মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
অপহৃত বোনের শোকে ভাইয়ের মৃত্যু, উদ্ধারে পুলিশি অবেহেলা নড়াইলে বিএনপি নেতার ওপর হামলায় ৫ জন গ্রেপ্তার পীরগঞ্জে কুঠারের কোপে শিশু নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬ ফুলবাড়ী সীমান্তে অভিযান চালিয়ে যৌন উত্তেজক সিরাপ উদ্ধার মিরসরাইয়ে সিডিএসপির বাঁধ ভাঙন রোধে জামায়াতের আল্টিমেটাম জলাবদ্ধতা নিরসনে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় নীলফামারীতে যুবদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে মেঘনা নদীতে জাটকা নিধন! ধুনট উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে প্রকল্প বিষয়ক সভা ফ্যাসিস্ট সরকার যা করেছে, আমরা তা করতে চাই না- তারেক রহমান পাবনায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাউল বিক্রির অভিযোগে কৃষকদল নেতা বহিষ্কার পীরগঞ্জে ২ জন পকেটমার গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলন রংপুরে ইসলামী ছাত্র-শিবির মতবিনিময় পুঠিয়ার শিলমাড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশু নিহত তারাগঞ্জে গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা আহত ৫ নড়াইলে শ্রীশ্রী বাবা বুড়ো ঠাকুরের ঐতিহ্যবাহী মেলা পীরগঞ্জে রাষ্ট্র সংস্কারে তারেক জিয়ার ৩১ দফা’র লিফলেট বিতরণ মিরসরাইয়ে মারধরের অভিযোগে প্রতিবেশী শিক্ষা ক্যাডারের বিরুদ্ধে আ’লীগ ফ্যাসিবাদ এখনও গণতন্ত্র নৎসাত করতে চায়

ধর্ষিতার আত্মহত্যা ইউপি চেয়ারম্যানের চাপে আইনের আশ্রয় ছাড়াই তড়িঘড়ি দাফনের অভিযোগ

শাহীন আহমেদ- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর জলঢাকার গোলনা এলাকায় ধর্ষনের শিকারের এক স্কুল ছাত্রী বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই মেয়েটির পরিবারকে আইনের আশ্রয়ে বাধা দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী রাতা-রাতি লাশ দাফন করতে বাধ্য করেও বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

বিলম্বপ্রাপ্ত খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গোলনা ইউনিয়নের কালিগঞ্জ পাবনা পাড়া এলাকার আমিনুর রহমান আমিনের মেয়ে আখি মনি। ওই পরিবারের তিন মেয়ের মধ্যে আখি মনি দ্বিতীয় এবং ওই এলাকার শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। চাকরি সূত্রে নিহত মেয়েটির বাবা-মা উভয়েই ঢাকায় থাকে এবং মেয়েটি বাড়ীতে দাদা জুরান আলীর পরিবারে থাকতো।

স্থানীয় সূত্রমতে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ৬ জানুয়ারী রাতে বাড়ী থেকে মেয়েটি নিখোঁজ হয়। মেয়েটির দাদা তাকে অনেক খোজাখুজির পরও সন্ধান পায়নি। ভোটের দিন (৭ জানুয়ারী) ভোরে গোলনা এলাকার মাষ্টার পাড়ার ছাইফোন সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞান অবস্থায় অর্ধ-উলঙ্গভাবে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গেলে মেয়েটিকে প্রথম দেখতে পাওয়া ওই এলাকার আতিয়ার রহমান(৭০) বলেন, ‘ছাইফোনের পাড়ের দোকানটি আমার। রাতে আমি দোকানেই ঘুমাই। ভোটের দিন ভোরে আমার দোকানে পাশে টিউবওয়েল পাড়ে একটা শব্দ হয়। তখন ঘুম থেকে উঠে দোকানের বাইরে বের হয়ে দেখি প্রায় অর্ধ-উলঙ্গ অবস্থায় মেয়েটি অজ্ঞান অবস্থায় টিউবওয়েলের পাড়ে পড়ে আছে। আমি সাথে সাথে দৌড়ে গিয়ে মেয়েটির মুখে পানি দিয়ে মেয়েটির পরিচয় জিজ্ঞেস করি এবং এই সময়ে এখানে আসার কারণ জিজ্ঞেস করি।

তখন ওই মেয়ে বলে গতকাল রাত ১১টায় তার বাড়ী থেকে জোর করে এক যুবক তাকে তুলে নিয়ে আসে এবং নির্জন যায়গায় নিয়ে তাকে ধর্ষন ও নির্যাতন করে পালিয়ে যায়।

মেয়েটির কাছে তার পরিচয় ও ঠিকানা নিয়ে তার দাদা জুরান আলীকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে এসে অসুস্থ্য অবস্থায় মেয়েটিকে তিনি (দাদা) নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মেয়েটির দাদা জুরান আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আখি মনি অসুস্থ্য ছিল। আমি তাকে ওইখান থেকে নিয়ে এসে ওইদিনই তার নানার বাড়ী ডিমলা উপজেলার ঠাকুরগঞ্জে পাঠিয়ে দেই। পরে ওইখানে কি হয়েছে আমি আর জানি না।

পরে ভিন্ন একটি সূত্র ধরে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়,‘ভোটের পরের দিন ৮জানুয়ারী দুপুর ২টা ২৭ মিনিটে মেয়েটিকে কিটনাশক পান করেছে বলে ভর্তি করানো হয় ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন ৯ জানুয়ারী সন্ধ্যায় মেয়েটি মারা গেলে তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে তার নানা নিয়ে এসে দাদা জুরান আলীর কাছে দেয়। কিন্তু কিটনাশক পান করে মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশ কেস হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর বিষয়টি সংস্লিষ্ট থানায় জানায়নি।’

ঘটনার বিষয়ে মেয়েটির নানার সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে আবারও এই বিষয়ে কথা হয় মেয়েটির দাদা জুরান আলীর সাথে। তিনি বলেন,‘আখি মনির নানা আমাকে বলে আখি মনি হাসপাতালে মারা গেছে। তিনি (নানা) হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে এসে আমাকে দেয়। আমি গোলনা ইউপি চেয়ারম্যান জায়েদ আলীর সাথে পরামর্শ করলে তিনি বলেন পুলিশের ঝামেলায় না জড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব মাটি দিয়ে দাও। আমরাও বাধ্য হয়ে তাই করি।

হাসপাতালে মারা যাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাঃ মো. রাশেদুজ্জামানের বলেন,‘মেয়েটি আমাদের হাসপাতালে মারা যায় নি। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেফার্ড করেছিলাম।

জানতে চাইলে মেয়েটি বাবা আমিনুর রহমান বলেন,‘ভোটের দুইদিন আগে আমি বাড়ী থেকে ঢাকা যাই। এত কিছু হয়েছে আমি কিছু জানি না। যেদিন মারা গেছে সেদিন আমার বাবা জুরান আলী আমাকে জানায়। আমি সেটি শুনে সাথে সাথে বাড়ীতে চলে আসি। আমার এখন মনমানসিকতা ঠিক নাই। কি করবো না করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।’

তবে ঘটনার বিষয়ে বিভিন্ন চেষ্টা করেও ধর্ষনকারী ব্যক্তি যুবককে কেউ চিহিৃত করতে পারেনি। তবে প্রভাবশালীরাই একমাত্র জানে ঘটনার নায়ককে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান,‘কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারের যোগসাজসে বিষয়টি আপোষ করানো হয়। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মাহত।’

এ ঘটনায় শোকের মাতম বইছে এলাকায়। দোষী যুবককে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান মৃত আখির বড় বোন আমিনা আক্তার। তিনি বলেন, আমরা জানিনা কোন ছেলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। শুধু জানি তাকে প্রভাবশালীরা চেনে। সে নাকী এলাকার ছেলে। আমরা এর বিচার চাই।

তবে এই বিষয়ে গোলনা ইউপি চেয়ারম্যান জায়েদ আলীর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, বিষয়ে আমি বিন্দুমাত্র কিছুই জানিনা। হয়তো ঘটনাটি বিপক্ষ লোকজন আমার উপর চাপানোর অপচেস্টা করছে।

জানতে চাইলে জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুক্তারুল আলম বলেন, ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যু হলে ডিমলা থানায় ইউডি মামলা হতে পারতো। তবে এ বিষয়ে জলঢাকা থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com