সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন
উজ্জ্বল রায়- নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সেচ্ছাচারী ও দূর্নীতিবাজ কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানকে সাংস্কৃতিক কর্মীরা অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং দ্রুত অপসারণ ও শাস্তির জানালো।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমীর এই সামনে দাবিতে সাংস্কৃতিক কর্মীরা শহওে প্রতিবাদ মিছিল, ঘেরাও ও সমাবেশ করে। জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসারের সেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতি প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে সংগ্রাম কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রওশান আরা কবীর লিলি,সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের সভাপতি মলয় কুমার কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক শরফুল আলম লিটু, মূর্ছনা সংগীত নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত সরকার, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত বিভাগের শিক্ষক নিরঞ্জন বিশ্বাস প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, গত এক বছরে এই দূর্নীতিবাজ অফিসার বিভিন্ন অনুষ্ঠান, প্রশিক্ষণ,কর্মশালা, অডিটোরিয়াম সংস্কারের নামে প্রায় ৫০ লাখ টাকার দূর্নীতি করেছে। বিভিন্ন সময় কালচারাল অফিসার শিল্পকলা একাডেমীর শিক্ষক-কর্মচারিদের অপমান ও শিল্পকলা থেকে বের করে দিয়েছে। এসব কারণে গত ১০ দিন শিল্পকলা একাডেমীর শিক্ষক ক্লাস বর্জন করেছেন। এই সেচ্ছাচারি ও দূর্নীতিবাজ এই ব্যক্তিকে একদিনও দেখতে চাই না। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে এই অফিসার নড়াইল ছেড়ে চলে না গেলে শিল্পকলা একাডেমী তালা মেরে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
পরে সাংস্কৃতিক কর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান গ্রহন করেন এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর সাথে দেখা করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সম্প্রতি তার (কালচালাল অফিসার) বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংস্কৃতি বিষয়ক সচিবের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে বলেও জানান।
শিল্পকলা একাডেমীর শিক্ষক ও সদস্যরা অভিযোগে জানান, জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমান ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিল্পী, বিচারক ও কলাকুশলীদের জন্য সরকারি নির্ধারিত কয়েক লাখ টাকা সম্মানি দেননি। জেলা শিল্পকলা অডিটোরিয়াম সংস্কারে ১০ লাখ টাকা আসলেও খাতা-কলমে টেন্ডার দেখিয়ে নিজেই কাজ করেছেন।
এ পর্যন্ত এই দূর্নীতিবাজ অফিসার নড়াইল থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আতœসাৎ করেছে। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতের বিভিন্ন শাখার ক্লাস চলাকালীন সময়ে কালচারাল অফিসার সংগীত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে তিনি অসদাচরণ করে থাকেন। এবং শিক্ষার্থীদেও কাছ থেকে অতিরিক্ত ভর্তি ও বেতন নিয়ে থাকেন।
গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর নড়াইল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর কাছে জেলা কালচারাল অফিসারের বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়। এর প্রেক্ষিতে ২৪ ডিসেম্বর সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কালচারাল অফিসারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের স্বাক্ষ্য দেয়। জেলা প্রশাসন কালচারাল অফিসারের বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতি তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারী সংস্কৃতি বিষয়ক সচিবের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠায়।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা কালচারাল অফিসার মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি কুচক্রিমহল উঠেপড়ে লেগেছে। জেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির যে প্রতিবেদন প্রদান করেছে এটিকে তিনি মিথ্যা দাবি করেন।