রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ৭৪ শতাংশ মানুষের করোনা টিকার নিবন্ধন, কার্ড প্রিন্ট এবং টিকাকেন্দ্রে যাতায়াত করার জন্য অর্থ খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)।
রবিবার ২৭শে মার্চ জেনারেল হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অধিপরামর্শ সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) অনুপ্রেরণায় সনাক এর প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
টিকা কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব না মানা, বসার অপর্যাপ্ত স্থান, দীর্ঘ সিরিয়াল এবং সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় টিকাগ্রহীতারা ভোগান্তিতেও পড়েছেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সনাক এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ খুব কম ছিল। ৮০ শতাংশ মানুষ টিকা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতেন। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা ছিল ৫১.৪৩ শতাংশ মানুষের। কোন কোম্পানির টিকা গ্রহণ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে ৩১.৪৩ শতাংশ মানুষের ধারণা ছিল। তবে করোনার টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। হরিজন সম্প্রদায়ের অর্ধেকের কম (২১%-৪০%) মানুষ টিকা গ্রহণ করেছেন।
টিকা নিবন্ধনের ১৫-৩০ দিনের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই এসএমএস পেয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে, দ্বিতীয় ডোজ টিকার ক্ষেত্রে ৪.৯৬% উত্তরদাতা ৩০ দিনের মধ্যে এসএমএস পেয়েছেন উল্লেখ করলেও ৬০ দিনের মধ্যে এসএমএস পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৭.৮৫% ছিল। টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি বলেও সনাক এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সনাক এর ওই প্রতিবেদনে টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
টিআইবি পরিচালিত কমিউনিটি মনিটরিং প্রতিবেদনে নীলফামারীতে করোনা টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে এসব চিত্র উঠে এসেছে। মনিটরিং কার্যক্রম থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন সনাক সদস্য ফারহানা ইয়াসমিন ইমু।
টিআইবি’র এরিয়া কোঅর্ডিনেটর আসাদুজ্জামান জানান- গত ১২ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে ওই মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করে টিআইবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)। এ সময় ওই কেন্দ্রের ৭৫ জন বুথ ফেরত টিকা গ্রহীতার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে টিকার ব্যাপারে জানতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ১৫ জন প্রতিনিধির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় সভায় সনাক এর সভাপতি তাহমিনুল হক ববী সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এবং জেলা প্রশাসক এর প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আজাহারুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর কবির, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আবু-আল হাজ্জাজ, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ডাঃ মোঃ মজিবুল হাসান চৌধুরী শাহিনসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।