Sunday, April 28, 2024
Homeরংপুর বিভাগরংপুর জেলাস্কুল ফাঁকি দিয়ে চায়ের দোকানে খোশ গল্পে প্রধান শিক্ষক

স্কুল ফাঁকি দিয়ে চায়ের দোকানে খোশ গল্পে প্রধান শিক্ষক

খলিলুর রহমান- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার শ্যামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারের বিরুদ্ধে ক্লাস চলাকালে বিদ্যালয় ছেড়ে পার্শ্ববর্তী এলাহির বাজারে আড্ডা দিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (১০ মার্চ) শ্যামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গনে গিয়ে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাহির বাজারে প্রতিবেদকরা প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারের খোশগল্পে মেতে থাকার ফুটেজ সংগ্রহ করেন সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিট থেকেই। আরও ২ ঘণ্টা পরে প্রতিবেদকের একটি দল দুপুর ১.৪৫ মিনিটে শ্যামগঞ্জ সপ্রাবিতে গেলে সহকারী শিক্ষকগণ জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে ১১.৩০ মিনিটে বিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। এর পর থেকে তিনি আর বিদ্যালয়ে ফেরত আসেননি। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় উপস্থিতির ঘরে স্বাক্ষর দিয়ে ঘণ্টার পর ঘন্টা পার্শ্ববর্তী এলাহির বাজারে আড্ডা দেওয়ার বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারের মুঠোফোনে একাধিবার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন দেখায়।

স্থানীয়রা জানান, শিক্ষকরা স্কুলে এসে আড্ডা দিয়ে চলে যান। শিক্ষার্থী নিয়ে তাদের তেমন কোনো মাথাব্যথা নেই। মানসম্মত লেখাপড়া না হওয়ায় স্কুলটিতে কেউ ভর্তি হতেও চান না। যারা ভর্তি হয়েছে, তারাও নিয়মিত স্কুলে আসেনা। চতুর্থ শ্রেণীতে ১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও ক্লাসে এসেছে মাত্র ৪ জন। প্রধান শিক্ষকের বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় তিনি বাড়িতে ও বাজারেই থাকেন বেশিরভাগ সময়। কোন কোন দিন তার পরিবর্তে অন্যরাও স্বাক্ষর করে দেন আজিরা খাতায়।

ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি অবজ্ঞা করায় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হয়েছিল এই প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারে নামে, ওই প্রকাশিত প্রতিবেদন টিতেও উঠে এসেছিল প্রধান শিক্ষকের খেয়াল খুশি মতো প্রতিষ্ঠান চালানোর বিষয়টি, তাতে তেমন কোনো প্রভাব না পড়ায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। স্কুলের জমি দাতা সদস্য হওয়ায় তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। স্কুলের বরাদ্দ গুলোতেও আছে নানা নিয়মের অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, আজ সারাদিন শ্যামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারকে বাজারে বিভিন্ন দোকানের বেঞ্চে ও হোটেলে বসে আড্ডা দিতে দেখেছি। রাজনীতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়েও হোটেলে বক্তব্য দিতে শুনলাম, স্কুল চলাকালীন সময় উনি যদি এভাবে আড্ডা দিয়ে বেড়ান তাহলে স্কুল কিভাবে চলবে।

শিক্ষক হাজিরা খাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর অথচ ঘণ্টার পর ঘন্টা পার্শ্ববর্তী বাজারে আড্ডা দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান চলাকালে তিনি কেন বাইরে আড্ডা দিচ্ছেন, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আপনাদের মাধ্যমে ভিডিও ফুটেজ দেখলাম, তিনি দুপুর ২টা পর্যন্ত হোটেলে বসে গল্প করছেন। টিও স্যারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, তিনি অভিযুক্ত শিকক্ষকের বিষয়ে কারণদর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখিত বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি, একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করে তাকে পাইনি। সরকারি চাকরিজীবী নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, বিষয়টি জানলাম তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments