সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
র‌্যাব-১১, সিপিসি-২’র অভিযানে গাঁজা’সহ ৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার আদালতের আদেশ অমান্য করে সংখ্যালঘুর জমি দখল ও ঘর নির্মাণ লক্ষ্মীপুরে দালাল ছাড়া হয় না পাসপোর্ট বাড়তি সুবিধায় উপ-পরিচালক টিসিবির কার্ড নিয়ে পুঠিয়ায় বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়ন জামায়াতের সুধী সমাবেশ ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউপি যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত পাবনা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি বাচ্চু, সম্পাদক এহিয়া খান ধুনট বাজার ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সভা পাবনায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শহীদ দিবস পালন তারাগঞ্জ ফুটবল একাডেমীর নব-গঠিত কমিটির পরিচিতি উপলক্ষে প্রীতিম্যাচ নড়াইলে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধায় জেলা পুলিশের পুষ্পস্তবক অর্পণ পাবনার সাঁথীয়ায় যুবকের হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে দুর্বৃত্তরা প্রতিপক্ষের হামলায় আহত-১ নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার- ১ ভাঙ্গুড়ায় বইপড়া কর্মসূচি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শান্তি-শৃঙ্খলা উন্নয়নে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান রাজশাহীতে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু র‌্যাব-১১, সিপিসি-২’র অভিযানে ইয়াবাসহ মাদক কারবারী গ্রেফতার

নাজমুস সাকিবের ধর্ষণের শিকার ছোট্ট শিশুটি এখন বাক প্রতিবন্ধী

হারুন-অর-রশিদ- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় ২০১১ইং সালে ৫ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের ঘটনা তোলপাড় হয়েছিল দেশজুড়ে। কেমন আছে সেই ছোট্ট শিশুটি? খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল, ওই ঘটনার পর কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে সে। বাক প্রতিবন্ধী মেয়েটির এখন নির্মম জীবনযুদ্ধ। আর, সেই ধর্ষক নিরপিশাচ নাজমুস সাকিব আয়েশী জীবন কাটাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

অনুসন্ধানে জানা যায়- আইনের আশ্রয় নিলেও বিচার পায়নি ছোট্ট শিশুটি। অর্থের বিনিময়ে শিশুটির বাবার মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিল ধর্ষকের পরিবার। কিন্তু ভুক্তভোগীর পরিবার বিচার ছাড়া আর কিছু চায়নি। মামলাও করেছিলেন তারা। তবে ধর্ষক নাজমুস সাকিব ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাবশালী জলিলুল আজমের ছেলে হওয়ায় পার পেয়ে গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- রাজধানীর বাসাবোর সবুজবাগ এলাকার ২৮ নম্বর মায়াকাননের পেছনে ৩টি বাড়ির পর একটি টিনশেডের ঘরে পরিবারের সঙ্গে থাকতো শিশুটি। পিতা সিএনজি অটোরিক্সা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন। ঘটনার দিন ফুটফুটে ছোট্ট শিশুটিকে চকলেটেরে লোভ দেখিয়ে ২৮ মায়াকাননে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান মাদকাসক্ত নাজমুস সাকিব। এরপর ছাদে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে শিশুটিকে নিচতলার গ্যারেজে রেখে পালিয়ে যান নাজমুস সাকিব। এরপর শিশুটির কান্নাকাটির শব্দ শুনে এগিয়ে আসেন বাড়ির কেয়ারটেকার বাচ্চু মিয়া। শিশুটির করুণ অবস্থা দেখে তার চিৎকারে জড়ো হন এলাকাবাসী। পরে শিশুটি পুরো ঘটনা জানান।

এ ঘটনার পর নাজমুস সাকিবের বাবা জলিলুল আজমমহ শিশুটির বাবা মিলে তাকে প্রথমে মুগদা হাসপাতালে নেন। শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করে। সেখানে প্রায় ২৮ দিন চিকিৎসার পর প্রাণে বেঁচে গেলেও শিশুটি হয়ে পড়ে বাক প্রতিবন্ধী। ধর্ষণের শিকার, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে শিশুটি।

সে সময় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য নাজমুস সাকিবের মামা আবু দায়ান ও বাবা জলিলুল আজম মেয়েটির পরিবারকে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু শিশুটির বাবা টাকা না নিয়ে বিচার চান। নাজমুস সাকিবের প্রভাবশালী বাবা ও মামার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সবুজবাগ থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। মামলার পর কিছুদিন আত্মগোপনে থাকেন নাজমুস সাকিব। তিনি এখন দেশ ছেড়ে থিতু হয়েছেন আমেরিকায়। সেখানে বসে কথিত নাগরিক টিভিতে বিভিন্ন মিথ্যা ও গুজব ছড়ানোর কাজ করছেন। নিজেকে পরিচয় দেন নাগরিক টিভির বার্তা সম্পাদক।

সবুজবাগ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- শিশুটির পরিবার যে বাড়িতে থাকতো এখন আর সে বাড়িতে নেই। ধর্ষণের ঘটনার বছর তিনেক পরে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যায় পরিবারটি। কারণ ধর্ষণের অপবাদ সইতে পারছিল না নিরপরাধ পরিবারটি।

স্থানীয় বাসিন্দা মোবাশ্বের হোসেন জানান- শিশুটির পরিবার লোকলজ্জার কারণে শেষ পর্যন্ত এলাকাই ছেড়ে দিল। কারণ নাজমুস সাকিবের এ ধর্ষণের ঘটনা সবাই জানে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামপুরা টিভি ভবনের পেছনের গলির আমির উদ্দিনের একটি টিনশেডের বাড়িতে থাকে পরিবারটি। দুই রুমের ঘরটিতে দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে পরিবারটি কোনমতে টিকে রয়েছে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রথমে কথা বলতে না চাইলেও পরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন ধর্ষণের শিকার শিশুটির পিতা।

পাশের রুমে বসে থাকা মেয়েটির দিকে ইশারা দেখিয়ে তিনি বলেন- ‘আমার পরিবারের সুখ কেড়ে নিয়েছে ধর্ষক নাজমুস সাকিব। আমার সুস্থ মেয়েটি সেই ঘটনার ধকল সইতে না পেরে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। ওই ঘটনার পর কোন কথা বলতে পারে না। মাসখানেক চিকিৎসার পর এখন কোন মতো বেঁচে আছে। কিন্তু শুধু ঘরের এক কোনায় বসে কান্না করে। মেয়ের এমন কষ্ট দেখে বুকটা ফাইট্টা যায়।

তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন- নাজমুস সাকিব আমার মেয়ের জীবনটা শেষ করে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত নাজমুস সাকিব নিজের খালাতো বোন কাজী রুবাইয়াকেও ধর্ষণ করেন। এরপর রুবাইয়া গর্ভবতী হয়ে পড়লে পরিবারের চাপে তাকে বিয়ে করেন নাজমুস সাকিব। এ ছাড়া নিজ দাদীসহ এলাকায় একাধিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আছে নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে। খিলগাঁও, সবুজবাগ এবং মতিঝিল থানায় রয়েছে একাধিক মামলা এবং সাধারণ ডায়েরি। নাজমুস সাকিবের বাসাবোর বাড়ির ভাড়াটিয়া কুমিল্লার দাউদকান্দির রেজাউল করিমের স্ত্রীকেও দলবেধে ধর্ষণ করেছিল নাজমুস সাকিব ও তার দল। ২০১০ইং সালের সেই ঘটনার পর এলাকা ছাড়েন ওই স্বামী-স্ত্রী। লোকলজ্জার ভয়ে সেইদিন মামলা করেনি, নীরবে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তারা। সেই রেজাউল এখন থাকেন মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকায়।

তিনি বলেন- নাজমুস সাকিব এখন নাকি আমেরিকায় গিয়ে ইউটিউবে কিশের শো করে। সে দিনের কথা এখন আর মনে করতে চাই না। তার যৌন নির্যাতনের কথা এখনো মনে হলে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালায়। আমরা সেই কষ্ট বুকে নিয়ে কোনমতে বেঁচে আছি।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com