মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
র‌্যাব-১১’র অভিযানে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ধুনটে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালন নড়াইলে পৃথক অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ গ্রেফতার ২ নানা আয়োজনে পাবনায় এসএটিভি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন পলিমাটি কর্তৃক শীতবস্ত্র উপহার শহীদ আবু সাঈদের বাবা-মা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী ধুনটে গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন কৃষক দলের কৃষক সমাবেশ পাবনায় আ’লীগের অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে বিএনপি’র বিক্ষোভ পীরগঞ্জে নার্সের বিরুদ্ধে চিকিৎসা সেবা না দেয়ার অভিযোগ রাণীশংকৈলে যুব ঐক্যের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ কিশোরগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে ট্রাক্টর আহত ২ লক্ষ্মীপুরে তুচ্ছ ঘটনায় শত বছরের পুরাতন রাস্তা আউলিবেড়া দিয়ে বন্ধ রাণীশংকৈলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদক কারবারিকে কারাদন্ড জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষ্যে বানেশ্বরে বর্ণাঢ্য র‌্যালি তারাগঞ্জে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সাথে অংশীজনদের মতবিনিময় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে থানচিতে বিক্ষোভ ৩৩ বছরের অবসান- প্রেসক্লাব রংপুরের তত্বাবধায়ক কমিটি গঠন লক্ষ্মীপুরে পুলিশের উপর হামলা গ্রেফতার-১১ পাবনার চাটমোহর রেলবাজারে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রংপুরে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালা

নেত্রকোণার বেশীরভাগ নদ-নদীর নাব্যতা হারানো হুমকির মুখে জীববৈচিত্র

আব্দুর রহমান ঈশান- নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘদিন যাবৎ নদ-নদী ও খালগুলো খনন না করায় কালের আর্বতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানির সাথে চলে আসা বালি ও পলি পড়ে নেত্রকোনার বেশীরভাগ নদ-নদী ও খালগুলোর নাব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে। নদীর গতিপথ লোপ পেয়ে খালে পরিণত হওয়ায় হুমকির মুখে পড়ছে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র। দেশীয় প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এক সময় সারা বছর নদী পথে চলত নেত্রকোণার ব্যবসা বাণিজ্য। নদ-নদীর পানি ধরে রাখতে না পাড়ায় ব্যহত হচ্ছে সেচ কাজ।

নেত্রকোনা পনি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়- নেত্রকোনা জেলায় ৭টি বড় নদ-নদীসহ মোট ১২২টি ছোট বড় নদী ও খাল ছিল। জেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া বৃহৎ ৭টি নদীর মোট দৈর্ঘ্য ৩৩৪ কিলমিটার ও ছোট বড় ১১৫টি নদীর দৈর্ঘ্য ৫১২৫.৬ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন যাবৎ এসব নদ-নদী খনন না করায় এবং কালের আবর্তে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানির সাথে নেসে আসা বালি ও পলি পড়ে বেশীরভাগ নদ-নদী খালে পরিণত হয়েছে।

নেত্রকোনা জেলার ১২২টি নদ-নদীর মধ্যে বড় ৭টি নদী হলো কংশ, মগড়া, সোমেশ্বরী, উব্দাখালী, ধনু, ভোগাই ও গুমাই। ছোট ১১৫টি নদীগুলো বর্তমানে খালে পরিণত হয়েছে। দূর্গাপুর উপজেলায় ৯টি ছোট বড় খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- নালিয়া আগা, ছুখাই খালী, বালচ নদী, ঝিনাইগাতি, আরবাখালী, নাহিতখালী, সত্তর মুন্সি, বানেস্বরী ও পাগরিয়া খাল।

কলমাকান্দা উপজেলায় ১৪টি ছোট বড় খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- জাঙ্গার, গুতুরা, সিদ্ধখলা, আরিন্দাখালী, গোবিন্দপুর, বড়ইউন্দু, গোলামখালী, মান্দাউড়া, মহাদেও নদী, বাইন বিল, শ্যামপুর, গুমাই নদী, দিলুরা ও ভোগাই খাল।

নেত্রকোণা সদরে ১৮টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- হরিখালি, নাপিতখালি, ডুপিংখালী, মগড়া, খোশাই, ঝিটাই, রেজখালী, গুরিয়ার, নগুয়া, ঠাকুরকোণা, চুচিয়া, ধলাই, দরিজাগি, সিদলী, জাহাঙ্গীরপুর, বালচ, মরাখালী ও তিলকখালী খাল। কেন্দুয়া উপজেলায় ১৬টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- রাজি, সাইডুলি, পাটেশ^রী, হুচিয়া, তুরুকপাড়া, ডুমরি, রাজপত, ওয়াই, চরপুর, সান্দিকোণা, কলতরিল, কুরদিঘা, সুতি, কচন্দরা, বালকি ও সামুকজানি খাল।

বারহাট্টা উপজেলায় ২৬টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- মরা কংশ, মরা বিশনাই, বড় ধলা, ঘালিয়ামারি, নানিয়া চাটগাঁও, নয়া বিল, পিয়াইন, দত্তখিলা, ঘাবারকান্দা, বারই, আমতলা, চাপারকোনা, ধলেশ্বরী, বাঘাইর, মহেশখালী, ধলা, গুলামখালী, রৌহা, নন্দী বাড়ী, বড়াপাড়া, টংগা, কান্দাপাড়, বড়িখাল, কামালপুর, শিববাড়ী ও বালিজুড়ী খাল।

পূর্বধলা উপজেলায় ১১টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- কালিহর, বালিয়া, লাউয়ারী, ফলাখালী, খসখসিয়া, বারাবারির, ধলাই, মরা, পাছুয়া, বলজানা ও সুয়াইর খাল। মোহনগঞ্জ উপজেলায় ৭টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- ঘোড়াউত্রা, মরা ধলাই, বেলদরিয়া, দাইরের, কলুংকা, পাপমারা ও নৌকা ভাঙা খাল। খালিয়াজুরী উপজেলায় ৭টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- বিশ্বহরি ডুলিয়াজান, ডুলনিরখাল, সেলা, পুটিয়া, নাইয়রী, বয়রা ও বৌলাই খাল। মদন উপজেলায় ৫টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- বালুই, বয়রাহালা, নাসিরখালী, পাতুনিয়া ও আন্দারমানিক খাল। আটপাড়া উপজেলায় ২টি খাল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ- পাগলাখালী ও পঞ্চখালী খাল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- জেলার বিভিন্ন এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী নদী ও খালের বিভিন্ন অংশ যে যার মতো দখলে নিয়ে পানি শুকিয়ে মাছ ধরে ধান চাষ করেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অদৃশ্য কারণে নীরব থাকায় সচেতন মহলের ধারণা, জনগণ একদিকে নদীর উপকারীতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অপরদিকে সরকার বিপুল পরিমাণের রাজস্ব হারাচ্ছে।

কংশ, মগড়া, সোমেশ্বরী, উব্দাখালী ও ধনু নদীর দুই পাড়ের কৃষকরা জানান- তারা আগে নদীর পানি দিয়ে সারা বছর ঘর গৃহস্থালীর কাজ করতো। বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেওয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। এখন আর জমিতে সেচ দেয়ার মতো পানি নেই। তারা আরো জানান, এলাকার জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু প্রভাবশালী মহলের দখলে থাকায় মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়েছে জেলেসহ সাধারণ জনগণ। দুই তীরে যাদের জমি আছে তারাই নদী দখলে নিচ্ছে। যাদের জমি নেই তারাও ধান লাগানোর ছলনায় নদী দখল করছে। কেউ কেউ সুবিধা অনুযায়ী নদী থেকে বালি উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছে। আবার অনেক যায়গায় অবৈধ ভাবে ইটের ভাটা বসিয়ে রমরমা ব্যাবসা করছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সারোয়ার জাহান জানান- কৃষি কাজে সেচের পানি ধরে রাখার লক্ষ্যে গত অর্থ বছরে ১০টি খাল খনন করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে আরো ৫টি খাল খনন করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ-এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন- নদী থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হবে। নদীর নাব্যতা রক্ষা ও সারা বছর সেচের পানি ধরে রাখার লক্ষ্যে যে সব নদ-নদী খননের প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরী করে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com