ২২ ইং সালের অক্টোবর মাসের ১১ তারিখ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান মঞ্জুয়ারা পারভীনের অনিয়ম দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে হ্যান্ডবিল বিতরণ করেন। পাঠকের উদ্দেশ্যে তা হুবহু তুলে ধরা হলো: জেলা প্রশাসন পরিচালনাধীন কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ রংপুর-এর অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীনর দুর্নীতি ও কু-কীর্তির আমলনামা:
০১। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকা পরিদর্শক এনামুল হক এবং অডিট অফিসার মোকলেছুর রহমান গত ০৯/০৬/২০১৬ তারিখ রংপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজটি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করেন। তাঁদের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন বর্তমান অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর নিয়োগ অবৈধ মর্মে ০৯/১০/২০১৭ তারিখ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করছেন যে, অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর নিয়োগ বিধিসম্মত নয় হেতু এমপিওভুক্তির তারিখ হত ৩১/০৩/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত উল্লখিত বেতন-ভাতা বাবদ ১৩,৩৩,৮০০/-(তের লক্ষ তেত্রিশ হাজার আটশত) টাকা সরকারি খাতে ফেরতযোগ্য । এর পরে গৃহিত বেতন-ভাতাও ফেরতযোগ্য হবে।

০২। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন তার চাকুরী বহাল থাকার জন্য তার স্বামী আবুল কালাম আজাদ-এর ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে গত ২৬/০৫/২০১৯ইং তারিখ শিক্ষা মন্ত্রণালয়র আহমদ শামীম আল-রাজী, যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা) মাধ্যমিক ও উচ শিক্ষা বিভাগ-এর মাধ্যম অধ্যক্ষর শুনানী গ্রহণ করা হয়। উক্ত শুনানী অনুযায়ী ০৩/১১/২০১৯ইং তারিখ অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন কে নিয়োগের অভিযোগ থেকে সার্বিক বিবেচনায় অব্যাহতিপত্র প্রদান করেন। কিন্তু আইনানুগভাবে অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন কে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ অদ্যাবধি অব্যাহতি প্রদান করননি। অথচ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন অবৈধভাবে তার দায়িত্বে থেকে এমপিওভুক্তির অর্থ অবৈধভাবে উত্তোলন তথা অতিরিক্ত বেতন-ভাতা উত্তোলন করেই চলছেন।

০৩। তিনি নিজ স্বার্থ হাসিলর উদ্দশ্য তারাগঞ্জ ও/এ ডিগ্রি কলজ ১৫ বৎসর চাকুরী করে উক্ত সার্ভিসকাল আবার কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলজ যুক্ত করে নিজেই নীতিমালা তৈরি করেন। শুধু অধ্যক্ষের ক্ষেত্রে নিজস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তার পূর্বের চাকুরির সময়সীমাও পরিগণিত হবে মর্মে গ্র্যাচুইটি নীতিমালার তৈরি করেছেন।

০৪। ২০১৭ইং সাল প্রভাষক জীববিজ্ঞান পদ নিয়োগ পরীক্ষায় হানিফ খান, পিতা-ইলিয়াস খান নাম একজন প্রার্থীকে তার মূল্যায়ন শীট নম্বরপত্র অনুযায়ী প্রদর্শন ক্লাসের নম্বর বিন্যাস ১০ নম্বরের মধ্যে ১৪.৬ নম্বর দিয়েছেন। উক্ত শীটের মধ্যে অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীনের স্বাক্ষর আছে, তারিখ ২৫/০৯/২০১৭।

০৫। কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ রংপুর- এর নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ পরিচালনা পর্ষদ-এর সভার ০৩/১০/২০১৮ তারিখ রেজুলেশন পূর্বের কমিটিতে ০৫ (পাঁচ) সদস্য থাকলেও পরবর্তীতে ০১ (এক) জনকে বাদ দিয়ে ০৪ (চার) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে নিয়োগ প্রদান করেন। যাহা উক্ত নিয়োগ বোর্ডের অবৈধতার প্রতিক। উক্ত কমিটির মধ্যে জনাব শাহ নেওয়াজ কবির সোহেল আহবায়ক প্রতিনিধি তিনি স্বাক্ষর করেন নাই। উক্ত নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশে মিনহাজুর রহমান, পিতা-রাকিবুল ইসলামকে প্রভাষক আইসিটি পদ অবৈধভাবে নিয়োগ প্রদান করেন।

০৬। অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কলেজের একজন প্রদর্শক দিলীপ রায় কে প্রদর্শক পদ থেকে কোনরূপ পরীক্ষা ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করেন। এবং প্রভাষক স্কেল প্রদান করেন এবং অবৈধভাবে এমপিওভুক্তির মাধ্যমে বেতন- ভাতা উত্তোলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের মাঝে বিঘ্নের সৃষ্টি হয়।

০৭। সঙ্গীত শিক্ষক লাভলী সরকারকে সর্বসাকুল্যে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা বেতন-ভাতা নির্ধারণপূর্বক নিয়োগ প্রদান করেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষের ক্ষমতার অপব্যবহারে প্রথমে লাভলী সরকারকে সহকারী শিক্ষকের স্কেল প্রদান করেন। অতঃপর পরিচালনা পর্ষদের সভায় পুনরায় লাভলী সরকারক ২১,০০০/- (একুশ হাজার) টাকা বেতন স্কেল প্রদান করেন দুর্নীতিগ্রস্থ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন।

০৮। মাধ্যমিক শাখায় আইসিটি বিষয় একজন খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ১৮/০৫/২০১৭ তারিখ দৈনিক যুগের আলো পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডার প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে আবেদন সংযুক্ত থাকলেও উক্ত ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডার-এর টাকা অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন প্রতিষ্ঠান তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেছেন। যাহা প্রতক্ষ আর্থিক দুর্নীতির সামিল।

০৯। ২০২০ এবং ২০২১ শিক্ষাবর্ষে করোনা ভাইরাসের কারণ দেখিয়ে ঢাকায় বস্থান করেন এবং সেই সময় নগদ (ব্যাংক ছাড়া) অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন তার অনুগত ও মনগড়া শিক্ষক দ্বারা ছাত্র-ছাত্রীদর বেতন উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

১০। প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক শাখার একজন স্বনামধন্য ও সুপরিচিত সহকারী শিক্ষক চৌধুরী রওশন আরা (চায়না) ০২ (দুই) বছর আগে অবসর গেলেও তার বিষয় বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন পক্ষান্তরে উক্ত প্রতিষ্ঠানে তার মনোনীত একজন সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার অবসর যাওয়ার আগেই ১১/১২/২০২১ তারিখে শিক্ষকদের নিকট থেকে ৬০০/- (ছয়শত) টাকা করে চাঁদা আদায় করে সেলিনা আক্তারের জমকালো বিদায় অনুষ্ঠান করেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের তোপের মুখে পড়লে উক্ত টাকা শিক্ষকদের ফেরত প্রদান করেন প্রতিহিংসুক অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন।

১১। প্রতি বছর এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কক্ষে দুর্নীতি করে অদল-বদল সেন্টার নিয়ে ৫/৬ লক্ষ টাকার কন্ট্রাক্ট হয়। ফলে যারা নকল সাপ্লাই দেয় না সেই শিক্ষকদের পরীক্ষার ডিউটি দেয়া হয় না।

উল্লেখ্য অধ্যক্ষর ছেলে শাদমান এইচএসসি ২০১৯-এ পরীক্ষার্থী থাকায় প্রতিদিন ০৩ ঘন্টার স্থলে ৩ ঘটা ৩০ মিনিট পরীক্ষা নেয়া হয়ছিল এবং দুর্নীতি করে অধ্যক্ষ তার ছেলে শাদমানকে পরীক্ষায় পাশ করে নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষকের নিকট তার প্রমাণ আছে। রাষ্ট্রীয় তদন্তের স্বার্থে তারা প্রমাণ করতে পারবেন।

১২। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ আয় যেমন: ভর্তি ফরম বিক্রি, ক্যালেন্ডার, স্কুল ডায়রী, রেজিষ্ট্রেশন বিভিন্ন ফি গ্রহণ, বই কোম্পানী থেকে সালামী গ্রহণ, ইউনিফরম বানানোর নির্ধারিত/টেইলার্স থেকে প্রতিসেট ১০০/- টাকা হারে গ্রহণ করা সহ জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার কোচিং-এর লক্ষ লক্ষ টাকা অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন।

১৩। প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদর কোচিং-এর টাকা ভাগের সময় অধ্যক্ষ তার ভাগের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা জোরপূর্বক নেয়। কে কত নিয়েছেন হিসেব করলে তা দেখা যাবে। এবং প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পরীক্ষাতে অধ্যক্ষ তার মনগড়া একই শিক্ষককে কমিটিতে বার বার রাখেন, এবং সিনিয়র শিক্ষক, প্রভাষকদের নিয়ম অনুসারে বেতন স্কেল না দিয়ে তার নিজের নিয়োগ দেয়া শিক্ষক, জুনিয়র শিক্ষক-কর্মচারীদর অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বেতন-ভাতা দিয়ে যাচ্ছেন।

১৪। তৎকালীন জেলা প্রশাসক, রংপুর ও প্রতিষ্ঠান সভাপতি মহোদয় উপাধ্যক্ষ পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দৈনিক কালের কন্ঠে প্রকাশ করেছেন ০৬/০৭/২০১৪ তারিখে । কিন্তু কিছুসংখ্যক আবেদন পাওয়ার পরও অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন তার ক্ষমতা বজায় রাখায় উপাধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়ে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নিয়োগ স্থগিত করেন।

১৫। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন ০৩/০৬/২০১২ তারিখ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ পদে যোগদান করার পর ঐ বছরই এসএসসি পরীক্ষার্থী ৩২ জন ছাত্র-ছাত্রী নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের ফরম পূরণ বন্ধ করিয়া দিয়েছিলেন, অতপর; উক্ত ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকগণ অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর বিরুদ্ধে মিস আপিল ০২/২০১৩নং মামলা জেলা রংপুরের বিজ্ঞ ও দায়রা জজ আদালত-এ দায়ের করেন এবং আদালতর রায় এর মাধ্যমে এসএসসি ফাইনাল পরীক্ষা ২০১৩ এর একদিন পূর্বে বোর্ড এ ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তীর্ণ হয়। সেই সময় উক্ত অধ্যক্ষ অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন, এমনকি জনগণ ও অভিভাবকদের তোপের মুখে পরে ছিলেন তিনি।

১৬। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন মনগড়া এজেন্ডা তৈরি করে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সত্যক, মিথ্যা বলে উপস্থাপন করেন এবং সুকৌশলে রেজুলেশন তৈরি করে রেজুলেশন পাস করিয়ে নেন এবং নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করেই চলছেন।

১৭। প্রতিষ্ঠানে যুক্তিবিদ্যা, কম্পিউটার, আইসিটি বিষয় (খন্ডকালীন) শিক্ষক হিসেবে যথাক্রমে হুমায়রা কবির ও জীবন কৃষ্ণ রায়কে নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমান পদ দুইটিতে জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন কতৃপক্ষ (NTRCA) কতৃক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগদান করার পরেও কুচক্রী অধ্যক্ষ খন্ডকালীন শিক্ষকদের নিকট হতে উৎকাচ গ্রহণের মাধ্যমে হুমায়রা কবির ও জীবন কৃষ্ণ রায় কে প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে নেয়ার জন্য তাদেরকে বহাল রেখছে।

১৮। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ৫ম গ্রেডের বেতন ৪৩,০০০/- থেকে ৬৯,৮৫০/-টাকা থাকলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭৩,৩৪২/ স্কেল বেতন গ্রহণ করছেন। ফলে প্রতি মাসে তিনি ২০,৫৫৫/- টাকা করে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে অতিরিক্ত উত্তোলন করেই চলছেন।

১৯। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীনের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ অবৈধ হস্তক্ষেপে জেলা পরিষদ আওতাধীন ডাক বাংলোটিতে চাকুরীকালীন সময় থেকে দখলপূর্বক বসবাস করে আসছেন।

২০। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন-এর দুর্নীতির চিত্র এত ব্যাপক যে তাহা এই সংক্ষিপ্ত লিফলেট বর্ণনা করা অসম্ভব। অবৈধ অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির সুযোগ গ্রহণ করেছেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় উক্ত প্রতিষ্ঠান বাঁচানোর স্বার্থে এই মুহূর্তে উক্ত অধ্যক্ষকে অপসারণ অত্যাবশ্যক।

উপরোক্ত অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন জানান- শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা বোর্ড, জেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পায়নি। জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে কিভাবে আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি নিয়মিত ভারা দিয়ে থাকি। কতটাকা ভারা দেন? কতদিন থেকে আছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনি জেলা পরিষদে গিয়ে খবর নেন আমি বলতে পারবো না।

চলবে ধারাবাহিকঃ পর্ব-১

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments