শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
সৌদি দূতাবাসের আয়োজনে রংপুরে হিফযুল হাদীস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ব্যাটারী চালিত ভ্যানে মাদক পরিবহন কালে আটক ১ পিকআপে মাদক পরিবহনকালে গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাবের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সংবাদিকের পিতার মৃত্যুতে ফুলবাড়ী থানা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের শোক ধুনটে জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা রংপুর ক্যাডেট কলেজের আন্তঃহাউজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু সম্প্রীতির দেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রংপুরে ইসলামী আন্দেলনের গণ সমাবেশ কিশোরগঞ্জে বিলুপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্বপদে বহালের দাবি ঠাকুরগাঁওয়ে নানা আয়োজনে প্রাক-বড়দিন উদযাপন নবম বারের মতো শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক হলেন প্রফেসর আজাদ ফুলবাড়ীতে মাদক কারবারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সোনালী সকাল ও সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাবের প্রীতি ম্যাচ সম্পন্ন থানচিতে মহান বিজয় দিবস পালন জলঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবস পালন বিজয় দিবসে রাজশাহী জেলা পরিষদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন বিজয় দিবস উপলক্ষে রংপুর মহানগর জামায়াতের আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে ইউএনও অপসারণের দাবীতে বৈষম্যের মানববন্ধন নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজাসহ দুইজন গ্রেফতার

নড়াইলে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈত্রিক বাড়ি

উজ্জ্বল রায়- নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
নড়াইলে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈত্রিক বাড়ি। ১৯১১ সালের ৬ জুন পিতা সত্যরঞ্জন গুপ্তের কর্মস্থল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, জন্মস্থান কলকাতায় হলেও তাঁর পৈত্রিক বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ার উপজেলার ইত্না গ্রামে।

ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্ত চাকরিজীবি পিতার বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকালেই বাংলাদেশের গাইবান্ধা হাইস্কুলসহ বেশ কয়েকটি স্কুলে তিনি পড়াশুনা করেন। অবশেষে ১৯৩০ সালে তিনি কোন্ন নগর হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণনগর কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই তিনি আইএসসি পাস করে ডাক্তারি পড়ার জন্যে কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে (আর. জি. কর মেডিকেল কলেজ) ভর্তি হন।

ডাক্তারি পাস করে বেশ কিছুদিন নিজস্বভাবে প্রাকটিস করেন। অতঃপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সামরিক বাহিনীর ডাক্তার হিসেবে তিনি যুদ্ধেযোগ দেন। চাকরি জীবনের বাধ্যবাধকতা তাঁর কাছে বিরক্তিকর মনে হওয়ায় তিনি এ চাকরি ত্যাগ করে কলকাতায় ব্যক্তিগতভাবে আবার ডাক্তারি শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কলকাতায় বিশেষ পরিচিত হয়ে ওঠেন।

নীহাররঞ্জন গুপ্তের বয়স যখন ১৬ বছর তখন তাঁর প্রথম লেখা উপন্যাস ‘রাজকুমারী’ প্রকাশিত হয়। ডাক্তার নীহাররঞ্জন গুপ্ত পেশায় চিকিৎসক হলেও মানব মানবীর হৃদয়ের ঘাত-প্রতিঘাত ও মানবিক দ্বন্দ্বের একজন অন্যতম রূপকার। রহস্য উপন্যাস লেখায় তিনি সিদ্ধহস্ত। কেবলমাত্র রহস্য উপন্যাস নয়, তাঁর সামাজিক উপন্যাসগুলো সুখপাঠ্য যা পাঠককূলের হৃদয় আকৃষ্ট করে। বাংলা সাহিত্যে তিনি উপন্যাসকে অনান্যমাত্রায় নিয়ে গেছেন।

তাঁর লিখিত উপন্যাসের সংখ্যা দুইশতেরও অধিক। তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘মঙ্গলসূত্র’, ‘উর্বশী সন্ধ্যা’, ‘উল্কা’, ‘বহ্নিশিখা’, ‘অজ্ঞাতবাস’, ‘অমৃত পাত্রখানি’, ‘ইস্কাবনের টেক্কা’, ‘অশান্ত ঘূর্ণি’, ‘মধুমতি থেকে ভাগীরতী’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘অহল্যাঘুম’, ‘ঝড়’, ‘সেই মরু প্রান্তে’, ‘অপারেশন’ প্রভৃতি। নীহার রঞ্জনের চল্লিশের অধিক উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘উল্কা’, ‘বহ্নিশিখা’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’, ‘লালুভুলু’ প্রভৃতি।

তাঁর কালজয়ী উপন্যাস ‘লালুভুলু’ পাঁচটি ভাষায় চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৮৩ সালে উপন্যাসটি বাংলাদেশেও চিত্রায়িত হয় এবং দর্শককুলের প্রশংসা অর্জন করে। নীহার রঞ্জনের অনেক উপন্যাস থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছে।

চিকিৎসক হিসেবে অতি কর্মচঞ্চল জীবনযাপনের মধ্যেও নীহার রঞ্জন গুপ্ত রেখে গেছেন অসংখ্য সাহিত্যধর্মী সৃষ্টি যা আপন সত্ত্বায় ভাস্কর হয়ে থাকবে। নীহার রঞ্জন গুপ্ত ১৯৮৬ সালের ২০ জানুয়ারী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

এ গুণী মানুষটির ইতনা গ্রামের পৈত্রিক শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু এখনই রক্ষা করা না হলে অচিরেই কালের গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহন করলেও তাঁরা আমাদের কবি। তাঁদের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য ভাবে পালিত হয়। অথচ এ গুণী ঔপন্যাসিক আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসে এতটা সমুজ্জল থেকেও আমরা তাকে ভুলতে বসেছি।

আমাদের প্রজন্ম জানেই না নীহার রঞ্জন গুপ্ত কে, তিনি কি ছিলেন এবং নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রাম তাঁর পৈত্রিক নিবাস। তাই অবিলম্বে তাঁর পৈত্রিক বাড়িটি রক্ষা করে তাঁর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারিভাবে পালন করা হোক। ঔপন্যাসিক ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্ত জেলার গুণী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর পৈত্রিক বাড়িটি সম্প্রতি সরকার কর্তৃক সামান্য সংস্কার করা হয়েছে। এটিকে জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবি রাখে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com