রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন
নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
সাধারন মানুষের আস্থার প্রতিক ও নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হয়ে দাড়িয়েছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দূর্ঘটনায় আহত, আগুনে দগ্ধ, জটিল ও দূরারোগ্যসহ নানা রোগে আক্রান্ত যেকোনো রোগী এই হাসপাতালে পৌঁছতে পারলে চিকিৎসা সেবা পাবেনই-এমনটা মনে করেন।
আর তাই উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন বহু রোগী ছুটে আসেন এই হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট ও পর্যাপ্ত জনবলের অভাব থাকলেও বর্তমানে মানসম্মত চিকিৎসা লাভে এটি সাধারন মানুষের ভরসাস্থল হয়ে দাড়িয়েছে। যে জনবল রয়েছে, তা দিয়েই দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছেন প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর সাধারন মানুষের মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু শফি মাহমুদ।
জানা যায়- ২০২২ইং সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন ডা. আবু শফি মাহমুদ। যোগদানের পরই সাধারন মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে দৃশ্যমান নজির স্থাপন করেন তিনি। ২০২২ইং সালে জানুয়ারী মাসে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মেরামত করে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। যা এর আগে এখানে ছিল না।
উপজেলায় অপারেশনের নির্ভরযোগ্য কোনো বেসরকারি ক্লিনিক না থাকায় দৌড়াতে হত রংপুরে। অপারেশন থিয়েটর চালুর ফলে বিশেষ করে এখানে গর্ভবর্তী নারীরা বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে। প্রতিমাসে এখানে প্রায় ১০-১৫টি রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন ও নরমাল ডেলিভারি হয়। যার ফলে অস্বচ্ছল মানুষদের সময়, শ্রম ও অর্থ সবকিছুই লাঘব হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়- এখানে আধুনিক এনসিডি কর্নারে হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস ও হাঁপানি রোগের চিকিৎসা ও ঔষুধ প্রদান করা হয়। চক্ষু রোগীদের জন্য ভিশন কর্নারে চক্ষু সেবা দেয়া হয়। এছাড়া এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি সহ স্বল্প খরচে সকল প্রকার প্যাথলজি সকল প্রকার পরীক্ষার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। পূর্বে যেখানে সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা ছিল ২০০-২৫০ জন। এখন দাড়িয়েছে ৪০০-৫০০ জনে।
প্যাথলজি, বহিঃবিভাগ, জরুরী বিভাগ, এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাম থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়। স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ভেড়ভেড়ী গ্রামে জোৎসা বেগম বলেন, হামরা গরীব মানুষ বড় ডাক্তারের গোড় টাকার অভাবে যাবার পাই না। এখন হামার হাসপাতালে সব ধরণের রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায়। পাচ টাকা টিকিট কাটি এমবিবিএস ডাক্তার দেখাই আবার ঔষধ পাই।
বড়ভিটা ইউনিয়নের আজহারুল ইসলাম বলেন- এখন আর সব রোগীকে চিকিৎসার জন্য রংপুর যেতে হয় না। একটি টিকিট কেটে ডাঃ এর পরামর্শ সহ বিনামূল্যে ঔষধ পাওয়া যায়। কম খরচে সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায়। আগে এখানকার সেবার মান এতোটা ছিল না।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু শফি মাহমুদ বলেন- হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা সাধারন মানুষকে তাদের প্রাপ্য মানসম্মত চিকিৎসাসেবা পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছি। ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার পর এখন বেড অকুপেন্সি রেট ১০০% অর্জন হয়েছে। সকলের আন্তরিক চেষ্টায় বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে অবস্থান বিগত ৬ মাস পর্যন্ত ৪০-৮০ এর মধ্যে রয়েছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থান। শুধু তাই নয় রংপুর বিভাগের মধ্যে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন- হাসপাতাল এখন সাধারণ রোগীর নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হয়ে গেছে। নরমাল ডেলিভারী, সিজার, আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং ইসিজি সহ সকল প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষা খুব সহজেই করতে পারছে। পুরো হাসপাতাল এখন সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। যার মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি করা হয়। মোট কথায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দ্বার গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
অনলাইন ভিত্তিক 71sangbad24.com গণমাধ্যমটি
বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশনে নিবন্ধিত, (আই ডি নং-364)।
বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
আগ্রহীগণ সিভি পাঠাতে ই-মেইল করুনঃ info71sangbad24.com@gmail.com