সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ অপরাহ্ন
আফজাল হোসেন- দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ফুলবাড়ী শাখার বর্তমান ও সাবেক দুই ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঋন গ্রহিতা ফুলবাড়ী পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র হবিবর রহমান সরকারের পরিবারের সদস্যরা ও তার পুত্র নূর আলম সরকার হিরা।
গত রবিবার দুপুর ১টায় ফুলবাড়ী পৌর শহরের অবকাশ সিনেমা হল প্রাঙ্গনে এই সংবাদ সম্মেলন করেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মরহুম হবিবর রহমানের ছেলেরা। সংবাদ সম্মেলনে ফুলবাড়ী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) বর্তমান ও সাবেক দুই ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ উত্থাপন করে বক্তব্য রাখেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান হবিবর রহমানের ছোট ভাই সাবেক মন্ত্রী ও এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মনসুর আলী সরকার।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হবিবর রহমান সরকারের পুত্র নুর আলম সরকার হিরা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১২ সালে মৎস্য চাষের জন্য সাবেক পৌর চেয়ারম্যান হবিবর রহমান সরকার ২৪ লাখ টাকা ঋন নেয়। এরপর প্রাকৃতিক দুযোগে সেই মৎস্য পোনা ধ্বংশ হওয়ায় সেই ঋনটি সময় মতো পরিশোধ করতে পারেনি।
এরপর তিনি হবিবর রহমান সরকার মৃত্যু বরণ করলে, হবিবর রহমান সরকারের ওয়ারিশসহ তার ছোট ভাই সাবেক মন্ত্রী ও এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মনসুর আলী সরকার গত ২০২০ সারের ১৩ ফেব্রুয়ারী দুই শতাংশ হারে ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা জমা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরসিডি ৫/২০১৯ নং সার্কুলার অনুযায়ী ঋনটি পুর্নতপশিল করার আবেদন করেন, কিন্তু ফুলবাড়ী রাকাবের তৎকালিন ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম, ঋনের সুদ মৌকুফের জন্য ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা জমা দেয়ার পরামর্শ দেন, সেই ব্যাংক ম্যানেজারের পরামর্শ অনুযায়ী ঋন গ্রহিতা পরিবার ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা জমা দেন।
কিন্তু ব্যাংক ম্যানেজার সুদ মৌখুফের কোন ব্যবস্থা রগ্রহন না করে ওই শাখা থেকে বদলী হয়ে চলে যান। এর তিন বছর পর আবারো সুধসহ টাকা পরিশোধের নোটিশ দেন বর্তমান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
তারা বলেন ব্যাংক ম্যানেজার তাদের কোন বিষয়ে অবহিত না করায় তাদের তিন বছর অতিবাহিত করে আরো আট লাখ টাকা সুধ বৃদ্ধি হয়েছে, এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
একই সাথে বর্তমান ব্যাংক ম্যানেজার এ্যাডভোকেট মোঃ মোস্তফা রেজওয়ানুরের বিরুদ্ধে অসদ আচরণের অভিযোগ তুলেন ঋণ গৃহিতা ও তার পরিবার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাকাব ফুলবাড়ী শাখার ম্যানেজার এ্যাডভোকেট মোঃ মোস্তফা রেজওয়ানুল সরকার, ঋন গ্রহিতা পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঋন গ্রহিতা পরিবার আর্থিক ভাবে সচ্ছল, তিনি আরো বলেন ঋনটি দুই নামে ছিল, হবিবর রহমান সরকার ও নুর আলম সরকার হিরা নামে।
হবিবর রহমান সরকার মৃত্যু বরণ করলেও, নুর আলম সরকার হিরা জীবিত ও আর্থিক ভাবে সচ্ছল, এছাড়া ব্যাংকে মরগেজকৃত জমির মূল্যে গৃহিত ঋনের ১০ গুনেরও বেশি। এ কারনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋনটির সুদ মৌখুফ করেনি বলে তিনি জানান।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মনসুর আলী সরকার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি মোতাবেক এবং তৎকালীন ব্যাংক ম্যানেজার এর পরামর্শে ঋণের টাকা পরিশোধ করা হয়। বলা হয় স্যার সুদের টাকা মৌকুফ করার আবেদন করলে আমি সব ব্যবস্থা করে দিব।
কিন্তু ব্যাংক ম্যানেজার কৌশলে ঋণের টাকা নিয়ে সুদের মৌকুফের ব্যবস্থা না করে কালক্ষেপন করে চলে যান। যা রিতিমত প্রতারনার সামিল।
এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত সাপেক্ষে দুই কর্মকর্তা বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থার দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভুগী বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মনসুর আলী সরকার সাবেক এমপি ও মন্ত্রী।