রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ অপরাহ্ন
নুর হোসেন- চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কয়েক মাস পরেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলো ধীরে ধীরে সাংগঠনিক কর্মসূচির মধ্যদিয়ে তৈরি হচ্ছে নির্বাচনের জন্য। চট্টগ্রামের রাজনীতিতেও বইছে একই হাওয়া। এতদিন আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও এবার বিএনপি-জামায়াতও রাজনীতির মাঠে নামছে। এরমধ্যে নগরীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে ইসলামী সংগঠন ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ নেমে পড়েছে রাজনীতির হিসাব-নিকাশে।
চট্টগ্রাম নগরীর রাজনীতিতে ধীরে ধীরে উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। এরমধ্যে কয়েকটি ঘটনায় তা আঁচ করতে পারছে নগরবাসী। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে শিবিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের খবরে চকবাজার ও কলেজ ক্যাস্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।এর আগে চট্টগ্রামের ১০ আসনের উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রকাশ্যে হামলা চালায় দীর্ঘদিন ঘুমিয়ে থাকা বিএনপি।
বুধবারের (১৯ জুলাই) সেই হামলার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে বিএনপি নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ঝেরে কথা বলতেও শোনা গেছে।বুধবারের ওই ঘটনায় বিএনপির বিরুদ্ধে তেমন কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেখা যায়নি ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের। তবে ঘটনার ঘণ্টা দেড়েক পর তারা গিয়ে বিএনপির কাজির দেউরির কার্যালয় নসিমন ভবনে হামলা ও রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে গত ১৪ই জুনও জামালখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও বিভিন্ন ছবি ভাঙচুর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রামে এতদিন ধরে কোণঘেষাঁ ছিল বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী সব প্রতিপক্ষ। তবে নির্বাচন ঘিরে ধীরে ধীরে সামনে আসতে শুরু করেছে এতদিন ঝিমিয়ে থাকা এসব সংগঠন। ইতোমধ্যে বিএনপির হামলার শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ।
এক দফা মুখোমুখি হলেও আগামীতে রাজনীতির মাঠে তাদের আরও উত্তাপ বাড়বে বিরোধী প্রতিপক্ষদের সঙ্গে।আন্দোলন আরও তীব্র করবে বিএনপিযতদিন নিরেপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না, ততদিন নির্বাচনে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় দলটি। এজন্য আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করা হবে দলটির পক্ষ থেকে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।
এই বিষয়ে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। আমাদের রাজপথ থেকে কেউ সরাতে পারবে না।’বিএনপির কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এই ঘটনায় এখনও পুলিশ কোনো মামলা নিচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা না নিলে আমরা আদালতে মামলা করবো।
ঘুম ভেঙেছে জামায়াতের বিএনপির পাশাপাশি ‘কুম্ভকর্ণের ঘুম’ থেকে জেগেছেন জামায়াতের নেতারা। দীর্ঘ সময় বিরতির পর ফের রাজনীতির মাঠে ফিরতে চায় দলটি। এজন্য নগরীর লালদীঘিতে সমাবেশ করতে ইতোমধ্যে দু’দফা পুলিশ কমিশনার বরাবর অনুমতিপত্র নিয়ে গেলেও পুলিশের সায় মিলেনি একবারও।আওয়ামী লীগের থেকে ভালো কেউ জানে না।
তবে নগরীর রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধে সার্বক্ষণিক মাঠে আছে পুলিশ। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশের উপস্থিতির সংখ্যা। সাদা পোশাকে পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা দলও কাজ করছে, এমনটা জানান নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার নোবেল চাকমা।
নোবেল চাকমা বলেন, ‘বুধবার (১৯ জুলাই) যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা অনাকাঙ্ক্ষিত। তবে ভবিষ্যতে তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য মাঠে কাজ করছি আমরা। সাদা পোশাকের পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে।