শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ইউএনও আরিফুর রহমানকে হেনস্তা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাহউদ্দিন টিপু’র বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় লক্ষ্মীপুরের মেয়র এমএ তাহেরের ছেলে একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু তিন বারের উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। তিনি কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলা রাজস্ব খাত থেকে নেয়া উন্নয়ন প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, কাবিটা থেকে নেয়া প্রকল্পসহ উপজেলায় অনিয়ম লুটপাট করতেন বলে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিল নিতেননবলে জানা যায়।
তাছাড়া সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোশারফ হোসেন দীর্ঘ সাত বছর একই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করায় তার সাথে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর আলাদা সখ্যতা তৈরি হয়। ইউএনও আরিফুর রহমান যোগদান করার পর এসব লুটপাট বন্ধ করে দেন। টিআর, কাবিখাসহ সকল কাজ বাস্তবায়ন না করে তিনি কখনো বিল পরিশোধ করতেন না। তখন উপজেলা নির্বাচন সামনে থাকায় টিপুর লুটপাট বন্ধ করে দিলেও ইউএনওকে কিছু বলেননি।
পরবর্তীতে সে চলতি বছরের (২৯ মে) তৃতীয়বারের মত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং চলতি বছরের জুনেরর ৪ তারিখ থেকে ইউএনওর উপর চড়াও হন। তিনি ইউএনওকে বলেন-‘আমি আর আগের উপজেলা চেয়ারম্যান নেই, এতদিন নির্বাচন সামনে থাকায় আপনাকে কিছু বলিনি। এখন আমি যা বলব তাই হবে। তারপর তিনি ইউএনওকে নির্দেশ দেন প্রকল্প নিতে এবং আরও জানান প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে না, কিন্তু বিল দিয়ে দিতে হবে।’ ইউএনও তাতে রাজি হয়নি। তিনি ইউএনওর উপর চাপ তৈরি করতে থাকেন। তখন ইউএনও তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেন।
কোনভাবেই ইউএনওকে ভাগে আনতে না পেরে সে তখন ষড়যন্ত্র করতে থাকে। একপর্যায়ে সে পুণরায় নির্বাচিত হওয়ার কথা বলে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের একবেলা ভাত খাওয়ানোর কথা বলে টিপু তার দলীয় কর্মী দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের জড়ো করান। পরবর্তীতে এ দাওয়াতকেই ভিন্ন নাম দিয়ে তিনি ইউএনও র বিরুদ্ধে নিউজ করান।
গত ৪আগস্ট সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে টিপুর গুলিতে চারজন ছাত্র নিহত হয়। পরে উত্তেজিত জনতা টিপুর বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। সে এখন পলাতক রয়েছে। ইতি মধ্যে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা হয়েছে।
এবিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু সম্প্রতি সরকার পতনের আগে অফিসে এসে আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেয়। তিনি প্রকল্প দিবেন। কিন্তু কাজ কি হলো না হলো সেটা যেন আমি না দেখি। সে আরও বলেন আমি এখন আর আগের টিপু নাই। নির্বাচন করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এ টাকা তুলতে হবে। আমি এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে নানাভাবে হেনস্থা ও মিথ্যা অভিযোগে জর্জরিত করেছিলেন চেয়ারম্যান টিপু।