রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‍্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারী, ধর্ষণকারী, খুনি, প্রতারক ও হ্যাকারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার বিবরণে প্রকাশ- বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে গত ০৩ জুলাই রাতে আহত বন্ধু সিজার (২০)'কে দেখতে যায় মোঃ সানী (১৭)। এ সময় কয়েকজন যুবক জোর করে তুলে নিয়ে রাজশাহী মহানগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকায় কফিল উদ্দিন জামে মসজিদের পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরবর্তীতে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উক্ত ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পরবর্তীতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় চলতি মাসের ৪ঠা জুলাই ২০২২ইং তারিখ মামলা রুজু হয়। র‍্যাব-৫ ও র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা উক্ত মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে। রুজুকৃত মামলার ১-নং আসামী মঈন @ আন্নাফ (২০) মূলত মঈন গ্রুপের লিডার ছিল। এই গ্রুপ রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসচিল।

এরই প্রতিবাদকারী মোঃ সানী (১৭)'কে তারা তার্গেট করে পরবর্তীতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাকে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। নিহত সানি রাজশাহী পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম পাখি (৫০) এর ছোট ছেলে। সানী এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

হত্যাকান্ড সংগঠনের পরপরই আসামীরা বিভিন্ন পথে বাংলাদেশের সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করে। কিন্তু আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় পরিবহণের মাধ্যমে ভেঙ্গে ভেঙ্গে নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ঢাকা জেলা অতিক্রম করে নারায়ণগঞ্জে আশ্রয় গ্রহণ করে। র‍্যাবের আভিযানিক দল ও গোয়েন্দা শাখা প্রায় তিনটি স্থানে অভিযান চালায়।

চলমান অভিযানের মাধ্যমে গতকাল বুধবার ৬ই জুলাই ২০২২ইং তারিখে র‍্যাবের একটি আভিযানিক দল উক্ত মামলার ৪নং আসামী মোঃ শাহী(১৯), পিতা- শফিক, সাং-হেতেমখাঁ, থানা- বোয়ালিয়া, রাজশাহী মহানগরীকে ঢাকার শ্যামলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যমতে উক্ত মামলার ২নং আসামী মোঃ রাহিম(১৯), পিতা- মৃত সোহেল, সাং- হেতেমখাঁ, থানা- বোয়ালিয়া, রাজশাহী মহানগরীকেও নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ রাহিম(১৯) এবং মোঃ শাহী(১৯) উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।

উক্ত মামলার অন্যান্য অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়ে র‍্যাব-৫ এর আভিযানিকদল ব্যাপক তৎপর রয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, উপরোক্ত ঘটনায় র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এর বিরতিহীন চলমান অভিযানে আলোচিত হত্যা মামলার সেই পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার ৭ই জুলাই ২০২২ইং র‍্যাব-৫, কতৃক ই-মেইল যোগে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই গণমাধ্যম কর্মীকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই র‍্যাবের পক্ষ থেকে অপরাধীদের কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে জানানো হয়- দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র-মাদকদ্রব্য উদ্ধার থেকে শুরু করে সকল প্রকার অরাজকতাকে রুখে দিতে র‍্যাব বদ্ধপরিকর। এ ছাড়াও র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পাশাপাশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান গুলো চলমান রেখেছেন।