শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন
নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত সাধারণ ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নিত্যপণ্য অনেকটা সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে। নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে এর উপকারভোগীদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ের প্রথম ধাপে ৪৬০ টাকা প্যাকেজে ২ লিটার তেল, ২ কেজি চিনি ও ২ কেজি মুসুর ডাল পেয়ে খুশী উপকারভোগীরা। তিনটি পণ্য সাশ্রয়ীদামে পেয়ে অন্যান্য পণ্য ক্রয়ে বেড়েছে সক্ষমতা। সুষ্ঠু বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুবিধাভোগী নির্বাচিত করায় খুশী ইউনিয়নবাসী। সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ও অর্থ লেনদেন হয়নি বলে জানান এলাকাবাসী ও বিশ্বস্ত সূত্র।
সরেজমিনে টিসিবি’র কার্ড নিতে টাকা লেগেছে কি না এ বিষয়ে উপকারভোগীদের সাথে কথা হলে তারা জানান- ‘টিসিবি’র পণ্য আমরা টাকা দিয়ে কিনবো তাহলে এই পন্য কেনার কার্ড আমরা টাকা দিয়ে নিবো কেনো? চেয়ারম্যান মেম্বাররা আমাদের আর্থিক অবস্থা যাচাই করে আমাদের টিসিবি’র কার্ড দিয়েছে। তারা আমাদের কাছে কোনো টাকা নেয় নি। তবে একটি এলাকায় বাস করলে একজন মানুষের অনেক প্রতিপক্ষ থাকে।
এরকম প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান মেম্বারদেরও রয়েছে। আর আমাদের টুপামারী ইউনিয়ন একটি ক্রিটিকাল এলাকা। এখানে ছোট্ট বিষয় নিয়েও নোংরা রাজানীতি হয় যার ফলে হয়রানীর শিকার হয় সাধারণ মানুষেরা। ইউনিয়নের একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ফেইসবুকে টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান মেম্বাররা টিসিবি’র কার্ড বিক্রয় করছে বলে বদনাম ছড়াচ্ছে। যার ফলে এরকম অপপ্রচার ও কুৎসা রটানোর জন্য উপকারভোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপকারভোগী হরিপদ(৪৪) বলেন- ‘আমরা কারো কাছে হাত পাতি খাবার পাই না। দিন আনি দিন খাই। মেম্বার কার্ড দিছে এই কার্ড দিয়া সেদিন মাল কিনি আনছি। এতে করি হামার বাকি জিনিসপাতি কেনার জন্য টাকা বাচিছে।
টাকার বিনিময়ে কার্ড নেওয়ার বিষয়ে টুপামারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দাস পাড়া এলাকার টিসিবি’র উপকারভোগী নীলকান্ত দাস (৫০) বলেন, আমাদের রুহুল মেম্বার অনেক ভালো। এই কার্ড নিতে আমার এক টাকাও লাগে নি। মেম্বার নিজে বাড়িত আসি আমাক কার্ড দিয়া গেইছে। ১০ কেজি চালের ¯িøপ আসলে মেম্বার বাড়ীত আসি দিয়া যায় তার নামে আমরা কেমন করি খারাপ কথা কই।
অপর এক সুবিধাভোগী আরোতি রানী(৩৮) বলেন- আমরা দিন আনি দিন খাই আমরা কোঠে থাকি টাকা পাইসা দিয়া কার্ড নেই। আমরা সকালে কাজ করির যাই সন্ধ্যায় আসি হামার নামে কায় কোন্ঠে কি কয় হামরা কি সেইলা জানি। তবে একটা কথা ভালো করি কবার পাই কার্ডের জন্য কাখো কোনো টাকা দেই নাই।
সুবিধাভোগী উপাসু(৫৬) বলেন- শেখের ব্যাটি হামার গ্রামোত আসি ট্রাকোত করি কম দামে জিনিস পাতি দিয়া যায়ছে। আর সেই কার্ড নিবার জন্য টাকা দেমো ক্যানে। আমরা দোয়া করি শেখের ব্যাটি মেলা দিন বাচুক।
টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ্ ফকির বলেন- ‘আমরা স্বচ্ছ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপকারভোগী নির্বাচিত করেছি। উপকারভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যে সরকারি যে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ি উপকারভোগীর তালিকা করেছি। তবে একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আমার মেম্বারদের নামে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। একটি মানুষও বলতে পারবে না টিসিবি’র কার্ডের বিনিময়ে আমাদের তারা টাকা দিয়েছে।’
এছাড়া টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহারের নেতৃত্বে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে।