শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
আবির আকাশ- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার সুলতান আহমেদের মালিকানা ১৮ শতাংশ জমি জবর দখল করে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমির চলাচলের রাস্তা খুলে দেয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট দরখাস্ত করেন মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমদ। জমি বিষয়ে কথা বলতে শাহাবুদ্দিনকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করায় মামলার করার হুমকি দেন মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারকে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের গঙ্গাপুর গ্রামের মিলিটারি সুলতান আহমেদের ক্রয়কৃত জমি বিরোধে এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়।
জমি ফিরে পেতে মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে ল্যান্ড সার্ভেয়ার ট্রাইবুনাল আদালতে ২০১৯ সালে মামলা করেন। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় সুলতান আহমেদ একই এলাকার সাহাবাড়ির প্রাণবালা সাহা ও প্রিয় বালা সাহার সাথে ১০০৫ খতিয়ান সিএস ও ১৭৭৩ এসএ খতিয়ানের ৫২৮৪ দাগের নাল ও ৫২৮৮ দাগের বসতবাড়ির ছয় শতাংশ জমি মৌখিক অদল বদল করেন। নাল ও বসতবাড়ি মিলিয়ে ১৮ শতাংশ জমি বদল করে বাড়ীর রাস্তার জন্য। শর্ত ছিল কখনো যদি জমি বিক্রি করেন তাহলে প্রাণবালা ও প্রিয় বালা সাহা রাস্তার ওই জমি মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আমাদের কাছে বিক্রি করবেন। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করে গোপনে রাতের আঁধারে একই এলাকার সুলতান ভূঁইয়ার ছেলে শাহাবুদ্দিন ভূঁইয়ার কাছে বিক্রি করে পালিয়ে যায় প্রাণবালা সাহা ও প্রিয় বালা সাহা।
শাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া রাস্তার জমি খরিদ করার পরেও প্রায় ১০-১২ বছর রাস্তা ছিল। এরপর সে হঠাৎ রাস্তার উপর পানির কল বসিয়ে চতুর্দিকে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। স্থানীয়ভাবে বহু শালিশবৈঠকে বসলেও শাহাবুদ্দিন রাস্তা খুলে না দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা বিপাকে পড়েন। এ জমি নিয়ে আদালতের মামলা চলমান থাকায় এখোনো পর্যন্ত বিচারের রায় পাননি দুপক্ষ।
এই জমির বিষয় স্থানীয় কয়েকজন বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই জমি তার কাটা বেড়া ও গেইট দিয়ে মুক্তিযুদ্ধা সুলতান আহমেদকে জমিতে প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে শাহাবুদ্দিন। আমরা ছোট থেকে আমাদের বাড়িতে এই রাস্তায় দিয়ে চলাফেরা করতাম এখন তারা ঘর, টিউবওয়েল বসিয়ে গেইট দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। একই কথা গংঙ্গাপুরের স্থানীয় গণ্যমান্য সবার কাছেই শোনা যায়।
মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমেদ বলেন, আমি প্রাণবালা সাহা ও প্রিয়বালা সাহা থেকে এই জমি অদলবদল করি। জমি কেনার পর আমি বাগানের ভিতরে ঘর করে সেখানে ছিলাম। কিছুদিন পর প্রাণবালা শাহ ও প্রিয়বালা সাহা আমার কাছ থেকে এই জমি অদল বদল করেন। অদল বদল করার পর আমাকে অদল বদল জমিতে যাওয়ার জন্য রাস্তা দেন। আমি আমার ঘর রেখে বাইরের জমি কিনে ঘর করে থাকি। এর কিছুদিন পর প্রাণবালা সাহা ও প্রিয়বালা সাহা আমাকে না জানিয়ে জমি বিক্রি করে চলে যান।
এই বিষয় প্রবাসী শাহাবুদ্দিনের হোয়াটসঅ্যাপে মাধ্যমে বলেন, আমি সুলতান আহমেদের জায়গা দখল করে রাখিনি। আপনি আশেপাশে সবাই’কে জিজ্ঞাসা করেন। এই জমি নিয়ে আদালতে সুলতান আহমেদ নিজেই মামলা করেছেন। আমি ৩০ বছর আগে এই জমি কিনেছি। ভবিষ্যতে আমার পরিবার এখানে থাকবে। আমি আমার জমির রাস্তা কেন অন্যজনকে ব্যবহার করতে দিব।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খুবি দুঃখজনক। আমি তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন দায়িত্ব দিয়েছি। অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।