শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন
নাসির উদ্দীন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমারে আমের গাছে গাছে থোকায় থোকায় মুকুলে ভরে গেছে প্রতিটি আম গাছ। পাশাপাশি গাছে গাছে মুকুলের ব্যাপক সমারোহ যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই আমগাছ গুলো মুকুলে ভরপুর।
ছোটবড় সকলেরই দৃষ্টি এখন লালচে ও সোনালী আমের মুকুলের দিকে। মৌ-মৌ কাঁচা আমের গন্ধে সুবাসিত চারপাশ। মৌমাছিসহ নানা পতঙ্গ মানুষকেও বিমোহিত করছে সেই সুবাস। সকলেই আশা করছে গত বছরের তুলনায় এবারে দ্বিগুন মুকুল হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে আম বাগানের মালিকেরা।
সেজন্য প্রয়োজনীয় পরিচর্যার পাশাপাশি নানা প্রস্তুতিও চলছে সব এলাকায়। কৃষি বিভাগ তাদের সলা পরামর্শ এবং সার্বিক সহযোগীতা প্রদানে বাগান মালিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাড়া মহল্লার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- আমের মুকুল ধরে রাখার পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন আম চাষিরা। গাছে গাছে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াও মুকুল ধরে রাখতে সময়মত পানি ও পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
গতবারের তুলনায় এবারে অনেক বেশি আমের মুকুল ধরেছে প্রতিটি গাছে গাছে- বর্তমান আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকার কারনে বাম্পার ফলনের আশা করছেন সকলেই। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা ঝড়ের কবলে না পড়লে ইনশাআল্লাহ এ আশা পূরণ হবে সবার।
উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের খাটুরিয়া গ্রামের রেজোয়ান নুর এবং কামরুল ইসলাম জানায়- আমার বাগানে প্রায় বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উন্নত জাতের সুস্বাদু আম রয়েছে তার বাগানে, পাশাপাশি তিনি ভিন্ন জাতেরও পরীক্ষামূলক চাষ করছেন। তার মধ্যে ল্যাংড়া, মিস্রি ভোগ, গোপাল ভোগ, সূর্যপুরি, ফজলি আমসহ আরো একাধিক আম গাছ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন- এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে আছে, যদি কোন রকম প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে না পড়ে তাহলে আমি আশাবাদী এবারে আমের বাম্পার ফলন পাবো।
উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নে আম বাগান মালিক ফিরোজ আল-মামুন বলেন- গতবছরের তুলনায় এবারে আম গাছে অতুলনীয় মুকুল ধরেছ, আমি আশাবাদী গতবারের তুলনায় এবারে তিনগুণ বেশি ফলন কামনা করছি এবং কোন রকম প্রাকৃতিক দূর্যোগের সমস্যা দেখা না দিলে মোটামুটি ভালোই লাভবানের আশাবাদী বলে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পাশাপাশি কৃষি বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি। আমার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ৩/৪ শত আমগাছ রয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার অনেকেই জানিয়েছেন মুকুল থেকে আমের গুটি হয়ে ফলন পর্যন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন হবে এবারের আমের ফলন এমনটিই আশা করছেন এ এলাকার কৃষক। শুধু তাই নয় আশান্বিত বাম্পার ফলন পেলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা আমাদের এই অঞ্চলে আম সংরক্ষণের জন্য একটি সরকারী কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনিসুজ্জামান বলেন- গাছে গাছে যেভাবে মুকুল দেখা যাচ্ছে আবহাওয়ার পরিবর্তন না ঘটলে এবারে এ উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। আমরা কৃষকদের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন- এ সংক্রান্ত দিক নির্দেশনা মূলক পরামর্শ প্রদান সহ সকলকে আমের ভালো ফলন পেতে করনীয় সম্পর্কে সচেতন করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এতে যাদের বাড়িতে দুই একটি আম গাছ রয়েছে তারাও উপকৃত হবেন।