শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
হারুন-অর-রশিদ বাবু- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বংশীয় প্রভাব বিস্তার করতে জামে মসজিদে তালা ঝুলিয়েছেন সভাপতি জিল্লুর রহমান। নিকটতম প্রতিবেশীরাও জামে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করতে নাপারায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে যে কোন সময় আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, গত ০২ মে শুক্রবার বাদ জুম্মা হতে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ি ইউনিয়নের “উত্তর কৈকুরী কুর্শাপাড়া জামে মসজিদের গেটে ঝুলছে তালা! আযান ও নামাজ আদায় বন্ধ।
বংশীয় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মসজিদের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়েছেন মুয়াজ্জিন ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি জিল্লুর রহমান (৬৫)। মসজিদ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। অনেকেই অন্যত্র নামাজ আদায় করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নারী সাংবাদিকদের বলেন, মসজিদ কমিটির মোতায়োল্লী, সভাপতি, মুয়াজ্জিন, ক্যাশিয়ার সহ প্রায় সকল পদ একই ব্যক্তি হওয়ায় জিল্লুর রহমানের দাপটে অনেকেই আতঙ্কিত।
গত শুক্রবার বাদ জুম্মা স্থানীয় দুই পরিবারের জায়গা জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে, মসজিদের মুয়াজ্জিন ও সভাপতি জিল্লুর রহমান ও প্রতিবেশী ফিরোজ মিয়া পরিবারের মাঝে মসজিদ পরিচালনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। তখন ক্ষীপ্ত হয়েই মুসল্লিদের সামনেই মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেন মুয়াজ্জিন জিল্লুর রহমান। তারপর থেকেই আযান এবং নামাজ বন্ধ হয়ে যায় ওই মসজিদে।
মসজিদের মুসল্লি ফিরোজ মিয়া বলেন, প্রায় ৬০ বছর আগে মরহুম ইয়াসিন ব্যাপারী একটি ওয়াক্তিয়া নামাজ ঘর তৈরী করেন, যাহা এই ইউনিয়নের প্রথম নামাজের স্থান হিসেবেও বেশ পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় মুসল্লিদের অনুরোধে ওয়াক্তি নামাজ ঘরকে “উত্তর কৈকুড়ী কুর্শাপাড়া জামে মসজিদ” নামকরণ করা হয়। ওই মসজিদ সংলগ্ন একটি ঈদগাহ মাঠ করার উদ্দেশ্যে ৯ শতক জমি ওয়াকফ করে দেন। পরে মসজিদটি নিজস্ব জমিতে ভবন নির্মাণ করে স্থানীয় মুসল্লিগণ জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাব খাটিয়ে জিল্লুর রহমান মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগ নিয়ে মসজিদটিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করার অপচেষ্টা করছে। গ্রামের মানুষ যাতে মসজিদে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য মসজিদের মূল ফটক দেয়াল নির্মাণ করেছে এই জিল্লুর রহমান।
অপরদিকে জিল্লুর রহমানের দাবি, তারাই মসজিদে জমি দান করেছেন এবং অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন। প্রতিবেশী ফিরোজ মিয়া এবং তার পরিবার এই সমাজের কেউ নয়। মসজিদের বিদ্যুৎ বিল একাই দিচ্ছি কেউ তো খবর নিল না? আর এখন মসজিদে তালা দিয়েছি সেজন্য স্থানীয় নেতা, পুলিশ, সাংবাদিক আসা শুরু হইছে।
উত্তর কৈকুরী কুর্শা পাড়া জামে মসজিদের মুসল্লি আশাদুজ্জামান মানিক বলেন, গত শুক্রবার বাদ জুম্মা হতে মসজিদে তালা ঝুলছে আযান শোনা যাচ্ছেনা! আমরা মুসুল্লিরা নামজ আদায় করতে পারছি না।
কৈকুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম বলেন, গত শুক্রবার বাদ জুম্মা আমি উভয় গ্রুপকে নিয়ে বসছিলাম, সে সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। মারামারির উপক্রম হয় একারণে তালা লাগিয়েছে। প্রশাসন ইচ্ছা করলে যে কোন সময় তালা খুলতে পারে। রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তালা খোলার ব্যবস্থা করা হবে।