শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক, অস্ত্রধারী অপরাধী, পর্নোগ্রাফি, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারী, মাদকসেবী, অপহরণ ও ধর্ষণসহ মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য (১৪ ডিসেম্বর)-২০২৩ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৯ঃ০০ ঘটিকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার চর বাগডাঙ্গা ইউনিয়নে র্যাব-৫, রাজশাহীর সিপিসি-১ কোম্পানী অপারেশন পরিচালনা করেন। অপারেশন চলাকালীন সময় যথাক্রমে, (ক) হেরোইন-১০ কেজি, (খ) মোবাইল ফোন- ২টি, (গ) সীমকার্ড- ২টি উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
অভিযানে গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন- ১/ মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়া(৫০), পিতাঃ মৃতঃ নসিমুদ্দিন, ২/ মোঃ মোমিনুল ইসলাম পিতাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়া উভয়ের সাং- জাইরা মোরল, থানা- চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ- দীর্ঘদিন যাবৎ র্যাবের নিকট গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে একটি চক্র মাদকের একটি বড় চালান পাচার করার পরিকল্পনা করছিল। এরই ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তর ইন্টেলিজেন্স উইং এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় র্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৫, সিপিসি-১’র গোয়েন্দা দল জানতে পারে (১৪ ডিসেম্বর)-২৩ইং তারিখ হেরোইন এর একটি বড় চালান পাচার করবে মোঃ রুস্তম আলী নামের একজন ব্যক্তি। পরবর্তীতে মোঃ রুস্তম আলীকে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারীতে রাখা হয়। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় তিনি গত রাতে পদ্মা নদীর সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল। সে গত রাতে কোন এক সময়ে সীমান্তের ওপার হতে বিপুল পরিমাণ হেরোইন পাচার করে মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়া নামে মাদকের মুল হোতার বাসায় হেরোইন এর চালান নিয়ে আসে।
র্যাব-৫, সিপিসি-১’র আভিযানিক দল কতৃক মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়ার বাসায় অভিযান পরিচালনার পূর্বে মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়া বুঝতে পেরে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। আভিযানিক দল কর্তৃক মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়ার বাসায় তার ছেলে মোঃ মমিনুল ইসলাম’কে হেরোইন এর চালান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে স্বীকার করে এবং বাড়ীর পিছনে ৪০০ মিটার দূরে বাঁশ বাগানের মাটির গর্তে পুতে রাখা প্লাষ্টিকের ড্রামের ভিতর থেকে নিজে উদ্ধারকৃত হেরোইনসমূহ বের করে দেয়।
পরবর্তীতে নিজস্ব গোয়েন্দা দল মুল মাদক সম্রাটকে ধরতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আভিযানিক দল কর্তৃক মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়াকে বাড়ী থেকে ২ কিলোমিটার দূরে নদীর পাড় হতে আটক করা হয়। ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, মোঃ শরিফুল ইসলাম ওরফে ধুলু মিয়া সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের সাথে জড়িত। এই চক্রটির সদস্যরা এলাকায় বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশের আড়ালে সীমান্তের ওপার হতে বিপুর পরিমাণ হেরোইন চোরাচালান করে থাকে।
এর আগেও বেশ কয়েকবার তারা এ পন্থায় বিপুল পরিমান মাদক সরবরাহ করেছে বলে স্বীকার করে। মাদকের বিরুদ্ধে র্যাবের এই রকম অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপরোক্ত ঘটনায় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর বিরতিহীন চলমান অভিযানে সিপিএসসি, র্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ কর্তৃক ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ পরিমাণ ১০ কেজি হেরোইন উদ্ধার মাদক সম্রাট ধুলু’সহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর)-২৩ইং সিপিসি র্যাব-৫, কতৃক ই-মেইল যোগে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই গণমাধ্যম কর্মীকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই র্যাবের পক্ষ থেকে অপরাধীদের কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে জানানো হয় যে, দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে ধর্ষণ, অবৈধ অস্ত্র-মাদকদ্রব্য উদ্ধার থেকে শুরু করে সকল প্রকার অরাজকতাকে রুখে দিতে র্যাব বদ্ধপরিকর। এ ছাড়াও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পাশাপাশি সর্বপ্রকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান গুলো চলমান থাকবে।