শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
বটবৃক্ষের ছায়ার ভিতর
আবু হেনা মোস্তফা কামাল
যে জীবন বটবৃক্ষের ছায়ায় মিশে যায়
সেই জীবনের মূল্য আর কতটুকুইবা হয়?
যতবার তোমায় দেখি, বিস্ময়ের আকাশ ততটাই
বিস্তৃত হয় যেমন করে বেড়ে চলেছে মহাবিশ্বের
মহা বিস্ফোরণটি!
এক জীবনে যত কিছু দেখেছি
আর বুঝেছি বটবৃক্ষের স্নিগ্ধ ছায়ার মতো কিছু দেখিনি।
কী এক আবেশে মোহাবদ্ধ করে রাখে – কী শীত কী গ্রীষ্ম
কিংবা শরৎ হেমন্ত বর্ষা অথবা বসন্তে।
যার কিছু নাই তার হারানোর কিইবা আছে বলো?
জাগতিক সব কিছু তোমরা দখলে রাখতে পারো
কিন্তু মৃত্যুর মতন এতো সুন্দর সত্যকে কি আটকানো যায়?
প্রাণভ্রমরা যেমন কোনো রুপকথার কৌটায়
আটকিয়ে রাখা যায় না, ঠিক তেমনটাই মৃত্যুকেও যায় না।
কাগজের দলিলে যতই জীবন্মৃতের দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি
করা হোক না কেন, জীবন থাকে আপন আপন হাতে!
অনিবার্য মৃত্যুকে কেউই আটকাতে পারে না ঠিকই
কিন্তু নিয়ন্ত্রিত মৃত্যুর দিন ক্ষন মুহুর্ত ব্যক্তি মানুষই
ঠিক করার অধিকার রাখে – ঘুম ও জাগরণের মতোই!
জীবন মৃত্যুর মাঝে যে অস্তিত্বের অবস্থান তার দেবারও
কিছুই থাকে না! অস্তিত্বের সংকটে সে যে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
সেখানে অভিশাপের বর্ণমালা ধনাত্নক গল্পছবি আঁকে।
কাছের মানুষগুলো ভালো থাকুক, ভালো থাকুক তাদের ইচ্ছেগুলো,
চিন্তাগুলো পরিপূর্ণতা পাক, হোক স্বপ্নের বিস্তরণ-
এমন কামনায় ভরা থাকে সেই অভিশাপ!
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে থাকা পথিকও বটবৃক্ষের স্নিগ্ধ
ছায়ায় জিরিয়ে নেয় অভিশপ্ত জীবনের ক্লান্তি ছাড়াতে।
আমার যে জীবন মিশে গেছে বটবৃক্ষের বিক্ষিপ্ত ছায়ায়
তার বিস্ময় কিন্তু তোমাকে দেখার চেয়ে বিশালতা পায়নি!
সেই জীবনের মুল্য আর কতটুকু হতে পারে?
মৃত্যুর চেয়েও মুল্যবান সত্য আদৌ কি কিছু হতে পারে?
আমি বরং বটের তলে ছায়ার ভিতর মিশে থাকবো!