সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪০ পূর্বাহ্ন
মোস্তফা মিয়া- পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ
অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস শপথ গ্রহণের একদিন পরেই শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্র আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
তিনি রংপুরের পীরগঞ্জের গ্রামের বাড়ি বাবনপুরে আসেন ১০ অগস্ট শনিবার। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে রওনা দিয়ে আনুমানিক সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে পীরগঞ্জে অবস্থিত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি-রংপুরে অবতরণ করেন। সেখান থেকে পীরগঞ্জের বাবনপুরে শহীদ সাঈদের বাড়িতে যান।
এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন, অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদসহ আরও অনেকে। পীরগঞ্জে এসে তাঁরা আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।
এ সময় শহীদ সাঈদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে ৮টি দাবী পেশ করেন। দাবীগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আবু সাঈদসহ সকল শহীদের হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে পূর্ণাঙ্গ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা। আবু সাঈদের স্মরণে ১৬ জুলাইকে শহীদ আবু সাঈদ দিবস ঘোষণা করা, শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে পীরগঞ্জে একটি বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক গ্রন্থাগার, স্মৃতি সংরক্ষণাগার, একটি মসজিদ, এতিমখানা নির্মাণ, আবু সাঈদের নামে তাঁর নিজস্ব এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার রাষ্ট্রীয় শহীদি মর্যাদায় ঘোষিত করা এবং অষ্টম বীরশ্রেষ্ঠ হিসেবে ঘোষণা দেয়া। বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পটভূমি মাধ্যমিক শ্রেণির পাঠ্য বইতে অর্ন্তভুক্ত করা। তরুণদের জন্য একটি স্টেডিয়াম, জাফরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আবু সাঈদের সমাধি স্থল সংলগ্ন রাস্তাটি জাফরপাড়া মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রশস্তকরণ।
এদিকে দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। এদিকে রংপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাসহ আগত সকলকে অভিনন্দন জানান এবং সাঈদ তাঁর ইউনিয়নের হওয়ায় উপদেষ্টাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। পরদিন ১৭ জুলাই পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফন করা হয়।