Friday, April 26, 2024
Homeরংপুর বিভাগগাইবান্ধা জেলাডেপুটি ম্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া এমপি শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত

ডেপুটি ম্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া এমপি শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত

শাহরিয়ার কবির আকন্দ- গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধায় লাখো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ে সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দুই ছেলের কবরের পাশে শায়িত হলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডঃ ফজলে রাব্বী মিয়া।

আজ ২৫শে জুলাই সোমবার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা চোঁখের জলে বিদায় জানালেন তাদের প্রিয় এই নেতাকে। অন্তিম শয়নের আগে প্রমাণ করে গেলেন গণমানুষের নেতা ছিলেন অ্যাডঃ ফজলে রাব্বী।

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জানাজায় ছিল শোকার্ত মানুষের ঢল। বুকফাটা কান্না, আর্তনাদ আর আহাজারিতে লাখো মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন অ্যাডঃ ফজলে রাব্বী মিয়া।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের টানা সাতবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডঃ মোঃ ফজলে রাব্বি মিয়ার মরদেহ ঢাকা থেকে বিমান বাহিনীর ৪১১ নম্বর হেলিকপ্টারে সোমবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে গাইবান্ধার সাঘাটার বোনারপাড়ায় পৌঁছায়।

এরপর সেখান থেকে সড়ক পথে তার মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হয় ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় সংসদ সদস্যরাসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর ওই মাঠে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অর্নার দেওয়া হয়।

গার্ড অব অর্নার পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মোঃ অলিউর রহমান ও পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। পরে বিকেল ৩টায় তার দ্বিতীয় জানাজা নামাজ শেষে মরদেহ নিজ বাড়ি গটিয়া গ্রামে নেওয়া হয়। সেখানে বিকেল ৫টায় তৃতীয় জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

পরিচ্ছন্ন, দক্ষ সংগঠক ও কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে তিনি যে জনপ্রিয় ছিলেন তাঁর জানাযায় আসা শোকার্ত মানুষের ঢলই সে প্রমাণ দিয়েছে। জানাযায় দলমত নির্বিশেষে আওয়ামী লীগ সহ সকল রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

দলীয় নীতি আদর্শে অটল থাকলে যে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া যায় তাঁর জানাযায় শোকার্ত মানুষের ঢলই তার প্রমাণ করে। শেষ যাত্রায় জনতার বাঁধ ভাঙা ঢল ও বেদনাবিধুর চিত্তে গাইবান্ধাবাসী তাকে বিদায় জানিয়েছেন।

রাজনীতিতে তার নির্লোভ মানসিকতা আর বিচক্ষণতায় নিজেকে স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া অ্যাডঃ ফজলে রাব্বী মিয়া শেষ যাত্রায় শ্রদ্ধা পেয়েছেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছ থেকেও। স্বজন- আপনজন ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাঁদিয়ে ও লাখো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসায় সিক্ত হয়ে পারিবারিক কবরস্থানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন এই বর্ণাঢ্য রাজনীতিক।

স্থানীয়রা জানান- অ্যাডঃ ফজলে রাব্বী মিয়া ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের ভরসার বাতিঘর। তাঁর মৃত্যুতে রাজনীতিতে নেতৃত্বের শূন্যতা কোনদিন আর পূরণ হওয়ার নয়। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও জনকল্যাণমুলক কাজে তিনি নিজেকে জীবনের পুরোটা সময় নিয়োজিত রেখেছিলেন। তাঁর অবদান এলাকাবাসী গভীর শ্রদ্ধার সাথে আজীবন স্মরণ রাখবে। তিনি বেঁচে থাকবেন তার কর্মে, মানুষের হৃদয়ে সমুজ্জল থাকবেন প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে।

সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ফজলে রাব্বি মিয়ার মরদেহ বাংলাদেশে পৌঁছে। তার প্রথম জানাজা সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা সুপ্রীম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।

এরআগে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আমেরিকার মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফজলে রাব্বি মিয়া। বার্ধক্যজনিতসহ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৯ মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পেশায় আইনজীবী ফজলে রাব্বি মিয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের টানা সাতবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি জাতীয় সংসদের পর পর দুইবারের ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments