বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন
রবিন চৌধুরী রাসেল- রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপরে ভারত-বাংলাদেশ মিলে নদী ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে না পারা ও দেশীয় ব্যবস্থাপনায় নদী খনন, ভাঙন রোধে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে না পারায় তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের ১১৫ কিলোমিটারে বসবাসরত ২ কোটি মানুষের জীবনে মহাদুর্যোগ নেমে এসেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।
তিস্তা অববাহিকার রংপুর জনপদে খরা, বন্যা ও নদী ভাঙনে ঘরে ঘরে আহাজারি চলছে। নদী ভাঙনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বর্তমানে কোথাও কোথাও তিস্তা নদীর প্রস্থ হয়েছে ১০-১২ কিলোমিটার।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি ক্রমাগত বেসামাল হয়ে উঠছে তিস্তাপাড়ের জনজীবন। এ পরিস্থিতিতে তিস্তা চুক্তি সই এবং নিজস্ব অর্থায়নে বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন নদী আন্দোলনে সম্পৃক্ত নেতারা।
সোমবার ৫ই সেপ্টেম্বর ২২ইং সকাল ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে। মানববন্ধনে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।
সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা লিডার শফিকুল ইসলাম কানু, ডঃ তুহিন ওয়াদুদ, সাদেকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আলী, বখতিয়ার হোসেন শিশির, কেন্দ্রীয় নেতা সাজু সরকার, মোস্তাফিজার রহমান, আশিকুর রহমান ও বাবুল আকতার প্রমুখ।
সংহতি জানিয়ে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ, জাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলার চোখসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- এ বছর ভারত থেকে ধেয়ে আসা অসময়ের উজানের ঢলে রংপুর অঞ্চলের তিস্তা অববাহিকায় সপ্তমবারের মতো বন্যা হয়েছে। বন্যা ও নদী ভাঙনের ভয়াবহতায় এই অঞ্চলের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি হুমকির মুখে। খরাকালে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে শুকনো মৌসুমে পানি আটকে রাখে ভারত। আবার একটু পানি বেশি হলেই বাংলাদেশকে কিছু না জানিয়ে গজলডোবার গজব ভাসাচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষদের। এতে প্রতিবছর ব্যাপক ফসলহানি ঘটেছে। হুমকিতে পড়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। নদী ভাঙনে বাড়ছে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা, বাড়ছে রংপুর বিভাগে গড় দারিদ্রের হার।
তারা আরও বলেন- পাঁচ বছর মেয়াদি ‘তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠন’ করে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা খুব একটা বড় অংক নয়। এজন্য অর্থ সংগ্রহে তিস্তাপাড়ের মানুষ নিজেরাই যথেষ্ট। সরকার ও সরকার প্রধান আহ্বান জানালে দেশবাসী এ কাজে উদার মনে এগিয়ে আসবে। জলবায়ু পরির্বতনের অভিযোজন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা গেলে দেশের সব নদী সুরক্ষায় তিস্তা অনুকরণীয় পথ দেখাবে।
মানববন্ধনে তিস্তা নদীর দুই পাড়ের জেলা নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন রংপুরে আসেন। তারা তিস্তা চুক্তি সই ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড বুকে ঝুলিয়ে স্লোগান দেন। মানববন্ধনটি রংপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তিস্তাপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সাধারণ মানুষও এতে অংশ নেন।
অনলাইন ভিত্তিক 71sangbad24.com গণমাধ্যমটি
বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশনে নিবন্ধিত, (আই ডি নং-364)।
বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
আগ্রহীগণ সিভি পাঠাতে ই-মেইল করুনঃ info71sangbad24.com@gmail.com