মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন
খলিলুর রহমান- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
বিদ্যালয় বন্ধ তাই বাবার সঙ্গে ভুট্টা লাগাতে গিয়েছিল রিপন মিয়া (১৫)। সেখানে একটি বোতল সাদৃশ্য বস্তু কুড়িয়ে পায়। মূল্যবান ভেবে তা বাড়িতে নিয়ে আসে। মা, বাবা, ভাইসহ প্লায়ার্স, রেঞ্জ দিয়ে তা খুলতে ব্যর্থ হলে দা দিয়ে কোপ মারেন। এতে সেই বস্তুটি বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়ে চারজনই গুরুতর আহত হন।
আজ শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের জিগাবাড়িচর এলাকায়। আহতদের সন্ধ্যা ৭টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুর্ঘটনার শিকার আব্দুল হাকিম বলেন, ‘ভুট্টা খেতোত কাজ করতে গিয়ে ছেলেটা বোতলের মতোন শ্যামলা রঙের একটা জিনিস পেয়েছে। তার ভেতর কী আছে সেটা দেখার জন্য বাড়িতে নিয়ে খোলার চেষ্টা করছিল বিভিন্নভাবে চেষ্টা করার পর খুলতে না পেরে একপর্যা দা দিয়ে সেটাতে কোপ মারে আর তখনই বোতলটা বিকট শব্দ করে বিস্ফোরণ হয় শব্দের পর আমরা আর কিছু বলতে পারি না জ্ঞান ফিরলে দেখি সুন্দরগঞ্জ হাসপাতালে এলাকার লোকজন নিয়ে আসছে দুই ছেলের চোখে আঘাত পেয়েছে আমার বউয়ের অবস্থাও ভালো না তাই সুন্দরগঞ্জ থেকে রংপুর মেডিকেল পাঠিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের উলিপুর ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সীমান্ত এলাকা সাতা নষ্কর তিস্তার চরে ভুট্টা লাগাতে যান সুন্দরগঞ্জের বেলকা ইউনিয়নের জিগাবাড়িচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম ও তাঁর দুই ছেলে ফারুক হোসেন(১৮) ও রিপন হোসেন(১৫)। সেখানে রিপন হোসেন বোতল সাদৃশ্য একটি বস্তু কুড়িয়ে পান। সেটি মূল্যবান ভেবে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
এরপর ভেতরে কী আছে তা দেখতে মা, বাবা, ভাইসহ খোলার চেষ্টা করেন। পরে দা দিয়ে সেটিকে কোপ দিলে তা বিস্ফোরণ হয়ে রিপন হোসেন, তাঁর বাবা আব্দুল হাকিম, মা পারভিনা বেগম ও বড় ভাই ফারুক হোসেন গুরুতর আহত হন। বিকট শব্দে প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
রমেক হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে আসা বেলকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান বলেন, পাশাপাশি বাড়ি। বিকট শব্দ শুনে আব্দুল হাকিমের বাড়িতে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত শরীরে পড়ে আছে সবাই। তাদের উদ্ধার করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে সুন্দরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে নিয়ে আসি।
আব্দুল হাকিমের ছেলে বোতল সাদৃশ্য বস্তুটি মূল্যবান ভেবে তিস্তার থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন সেই বোতল কাটতে গিয়ে বিস্ফোরণের শিকার হন তারা ।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে বড় ছেলে ফারুকের ডান পাসহ বাঁহাতের কবজি ও ছোট ছেলে রিপনের ডান চোখ এবং বুকে জখম হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনার দুটি স্থানে পুলিশ পরিদর্শন করা হয়েছে। কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুটি গুপ্তধন ভেবেছিলেন আহত ব্যক্তিরা। কাচের বোতলটি দা দিয়ে কাটার সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
তবে বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যটি সম্প্রতি ভারতের সিকিমে ভয়াবহ বন্যায় ভেসে আসে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।