শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ১নং লামাকাজি ইউনিয়নের লামাকাজি বাজার পরিচালনা কমিটির প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ফান্ড নিয়ে লাপাত্তা রয়েছেন কমিটির সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া তালুকদার। তিনি বিদ্যাপতি সাংগিরাই গ্রামের গোলাম মোস্তফা তালুদারের পুত্র ও লামাকাজি বাজার পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি ও ইউনিয়ন বিএনপির সহঃ সভাপতি।
ব্যবসায়িরা জানিয়েছেন গত দুই আড়াই মাস থেকে তিনি লাপাত্তা রয়েছেন এবং তার পরিবারের লোকজনও কোন সন্ধান দিচ্ছেন না। বাজার কমিটির ফান্ডের বড় একটি অংশ বাজারের মসজিদ ও মাদরাসায় য়ায়।
মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লী আব্দুল মালিক জানান- গত দু’বছরে বাজার ফান্ড থেকে মসজিদে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকার আসার কথা। কিন্তু আসেনি। জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম লামাকাজি মাদরাসার মোহতামিম ও বাজার কমিটির সদস্য মুফতি ময়নুল ইসলাম জানান, তিনি গত বছর বাজার কমিটির ফান্ড থেকে ৩৫ হাজার টাকা মাদরাসা পেয়েছে । এবছর এখনও কোন টাকা পাননি।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে- লামাকাজি ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত বাজার পরিচালনা কমিটি। বিগত কমিটি ২০১৬ইং সালের নভেম্বর মাসে গোলাম কিবরিয়াকে নগদ ৬লক্ষ টাকাসহ লামাকাজী বাজারের সেক্রেটারী দায়িত্ব পান। এরপর বাজার সাবলিজ বাবদ আয় হয় ১২ লক্ষ টাকা। গরু বাজার সাবলিজ বাবদ ৫৩ লক্ষ টাকা। বাজারে দোকান ভিটা বিক্রয় বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা। সর্বমোট ৯৬ লক্ষ টাকার আয় থেকে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা ফান্ডে থাকার কথা এমনটাই জানিয়েছেন বাজরের প্রতিষ্টিত কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা।
তারা বলেন- গত দুই বছর থেকে গায়ের জোরে তিনি কোন আয় ব্যায়ের হিসাব কমিটিকে দিচ্ছেন না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশায় বাজার, সমজিদ ও মাদরাসা কমিটি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে নানা মন্তব্য শুরু হয়েছে।
বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিরন মিয়া জানান- সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়ার দুই আড়াই মাস থেকে কোন খোজ পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারের বিগ এমাউন্ট তার কাছে রয়েছে। কোন হিসাব-কিতাব পাচ্ছিনা। আমরা তার পরিবারের কাছে আমাদের প্রতিনিধি পাটিয়েছি। তার বাবা গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন তিনির ছেলে কোথায় আছেন কোন খোঁজ পাচ্ছেন না।
এছাড়াও বাজার কমিটির সহঃ সভাপতি একেএম দুলাল, ব্যবসায়ি পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি জানে আলম, ব্যবসায়ি গোলাম মৌলাসহ একাধিক ব্যক্তির বক্তব্য, সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া বাজারের প্রায় ৪০/৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে সম্ববত প্রবাসের উদ্দ্যেশ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন। গত আড়াই মাস থেকে আজ রবিবার পর্যন্ত তিনি এলাকা ছাড়া রয়েছেন। এতে আতংকিত রয়েছেন বাজার পরিচালনা কমিটি ও সমজিদ, মাদরাসা কমিটি।
ব্যবসায়িরা বলছেন- গোলাম কিবরিয়া প্রায় অর্ধ কোটি টাকার আত্নসাৎ করে লাপাত্তা রয়েছেন। একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন গত ৩১শে জানুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বিএনপি মনোনীত আনাসর প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জমানত হারিয়েছেন। নিশ্চয় তিনি বাজারের ফান্ড খরচ করে নির্বাচন করেছেন। তাই বর্তমানে তিনি লাপাত্তা।
এ বিষয়ে জানতে গোলাম কিবরিয়ার বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া য়ায়নি। তার চাচাত ভাই ইমরানের মোবাইলে একাধিক বার কল করলে ফোর রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে লামাকাজি ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন- গোলাম কিবরিয়া বাজার কমিটির সেক্রেটারি। তার কাছে বাজারের বড় একটি ফান্ড রয়েছে। এই ফান্ড থেকে বাজারের মসজিদ ও মাদরাসায় টাকা যায়।
কিন্তু আড়াই মাস থেকে সে উদাও রয়েছেন। তাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। গোলাম কিবরিয়া বিএনপির উপদেষ্টা ইলিয়াসপন্ত্রী লোনা মেডামের আস্থাভাজন নেতা। তার এমন লঙ্কা কান্ডে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।