রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
আবীর আকাশ- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর-সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের সেলিনা ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছেন।
তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিওতে বলেছেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন’। কিন্ত নৌকার কর্মীরা আমার লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আমার এজেন্ট হলেই ৭ জানুয়ারির পর দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমার এজেন্ট হলে ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি কর্মীদেরকে বলেছি, কারো ঘর জ্বালিয়ে দিলে, আমি ঘর করে দেবো।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলাম এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী। পাপুল মানব ও অর্থ পাচারের মামলায় দণ্ডিত হয়ে কুয়েতের কারাগারে বন্দী আছেন। পাপুলের স্ত্রী সেলিনা এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
সন্ধ্যায় সেলিনা ইসলাম লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন। এর আগে তিনি একইদিন দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে রায়পুর পৌরসভা লেংড়া বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। সেখানে দুর্বৃত্তরা তার লোকজনের ওপর হামলা করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এসময় এক কর্মীকে মারধর করে আহত করা হয়েছে বলে দাবি করেন সেলিনা। তবে তার নাম-পরিচয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানাননি তিনি।
সেলিনা ইসলাম বলেন, আমার স্বামী কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মেঘনা নদীর টুনুর চরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছেন। পাপুল ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি যখন এমপি ছিলেন তখন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী) নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভাই আদনান চৌধুরীকে ব্যক্তিগত সহকারী রাখা হয়েছিল। আদনান তখন পাপুলের স্বাক্ষর নকল করে ধরা পড়লে তাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। কোন দিক থেকে ষড়যন্ত্রগুলো হয়েছে- তা সবাই জানে। আমরা বিদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা দেশে এনেছি। সেই টাকার কর দিয়েই আমি সিআইপি হয়েছি। নির্বাচনকালীন সেসব বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সেলিনা বলেন, আমি শতভাগ আশাবাদি এ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সুন্দর হবে। প্রতিবন্ধকতা আমার কাছে কখনো মনে হয়। এটা আমি অনুভব করি না। আমার অনুভূতিতেও আসে না। মনোনয়নপত্রে মামলার ঘরে টিক চিহ্ন না দেওয়ায় আমার প্রার্থীতা বাতিল হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের আপিল করে তা ফিরে পায়নি। পরে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পাই। এসব করতে গিয়ে আমার ২৫ দিন সময় নষ্ট হয়েছে। এতে নির্বাচনী এলাকায় আসতে আমার সময় লেগেছে।
কিন্তু আমার লোকজন এরআগ থেকেই কাজকর্ম শুরু করেছে। এরমধ্যেই নৌকার কর্মীরা আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে। প্রচারণার মাইক-গাড়ি ভাঙচুর করেছে। লোকজনকে ধরে এনে নৌকার প্রার্থীর কার্যালয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়েছে। মাইক্রো দিয়ে গিয়ে ১০-১৫ জন লোক আমার কর্মীদের হুমকি দিয়ে আসছে। দলের প্লাটফর্মে থেকে নির্বাচন আর স্বতন্ত্রে নির্বাচন ভিন্ন বিষয়। আপনি যদি শক্তিকে অপব্যবহার করেন, এটিকে আমি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছি, অন্য কিছু না।