সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন
খলিলুর রহমান- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে কতিপয় দুষ্টচক্র মহল কর্তৃক হামলার শিকার উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি মোঃ আনোয়ারুল হক, তিনি বদরগঞ্জ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক হিসেবও কর্মরত আছেন। গত (১৩ জানুয়ারি)-২৪ইং মঙ্গলবার বেলা ১২ ঘটিকায় সভাপতি চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ে আগমন পরবর্তী মাঠে বসে থাকাকালিন আকস্মিক ভাবে কতিপয় বহিরাগত কর্তৃক আক্রমণ ও হামলার শিকার হন।
জানা গেছে, গত ৬ মাস থেকে এ হামলা করতে চায় বলে বিভিন্ন ভাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের হুমকি প্রদান করেন একটি মহল। এ হুমকির বিষয়ে বদরগঞ্জ থানায় একটি জিডিও করা হয়েছে। জিডি নম্বর- বদরগঞ্জ থানা জিডি নম্বর- ১২২০, ২৮/০৫/২৩ইং। জিডিতে সূত্রে বিবাদীর নাম সমূহ- ১। সোয়েব হোসেন লেবু(৩৮), ২। সোহেল রানা ডালিম(৩৪), উভয় পিতা- মৃতঃ আব্দুল মজিদ প্রামানিক। মোঃ আবুল কালাম আজাদ, পিতা- মৃতঃ সাফয়েত প্রামাণিক। সর্ব সাং- উজিয়াল, তারাগঞ্জ, রংপুর।
জিডি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত দীর্ঘ ২৩ বছর পূর্ব হইতে প্রধান শিক্ষকের জোগসাজোশে অভিযুক্তরা চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থানন্তরের চেষ্টায় পায়তারা করে। ইহা ছাড়াও বিদ্যালয়ের নামীয় ৬০ শতাংশ জমি বিধি বহির্ভূত ভাবে বিক্রি করে। সভাপতি মোঃ আনোয়ারুল হক প্রামাণিকের আন্তরিক চেষ্টায় ন্যায়সঙ্গত ভাবে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক শিক্ষাক্রম রক্ষায় মহামান্য হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বিদ্যালয়টি যথাস্থানে বহাল আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত (১৭ মে)-২৩ইং বদরগঞ্জ থানাধীন তালুক দামোদরপুর(চিলাপাক) বাজার সংলগ্ন বড় রাস্তা নামক এলাকায় সন্ধ্যাকালিন সময়ে আক্রমণ ও প্রাণনাশের হুমকী দেয় এবং সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর হুশিয়ারি দেন।
এছাড়াও চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয় ও এসএসসি ভোকেশনালের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদেরকে বিভিন্ন হুমকী ও উক্ত প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন সহকারি শিক্ষককে(শিক্ষক প্রতিনিধি) সভাপতির নামে অর্থ আত্মসাত এর মিথ্যে বানোয়াট গল্প বানানো এবং নকল প্রমাণপত্র তৈরি করার চাপ ও হুমকী দেন, সভাপতির নাম নিলে আমাদের হাত পা কেটে দেবেন বলেও হুশিয়ারি করেন(বক্তব্য সংরক্ষিত)।
স্থানীয় ও ভূক্তভোগীর বক্তব্য মতে, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকীর ভয়ে গত (৫ মে)-২৩ইং থেকে (১২ ফেব্রুয়ারি)-২৪ইং পর্যন্ত সভাপতি প্রতিষ্ঠানটিতে আসতে পারেন নাই। পরে তারাগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে নিরাপত্তা সহায়তা নিয়ে (১৩ ফেব্রুয়ারি)-২৪ইং বেলা আনুমানিক ১২ ঘটিকায় বিদ্যালয়ে আগমন করলে পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী ও শতাধিক স্থানীয় জনতার সামনে থেকে জিডিতে বিবাদির তালিকায় থাকা ব্যক্তিবর্গ ও তাদের কতিপয় লোকজন সভাপতির উপর আক্রমণ করে এবং জামার কলার ধরে টেনে হেঁচরে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তৎক্ষনাৎ স্থানীদের সহযোগীতায় সভাপতি আনোয়ারুল হককে উদ্ধার করে বিদ্যালয় ভবনে নিয়ে পুলিশি নিরাপত্তায় রেখে পরে পক্ষে বিপক্ষের মারপিটের উত্তেজিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে তারাগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে সভাপতি আনোয়ারুল হক প্রামাণিক উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরফরাজ আলম দুলালের নেপথ্য ষঢ়যন্ত্র হিসেব অভিযোগ এনে ভিডিও বক্তব্য দেন।(তথ্য সংরক্ষিত)। এছাড়াও উক্ত বিদ্যালয়ে আরও একাধিক শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা ও মিথ্যাচারের বিষয় নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ভিডিও বক্তব্য দেন।(তথ্য সংরক্ষিত)।
মারপিটের ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা তারাগঞ্জ থানায় কর্মরত এস আই লতিফ হোসেন বলেন, এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। তাদের বলেছি এটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখানে গ্যানজাম করা মানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হওয়া। আপনাদের কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে থানায় অভিযোগ দেন।
উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সরফরাজ আলম দুলাল মোবাইল ফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে অর্থের লেনদেন নিয়ে গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তারিখ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে, আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেহেনা ইয়াসমীন জানান, চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছি। দুই পক্ষের কাছ থেকে কাগজপত্র চেয়েছি পর্যালোচনার জন্য। আগামি রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) উভয় পক্ষকে নিয়ে ইউএনও মহোদয়ের কাছে বসব।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি, তবে কোন পক্ষের লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি নিরাপত্তা সহায়তা চেয়েছিলেন আমরা তারাগঞ্জ থানা পুলিশ তা দিয়েছি।
ইউ এন ও রুবেল রানা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নিরবিচ্ছিন্ন ও স্বাভাবিক রাখতে চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ের উভয় পক্ষকে কঠোর ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে যথাযথ আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।