সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
এম শাহীন আলম- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ঢাকায় টাকার ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই সপ্তাহ পার হলেও টাকা উদ্ধারে পুলিশের কোন তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করলেন ভোক্তভোগী দুলাল শেখ,
তিনি গণ-মাধ্যমকে জানান- আমার টাকা ছিনতাই হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ হয়ে গেছে, ইদ্রিস আলী(৫০) নামের একজন ছিনতাইকারীকে আমিসহ ঘটনারস্হলে স্হানীয়দের সহযোগিতায় হাতেনাতে আটক করি, পরবর্তীতে র্যাব আরো একজনকে আটক করে পল্টন থানার পুলিশের তুলে দেয়, দুই আসামীর স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দিতে আরো তিন জনসহ মোট ৫ জনকে মূল আসামি ও অজ্ঞাত নামা আরো আসামি উল্লেখ করে পল্টন থানায় বর্তমানে মামলা চলমান রয়েছে, এরেই মধ্যে গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে রিমান্ডে আনা হলেও টাকা উদ্ধারে পুলিশের কোন প্রকার তৎপরতা নেই বলে মৌখিক অভিযোগ করেন মামলার বাদী ভোক্তভোগী দুলাল শেখ,
দুলাল শেখ জানান- ঘটনার দিন যখন ছিনতাইকারী দলের ইদ্রিস আলীকে হাতে নাতে ধরে ঘটনার স্হল প্রথমে একটি পুলিশ বক্সে পরবর্তীতে পল্টন থানায় নিয়ে আসা হয়, তার কিছু সময় পর পুলিশ আমাকে থানা থেকে বের করে দিয়ে ছিনতাইকারী দলের সদস্য আটককৃত আসামি ইদ্রিস আলীর সাথে একান্তে কথা বলে,তখন আমার পুলিশের এমন আচরণ সন্দেহ হয়,তিনি জানান, পুলিশ যখন ছিনতাইকারী ইদ্রিস আলীর সাথে একান্তে কথা বলে তার পর থেকে ইদ্রিস আলীর মধ্যে ফুরফুরে মেজাজ লক্ষ্য করা গেছে,পরক্ষনে আসামিকে আদালতে প্রেরন করা হয়,
দুলাল শেখ জানান- পল্টন থানার পুলিশ আদালতের মাধ্যমে আবেদন করে ১ নং আসামির ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে এবং আসামি ইদ্রিস আলীকে রিমান্ড এর জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়,পুলিশ তাকে জিগ্গাসাবাদ করেন,কয়েকদিন পর আরো একজন আসামিকে র্যাব গ্রেপ্তার করে পল্টন থানায় র্সোপদ করলেও টাকা উদ্ধারে পুলিশের কোন অগ্রগতি নেই বলে তিনি জানান,
দুলাল শেখ বলেন, পল্টন থানার পুলিশ আমাকে যেভাবে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে আমি ঠিক সেই ভাবে মানতেছি এবং পুলিশের কথা শুনতেছি, এরেই মধ্যে আসামি ধরতে যাতায়াতের জন্য আমি পুলিশকে হাইএক্স(মাক্রোবাস) ভাড়া ও তাদের আপ্যায়ন খরচও দিয়েছি,
দুলাল শেখ বলেন- আমি ছোটখাটো ব্যবসায়ী, আমরা দুই বন্ধু মিলে পুরাতন লোহা ভাঙ্গারী ব্যবসা করি, আমি ব্যক্তিগত ভাবে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে চলি, আমি ব্যবসায়ের মূলধন (যৌথ) ১৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা হারিয়ে আমার খাওয়া দাওয়া ঘুম হারাম হয়ে গেছে, আমি এতো টাকা ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবো, আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি আমার টাকা উদ্ধারে সার্বিক সহযোগিতা সহ ছিনতাইয়ে জড়িতদের শাস্তির জন্য,
দুলাল শেখ গণ-মাধ্যমকে জানান- পুলিশ বলেছিল কেরানীগঞ্জের আসামীকে ধরতে পারলেই টাকা উদ্ধার হয়ে যাবে,কেরানীগঞ্জের আসামী ধরার পর দেখছি বিষয়টা উল্টা এখন পুলিশকে আমি টাকা উদ্ধার করার বিষয়ে বার বার প্রশ্ন করলে এই মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই জাহিদ আমাকে বলেন ছিনতাইকারী চক্র নাকি অনেক বড় গ্যাং, তাদের নাকি ধরা খুব মুশকিল, তাদের হাত অনেক উপরে, তাদের শিকর অনেক শক্তিশালী বলে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে, দুলাল শেখ জানান- আমি আমার পরিচিত দুই জন সাংবাদিক নিয়ে পল্টন থানায় আমার টাকা উদ্ধারের বিষয়ে অগ্রগতির ব্যপারে জানতে গিয়েছিলাম তখন থানার তদন্ত ওসি সেন্টু এবং এডিসি সাহেব সাংবাদিকদের সাথে এই বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি, তারা আমাকে বলেন- এই বিষয়ে সাংবাদিকদের আপনি জানালেন কেন বলে আমাকে দমক দিতে থাকে,তারা আমাকে বলেন,যেহেতু আপনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আমরা টাকা উদ্ধার করতে পারবো না, আপনি সাংবাদিকদের দিয়ে টাকা উদ্ধার কইরেন বলে আমার সাথে পুলিশ কর্মকর্তারা চেঁচামেচি করলে আমি থানা থেকে চলে আসি।
এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার এস আই জাহিদ কে মুঠো ফোনে কল করে মামলাটির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি এই বিষয়ে কোন তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন- আপনি আমার তদন্ত ওসি এবং ওসি স্যারের সাথে কথা বলেন, স্যার এই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে সবকিছু বলতে পারবেন বলে জানিয়ে ফোন কল কেটে দেন।
ছিনতাই মামলার অগ্রগতি বিষয়ে পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিনকে মুঠো ফোনে করা হলে তিনি জানান- আমি মিটিং এ আছি,আপনি তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন।
অন্যদিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলাটি অগ্রগতি এবং ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধারে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পল্টন থানার তদন্ত ওসি সেন্টুকে তার মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি বাদী পক্ষের অসহযোগিতার কথা বলেন- তিনি জানান ২ জন আসামি ধরা পরেছে তাদের প্রাথমিক জিগ্গাসাবাদে তারা টাকা ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে এবং তাদের সাথে এই ঘটনায় জড়িত আরো কয়েক জনের নাম বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার সহ টাকা উদ্ধারের কাজে প্রতিদিনই অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তদন্ত ওসি দাবি করেন,
উল্লেখ্য- পুরান ঢাকার গুলিস্তান এলাকার বিআরটিসি কাউন্টারের সামনে গত ২৮শে আগস্ট-২০২২ খ্রিস্টাব্দে সময় আনুমানিক ৩ঃ২০ মিনিটে নবাবপুর ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে চেকের মাধ্যমে ১৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা উওোলন করে একটি কালো রংঙ্গের ব্যাগে করে পল্টন থানাধীন দৈনিক বাংলা মোড়স্হ পিএসআরএম অফিসে আসার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ের চাঁদপুর সদরের বকুল শেখের ছেলে দুলাল শেখ ছিনতাইকারীদের কবলে পরে, ঐদিন ঘটনার স্হলে ছিনতাইকারী দলের এক সদস্য হাতেনাতে ধরা পরে পরবর্তীতে আরো একজন ছিনতাইকারী গ্রেফতার হলেও ব্যবসায়ী দুলাল শেখের টাকা উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা নিয়ে অভিযোগ ভোক্তভোগী দুলাল শেখের।