তাপস রায়- তারাগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ
রংপুর জেলাধীন তারাগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রহিমাপুর(চাকলা) গ্রামে ১৮/০৮/২০২৩ইং দিবাগত রাতে একই পরিবারের ২টি চার্জার অটো চুরি হযেছে।

জানা গেছে, ভূক্তভুুগি ডালিম কুমার রায় কু্র্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর(চাকলা) গ্রামের বাসিন্দা । অভাব অনটনের সংসারে ডামিলের ভ্যান চালানো উপার্জনে সংসারে চলে নানা টানা পোড়ায়। উপায় না পেয়ে ছেলে বেনু রায়কে এনজিও থেকে লোন করে একটি চার্জার অটো ভ্যান কিনে দেয় ডালিম। ভালোই চলছিল বাপ ছেলের উপার্জনে সংসারের চাল ডাল ক্রয় ও ঋণ পরিশোধের সাপ্তাহিক কিস্তির টাকা প্রদান।

কিন্তু সুখ সইলো না ডালিমের ঘরে, দারিদ্রতার দ্বি-গুন চাপে কালো মেঘে ঘিরে নিলো স্বচ্ছল চলার গতি। বাপ ছেলের দুটো অটো ভ্যানই চুরি হলো একই রাতে। উপার্জন অক্ষম হয়ে পরল ডালিম ও তার ছেলে বেনু। দারিদ্রতার কষাঘাতে ভ্যানের চাকায় ছিল তাদের রুজি রোজগারের বৈধ হাতিয়ার। এখন তাদের ঘরে নেই খাবারের ব্যবস্থা তার উপর দিতে হবে সাপ্তাহিক ১৪৫০ টাকা কিস্তি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বসত বাড়ির টিনের বেড়া কেটে রাতের অন্ধকারে এ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ডালিমের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় চাকলা নদীর তীরবর্তী প্রতিনিয়তই সন্‌ধ্যাকালিন রাতে নদীর চর এলাকায় মাদক জুয়াসহ নানা ধরনের অপরাধমুলক কর্মকান্ড চলছে।

অশ্রুসিক্ত নয়নে  ডালিম কুমার বলেন, হামরা এখন কি করি খামো, কোটে পেয়া কিস্তি দেমো- হামার যে দোনো খ্যান ভ্যানে চুরি করি নিয়া গেইছে!

ডালিমের ভ্যান চুরিসহ তারাগঞ্জে আরও চুরি, মাদক ও জুয়াসহ বে-আইনি বিভিন্ন অপতৎপরতা বেড়েছে। আইন শৃঙ্খলার অবনতির ফলে এমন দূর্বৃত্ত ও অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটছে বলে সচেতন মহলের দাবি। উল্লেখিত চুরির ঘটনায় ভ্যান চালক ডালিম তারাগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ বিষয় তারাগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজার রহমানকে চুরি ভ্যানের বিষয় প্রাথমিক তদন্ত ও কোন তথ্য উদঘাটন হলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমি চুরির বিষয়ে অবগত হওয়ার পর লিখিত ভাবেও অভিযোগ পেয়েছি, দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল তদন্ত করেছে। চুরি যাওয়া অটো ভ্যান দুটো উদ্ধার তৎপরতা চলছে এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তারাগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন ২নং কুর্শা, এ ইউনিয়নে রয়েছে উত্তর বঙ্গের বৃহত্তর বাণিজ্যিক কার্যক্রম, গরু ছাগলের ক্রয়/বিক্রয়সহ কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানীর  স্থান “তারাগঞ্জ হাট” নামে খ্যাত বড় বাজার। অথচ আইন শৃঙ্খলার অবনতি কতটা ঘাটতি হলে চলতি বছরে তারাগঞ্জ বাজারসহ স্থানীয় পাঁচ ইউনিয়নে চুরি ডাকাতিসহ, ঘটেছে অনেক অপরাধ কর্মকাণ্ড। চুরির বিষয়ে কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আফজালুল হক বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি যা খুুবই দুঃখজনক। আপাতোত নিরিহ পরিবারটির জন্য আর্থিক ভাবে কিছু করা যায় কি-না ভাবছি!

গ্রামীণ ব্যাংক সয়ার শাখা ব্যবস্থাপকের সাথে, ঋণের টাকায় ক্রয়কৃত চার্জার ভ্যান চুরির ঘটনা অবগত আছেন কি-না এবং কর্তৃপক্ষ অনাকাঙ্খিত চুরির ঘটনায় কি ধরনের সুযোগ ও সুবিধা প্রদান করতে পারেন জানতে চাইলে,  সয়ার শাখা ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান বলেন- গ্রামীণ ব্যাংক সবসময় সর্বোত্তম গ্রাহক সেবা প্রদান করে থাকে। যেহেতু আমাদের গ্রাহকের অটো ভ্যান চুরি যাওয়া ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত, সে ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই ঋণ গৃহীতাকে গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী নতুন করে আরেকটি সহায়ক ঋণের ব্যবস্থা করবো, যাতে সে দুটো ঋণের সমন্বয় কিস্তির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ ও পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।