সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ অপরাহ্ন
মোঃ সোহাগ- ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহ খুলনায় নিখোঁজ রহিমা বেগমের বলে দাবি করে ফুলপুর থানায় গিয়েছে তার তিন মেয়ে মরিয়ম মান্নান, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা ফুলপুর থানায় গিয়ে অজ্ঞাত ওই নারীর ছবিসহ পরনে থাকা আলামতগুলো পুলিশের কাছ থেকে দেখেন। সেই ছবিসহ সালোয়ার-কামিজ দেখে মরিয়ম মান্নান বলছেন, এটিই তার মায়ের মরদেহ। তবে পুলিশ বলছে, মেয়ের ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মায়ের মরদেহ শনাক্ত সম্ভব নয়।
মরিয়ম মান্নান বলেন- ২৭ দিন ধরে আমার মা নিখোঁজ। আমরা প্রতিনিয়ত মাকে খুঁজছি। এরই মধ্যে গত ১০ই সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও ছবিতে আমার মায়ের শরীর, কপাল ও হাত দেখে মনে হয়েছে এটাই আমার মা।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন- গত ১০ই সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বওলা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটির পরনে তখন গোলাপি রঙের সালোয়ার; গায়ে সুতির ছাপা গোলাপি, কালো-বেগুনি ও কমলা রঙের কামিজ এবং গলায় গোলাপি রঙের ওড়না প্যাঁচানো ছিল।
পরে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে না পেরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ১২ই সেপ্টেম্বর দাফন করা হয়। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা হয়েছে।
ওসি বলেন- মরিয়ম মান্নান ওই মরদেহটি তার মা রহিমার দাবি করলেও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। চূড়ান্তভাবে মরদেহ শনাক্তে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করা প্রয়োজন।
গত ২৭শে আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ হন রহিমা। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘ সময় পরও তার খোঁজ না পাওয়ায় ঘটনার দিন রাত সোয়া ২টায় দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার মেয়ে আদুরী।
রহিমার ছেলে মোঃ মিরাজ আল সাদী বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় পরদিন মামলা করেন। এদিকে নিখোঁজের পর থেকেই আন্দোলনে নামেন মরিয়ম মান্নানসহ তার বোনেরা।
রহিমার ছেলের করা মামলায় তার স্বামী বিল্লাল হাওলাদারসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকি আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।
আদালত ১৪ই সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ১৭ই সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।
এদিকে- বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক পোস্টে মায়ের মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন- আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র।