সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
সৌদি দূতাবাসের আয়োজনে রংপুরে হিফযুল হাদীস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ব্যাটারী চালিত ভ্যানে মাদক পরিবহন কালে আটক ১ পিকআপে মাদক পরিবহনকালে গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাবের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সংবাদিকের পিতার মৃত্যুতে ফুলবাড়ী থানা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের শোক ধুনটে জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা রংপুর ক্যাডেট কলেজের আন্তঃহাউজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু সম্প্রীতির দেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রংপুরে ইসলামী আন্দেলনের গণ সমাবেশ কিশোরগঞ্জে বিলুপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্বপদে বহালের দাবি ঠাকুরগাঁওয়ে নানা আয়োজনে প্রাক-বড়দিন উদযাপন নবম বারের মতো শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক হলেন প্রফেসর আজাদ ফুলবাড়ীতে মাদক কারবারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সোনালী সকাল ও সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাবের প্রীতি ম্যাচ সম্পন্ন থানচিতে মহান বিজয় দিবস পালন জলঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবস পালন বিজয় দিবসে রাজশাহী জেলা পরিষদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন বিজয় দিবস উপলক্ষে রংপুর মহানগর জামায়াতের আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে ইউএনও অপসারণের দাবীতে বৈষম্যের মানববন্ধন নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজাসহ দুইজন গ্রেফতার

বাউফলে কেশবপুরের ১৩ নিখোঁজ জেলের ৬ জনের হদিস মিলেছে

দুলাল হোসেন- পটুয়াখালি জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়নের ১৩ জেলে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। আশঙ্কা ও উদ্বিগ্নতায় প্রহর গুনেছিল ওই পরিবারের লোকজন।

গত বৃহস্পতিবার ১৮ই আগস্ট সকাল থেকে ২২শে আগস্ট (রবিবার) বিকেল পর্যন্ত জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে এক তিক্ত অভিজ্ঞতা ব‍্যক্ত করেন নিখোঁজ জেলে মো. হাচান হাওলাদার।

হাচানের বর্নণা-
বৈরী আবহওয়া উপেক্ষা করে বেঁচে থাকা ও মহাজনের দাদন মেটানোর তাগিদে গভীর সাগরে জাল ফেলি, জাল তোলার ঠিক এক ঘন্টা আগে হঠাৎ শুরু হয় ঘূর্নিঝড়। আমরা সবাই ট্রলারে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ সাগরের উত্তাল ঢেউ ও প্রচন্ড ঝড়ে ট্রলারটি উল্টে যায়।

আমরা সবাই ডুবন্ত ট্রলারের ভেসে থাকা কিছু অংশ আকড়ে ধরি। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ট্রলারের সঙ্গে আঘাত পেতে পেতে শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষত হয়ে যায়। তারপরেও বেচেঁ থাকার আশায় ট্রলার আঁকড়ে ধরি। এভাবে জীবন-মরণ যুদ্ধ চলছিল ভারতের সীমানায় বৃহস্পতিবার ১৮ই আগস্ট সকাল থেকে ২২শে আগস্ট (রবিবার) বিকেল পর্যন্ত। এরপর ভারতীয় কোষ্ট গার্ড তাদেরকে উদ্ধার করে।

একদিন ও রাত ভারতীয় কোষ্ট গার্ডের জাহাজে থাকার পর গত ২৩শে আগস্ট (মঙ্গলবার) সকালে বাংলাদেশের কোষ্ট গার্ডের কাছে আমাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। পরে বাংলাদেশের কোষ্ট গার্ড ওই দিন রাত ৯টার দিকে মোংলা বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদারের কাছে হস্তন্তর করেন।

সেখান থেকে স্বজনদের কাছে আমাদের হস্তান্তর করেন তিনি। আজ ২৯শে আগস্ট(সোমবার) দুপুরে নিজ বসতঘরে বসে এভাবেই বেঁচে ফেরার কথা বলছিলেন বৈরী আবহাওয়ায় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হওয়া জেলে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের হাচান হাওলাদার(১৮)।

তিনি বলেন- ওই সময় শুধু আল্লাহর নাম স্মরণ করতেছিলাম। তবে ঢেউয়ের আঘাতে আঘাতে ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম। বেচেঁ ফেরার আশাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। আল্লাহ্ বাঁচিয়ে রেখেছেন এ জন্য শুকরিয়া আদায় করছি।

তিনি বলেন- ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবন্ত ট্রলারটির ভাসমান কিছু অংশ ধরে সবাই বৃহস্পতিবার সারা দিন ছিলাম। এরপর প্রচন্ড তুফানে মিলন খান(৪০), হাওলাদার(৩০) ও কালাম খান(৫৫) কে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

এভাবে বৃহস্পতিবার ১৮ই আগস্ট রাত কেটে যায়। শুক্রবার ১৯শে আগস্ট সকালে সুলতান মোল্লাও তুফানে ভেসে যায়। বাকী ৯ জন ওই ভাবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত থাকি। ট্রলার ধরে রাখার মত শক্তি না থাকায় শনিবার ২১শে আগস্ট সকালে সাগরের অতল গর্ভে তলিয়ে যায় বজলু হাওলাদার(৪০), ট্রলার মালিক মোঃ আলম গাজী(৫০) ও মোতাহার আকন(৪০)।

চোখের সামনে তাদেরকে পানিতে ডুবে যেতে দেখেছি। ভাগ্যক্রমে আমিসহ ৬জন প্রাণে বেচেঁ যাই। বেচেঁ যাওয়া অন্যরা হলেন, জলিল শরীফ(৩৫), নুর আলম(৪০), বাবুল মীর(৪৮),সবুজ খান(৩০) ও কাওছার রাড়ী(২৯)।

ট্রলার মালিক আলম গাজীর ভাই হাবিবুর রহমান বলেন- বাংলাদেশের কোষ্ট গার্ডের মোবাইল ফোন দিয়ে উদ্ধারকৃতরা আমার সাথে মোবাইলে কথা বলেন। কোষ্ট গার্ডের মাধ্যমে জানতে পারি উদ্ধারকৃত জেলেদেরকে মংলা বন্দরে হস্তান্তর করা হবে। এরপর শহিদুল মুন্সি নামে আমার এক আত্মীয়কে মংলা বন্দরে পাঠাই।

শহিদুল মুন্সি বলেন- কেশবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মহিউদ্দিন আহম্মেদ লাভলু ভাই আমাকে মোংলাবন্দর উপজেলা নির্বাহি অফিসার কমলেশ মজুমদারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। আমি তার কথামত সেখানে চলে যাই।

পরে উপজেলা নির্বাহি অফিসার আমাকে ডেকে উদ্ধারকৃত ছয় জেলেকে আমার কাছে হস্তান্তর করেন। পরে আমি একটি মাইক্রোগাড়ী যোগে বুধবার ২৫শে আগস্ট দুপর ১২টার দিকে মমিনপুর গ্রামে পৌছাই।

স্থানীয়রা জানান- ঝড়ের কবলে পড়ে ১৮ই আগস্ট বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হওয়া ১৩ জেলের মধ্যে ৬ জন প্রানে বেচেঁ এলেও এখনও ৭ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনও কেউ কিছু বলতে পারছি না। নিখোঁজ রয়েছেন, মিলন খান, রিপন হাওলাদার, কালাম খান, সুলতান মোল্লা, বজলু হাওলাদার, মোঃ আরল গাজী ও মোতাহার আকন।

নিখোঁজ হওয়া জেলে আলম গাজীর ছেলে মোঃ নাঈম(১৮) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন- নিখোঁজের খবর পেয়ে কান্নাকাটি করলেও বাবা ফিরে আসবে এই আসায় ছিলাম। কিন্তু দিন যত বাড়তে থাকে আমরা পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। ফিরে আসা জেলেদের মুখে যখন শুনি বাবা সাগরে তলিয়ে গেছেন।

তখন মনে করি বাবা আর ফিরে আসবে না। একই কথা বলেন নিখোঁজ হওয়া আরেক জেলে মোতাহারের ছেলে রিফাত(১৮)।

উদ্ধারকৃত জেলেদের হস্তান্তরের সত্যতা স্বীকরা করে মোংলা বন্দর উপজেলার নির্বাহি অফিসার কমলেশ মজুমদার বলেন- উদ্ধারকৃত জেলেদের রাতে থাকা এবং খাবারের ব্যবস্থা করে দেই। বাড়ী ফেরার জন্য মাইক্রোবাস ভাড়া করে দিয়ে আমার সাধ্যমত আর্থিক সহযোগিতা করেছি।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com