নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডি ইউনিয়নের বদি নেপাশ পাড়া গ্রামে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তার উপর হঠাৎ করে কুড়ে ঘর নির্মাণ করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকার চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ফলে ওই রাস্তা বন্ধ হওয়ায় চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ।

এই পরিস্থিতিতে এক মাস ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই গ্রামের অন্তত ২০টি পরিবারের শতাধিক লোকজন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী মোঃ বাচ্চা মিয়া। রাস্তা বন্ধ করার অভিযুক্তরা হলেন ওই এলাকার সুন্দর আলী(৫৫), ছকমল হোসেন, সাইফুল ইসলাম (৩৫) ও মনুজা বেগম (৩০)।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করলেও অভিযুক্তরা তা মানতে নারাজ। দ্রæত এই পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানায়- নেপাশ পাড়ার ওই রাস্তা দিয়ে প্রায় ১৮-২০ বছর ধরে চলাচল করে ওই ভুক্তভোগী সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি পরিবার। ভুক্তভোগী বাচ্চা মিয়ার সাথে অভিযুক্তদের জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এরই মধ্যে হঠাৎ করে ওই রাস্তার উপর কুড়েঘর নির্মান করে চলাচল বন্ধ করে দেয় অভিযুক্তরা।

যার ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী ২০টি পরিবারের মালামাল আনা-নেওয়া সহ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতে চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

ওই ভুক্তভোগী বাচ্চা মিয়ার স্ত্রী এ্যাছনা বেগম(৪৫) বলেন- ‘ওমরা গায়ের জোরে রাস্তার ওপর ঘর বানে রাস্তা বন্ধ কইরছে। হামরা ধান কাটির গেছিনো আসি দেখি ওমরা ঘর তুলছে। ঘর ক্যানে উঠাইছে কইলে ওমরা কয় হামার জমি হামরা ঘর উঠামো তোমার কি করির আছে করেন। ওই জমি তো হামার ওই যায়গাত হামার যায়গা হয় না দেখি হামরা বাড়ী এত্তি ভিতোরত আনি ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসা করি। এখন ওমরা কয় ওইটা ওমার জমি।

ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী ভ্যান চালক সাদেক আলী (৪৯) বলেন- ‘এই রাস্তা দিয়ে মেলা দিন থাকি যাওয়া আসা করি। আমরা জানি রাস্তাটার জমির মালিক বাচ্চা মিয়া তার জমির কাগজও আছে। কিন্তু ওমরা (অভিযুক্তরা) গায়ের জোর দিয়া রাস্তার উপর ঘর বানাইছে কাহো কোনো কবার গেইলে তার সাথে মারামারি ঝগড়া লাগে দেয়ছে। তাই কিছু কবার পাই না।

এলাকাবাসী ও পুলিশ এসে এটা সমাধানের জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করির কইলে ওমরা এইটা না মানি তার আগোতে ঘর উঠাইছে। রাস্তা বন্ধ হওয়ায় নিজের বাড়ী থাকা সত্তেও ভ্যান মানুষের বাড়ীত থুইয়া আসির লাগেছে।

মামলার বাদি ভুক্তভোগী বাচ্চা মিয়া বলেন- আমরা দীর্ঘদিন থেকে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। আপনারা জিজ্ঞাসা করলে বুঝতে পারবেন। ওইটা কোনো সরকারি রাস্তা না আমার ব্যক্তি মালিকানা। কিন্তু সুন্দর, ছকমল, সাইফুল,মনুজা এরা সবাই মিলে অবৈধভাবে সেটা তাদের জমি বলে দাবি করে।

এটা স্থানীয়ভাবে ও পুলিশ এসেও সমাধান করে দেওয়ার জন্য সাত দিন সময় নেয়। কিন্তু তারা এটা না মেনে এরই মধ্যে ও রাস্তার উপর ঘর আনি বসায়। আমরা এটা নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ঘর উঠাইতে বাধা দিবার গেইলে আমার ওপর চড়াও হয়ে আমাকে মারতে আসলে আমি জানের ভয়ে চিৎকার করে উঠলে স্থানীয়রা তাদের কাছ থেকে আমাকে বাচিয়ে আনে। আমরা এর বিচার চাই আমাদের চলাচলের রাস্তা চাই।

রাস্তা বন্ধের বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে উঠে জানায়- আমাদের জমিতে আমরা ঘর উঠিয়েছি। আপনাদের তাতে কি?

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রাজিব কুমার রায় বলেন,‘অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন,‘রাস্তা বন্ধ করার সুযোগ নেই। এমনটা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।