শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
হারুন-অর-রশিদ বাবু- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সবচাইতে বেশী মনোযোগ দেয়া হচ্ছে কারণ এটাই আমাদের ল্যান্ডমার্ক কেস। এটা যেন কোনভাবে বিচার ফেইল না করে সে জন্য সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে রংপুরে ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের উপর গুরুত্বসহ আইনপ্রয়োগ’ বিষয়ক একটি কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তুনি একথা বলেন।
আইজিপি বলেন, বর্তমানে আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধা ও আক্রমণের শিকার হচ্ছে পুলিশ। এসময় তিনি অনুরোধ করে বলেন, সমাজ এত বেশি আবেগতাড়িত না হয়ে পুলিশকে কাজের পরিবেশ তৈরি করে দিবেন। অপরাধী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে ও তাদের সরিয়ে দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে স্বগৌরবে ফেরানো হবে। এ ছাড়া মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। নাগরিক সমাজের প্রতি আমার অনুরোধ পুলিশকে আপনারা কাছে টেনে নিন এবং তাদেরকে কাজ করতে সহায়তা করুন।
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে যে সকল অন্যায় সংগঠিত হয়েছে সেগুলো সঠিক তদন্ত বিচারের মাধ্যমে যদি নিষ্পত্তি না করা হয় এবং মানুষ যদি ন্যায়বিচার না পায় তাহলে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। এ প্রয়াস যেন সুসম্পন্ন হয় এজন্য এখানে যারা বিচারক, সরকারি কৌসূলী, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি আছেন, আপনাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসের দরকার
জুলাই আন্দোলনে যেসকল শহীদদের পোস্টমর্টেম করা হয়নি সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রসঙ্গে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, অনেক মামলা হয়েছে যেখানে ৫ আগস্টের অব্যবহিত পরে যথাযথভাবে মামলা রুজু হয়নি। একই ঘটনায় কয়েকটি মামলা হয়েছে, আবার শহীদের ঘটনায় আমরা পোস্টমর্টেম করতে পারিনি। একটি ঘটনা আমাকে নাড়া দিয়েছে একজন বলছিল যে, জুলাই বিপ্লবের সময় শহীদদের উন্মুক্তভাবে কবর দেওয়া কঠিন ছিল। অনেক মা তার সন্তানকে ঝোপ-ঝাড়ে, জঙ্গলে কবর দিয়েছেন। তিনি তার ছেলে শহীদ হওয়ার বিষয়টিও বলতে পারেননি। কারণ বলতে গেলে তার ওপর অত্যাচার নেমে আসবে যে কেন তোমার ছেলে আন্দোলনে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে যে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল সে সরকার তার ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে মানুষের ওপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছে। তার স্মৃতি আমাদেরকে এখনও বহন করতে হচ্ছে। প্রায় এক হাজার শহীদ এবং কয়েক সহস্র আহত ছাত্র-জনতা আমাদের স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়, ৫ আগস্টের আগে ১৫ বছর আমরা কীভাবে অসহনীয় পরিস্থিতিতে কাল কাটিয়েছি।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় মিলনায়তনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণির সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন, আর্টনি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান,আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইজিপি বাহারুল আলম,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটরিয়াল অ্যাডভাইজর এ্যাড. এহসানুল হক। কর্মশালায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মোঃ মাহবুবুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মজিদ আলীসহ রংপুর বিভাগের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচারবিভাগের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।