শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ অপরাহ্ন
মাহাবুব আলম- ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি.
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি সরবরাহের দরপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে,অনিয়ম,গড়িমসি ও কালক্ষেপণের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বুধবার (৬ নভেম্বর) উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি মানববন্ধন করেছে ঠিকাদার। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসের ১৮ তারিখে রোগীর পণ্য সরবরাহ,ষ্টেশনারী সরবরাহ ও লিলেন ধোলাই কাজের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। দরপত্র সিডিউল অংগ্রহের শেষ তারিখ ছিল ১ সেপ্টেম্বর, সিডিউল ড্রপের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর। সেদিনেই ১৪ জন ঠিকাদারের কাগজপত্র বাছাই করা হয়। এতে কয়েক জনের কাগজপত্রে ত্রুটি পাওয়া যায়। পরে, ৮ সেপ্টেম্বর বাছাই মূলায়নের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
ঘোষনার দিন সকল ঠিকাদার হাসপাতালে উপস্থিত হলেও অজ্ঞাত কারণ দেখিয়ে সেদিন কোন মূল্যায়ন করা হয়নি বলে জানান ঠিকাদাররা। মূল্যায়ন না দেখিয়েই দরপত্রের ফাইল ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন এর কার্য্যালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ফাইলটি সিভিল সার্জনের কায্যালয়ে ১৫ দিন থাকার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের অফিসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে কয়েকদিন পর ফাইলটি পূর্ণ মূল্যায়নের জন্য রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং বলা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের টিএইচএ,আরএমও, দু’জন মেডিকেল অফিসার, ইউএনও’র প্রতিনিধি ও সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ মোট ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি আবারও মূল্যায়ন করে যেন পাঠানো হয় । কিন্তু এই কমিটি পুনরায় মূল্যায়নের কোন মিটিং করেনি, মিটিং ছাড়াই ফাইল পাঠানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে ঠিকাদাররা জানান।
প্রায় দুই মাস আগে রোগীদের মধ্যে খাদ্য ও ষ্টেশনারীর মালপত্র সরবরাহ এবং লিলেন ধোলাই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হলেও এখনো তিনটি কাজের স্ব-স্ব ঠিকাদারদের কাগজ বুঝিয়ে না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে ব্যপক অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
এ ব্যপারে ওই দরপত্রের ৮ জন ঠিকাদার ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন নুর নেওয়াজ ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলছেন ঠিকাদাররা।
এ নিয়ে ঠিকাদার মাসুদ রানা গত ২৪ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রংপুর বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়েছে,আওয়ামী লীগ নেতা হেদায়তুল্লাহ মেম্বার ও তাঁর জামাই আব্দুল মান্নান একটানা গত ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন নামে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহের ঠিকাদারির কাজ পেয়ে আসছেন বা এটি ধরে রেখেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আবারও ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টায় এ দরপত্রকে ঝামেলা দেখিয়ে সমাধান দিচ্ছেন না বলে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন নুর নেওয়াজ ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুস সামাদকে দায়ী করছেন মাসুদ রানাসহ ৮ জন ঠিকাদার।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের আরএমও ডা. ফিরোজ আলম জানান, এ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি না। আমার উদ্ধাতন কর্মকর্তারা ভালো জানেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ চৌধুরীর সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ নিয়ে ইউএনও রকিবুল হাসান জানান, ঠিকাদাররা আমাকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।