মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০৬:৫০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
তারাগঞ্জে একই ব্যক্তির ৬ গরু চুরি নড়াইলে এক গৃহবধূর তিন সন্তান জন্ম ধুনটে বসতভিটা অবৈধ দখল চেষ্টায় থানায় অভিযোগ আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেইমানী করবেন না- এটিএম আজহার ফুলবাড়ীর দৌলতপুরে জমি জমার বিরোধে মারপিট ১৭ বছর পর রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর জনসভা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা জুলাই বিপ্লবী শহীদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও আলচনা ত্রিশালে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ মিলল পুকুরে জলঢাকায় এক শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দিলেন ইউএনও কর্মীবান্ধব সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন জাহিদ হোসেন তারাগঞ্জে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে টিন ও চেক বিতরণ কুমিল্লায় র‌্যাবের হাতে মাদক সহ গ্রেপ্তার ২ ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গাসহ গ্রেপ্তার ১ নির্মান কাজ শেষ হতে না হতেই ভেঙ্গেছে ব্রীজের প্রতিরক্ষা দেওয়াল রাণীশংকৈলে কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসে বিতর্ক ও কুইজ প্রতিযোগিতা অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিলেন আনসার সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এনসিপি’র ৩ নেতার পদত্যাগ নড়াইল ডিবি পুলিশের অভিযানে ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার ১

‘ঝপ-ঝপা-ঝপ’ শব্দের তালে তালে বিশ্বনাথে গোয়াহরি বিলে পলো বাওয়া উৎসব

আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
‘ঝপ-ঝপা-ঝপ’ শব্দের তালে তালে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের বিলে (দক্ষিণের বড় বিল) বিপুল উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে বার্ষিক পলো বাওয়া উৎসব। প্রতি বছরের ন্যায় এবারের পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দিতে দেশে এসেছেন অনেক প্রবাসী ও স্বামী-সন্তান নিয়ে পিত্রালয়ে বেড়াতে এসেছেন গ্রামের অনেক মেয়েরা। পলো বাওয়া উৎসবকে কেন্দ্র করে গোয়াহরি গ্রামে গত কয়েক দিন ধরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

সোমবার (১৫ জানুয়ারী) বার্ষিক পলো বাওয়া উৎসব শুরুর পূর্বে সকাল থেকেই গ্রামে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। সকাল ১১টার দিকে পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দেওয়া গ্রামের সকল বয়সের পুরুষ ও অন্য গ্রাম থেকে আত্মীয়-স্বজন এক সাথে গোয়াহরি গ্রামের বিলে মাছ শিকারে নামেন। তবে পানি চলাচলের ব্যবস্থা না থাকার কারণে বিলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নেই, এর সাথে কচুরিপানা থাকায় এবারের পলো বাওয়া উৎসবে মাছ শিকারের পরিমাণ কম। তাই পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দেওয়া অনেক কেই ঘরে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে।

পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্যকে যুগ যুগ ধরে আজোও বুকে ধারণ করে রেখেছেন গোয়াহরি গ্রামের বর্তমান প্রজন্মের বাসিন্দারা। তাই নিজেদের ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রতি বছর মাঘ মাসের পহেলা তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু পালিত হয়ে আসছে বার্ষিক পলো বাওয়া উৎসব। যা আজ (সোমবার) থেকে আগামী ১৫ পর্যন্ত দিন পর্যন্ত চলবে ওই উৎসব। গোয়াহরি গ্রামের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওই পনের দিন বিলে মাছ ধরার ক্ষেত্রে নেই কোন নিশেধাজ্ঞা।

এজন্য ওই পনের দিনের ভিতরে বিলে গ্রামের যে কেউ হাত দিয়ে বা টেলা জাল (হাতা জাল) দিয়ে মাছ ধরতে পারবেন। তবে গ্রামবাসীর ঐতিহ্য অনুযায়ী আগামী ১৫ দিন পর ২য় ধাপে এক সাথে আবারও পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দিবেন গ্রামবাসী।

এবারের পলো বাওয়া উৎসবে পলোর সাথে সাথে টেলা জাল (হাত জাল), উড়াল জাল, চিটকি জাল, কুচা’সহ মাছ শিকারের বিভিন্ন রকমের সরঞ্জাম নিয়ে মাছ শিকারে অংশ গ্রহন করেন কয়েক শতাধিক সৌখিন শিকারীরা। তবে বিলে পানি চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় বিলের পানি কমে যাওয়াতে মাছ শিকার হয়েছে অধিক কম। শিকারীদের হাতে শিকার হওয়া মাছের মধ্যে রয়েছে- বোয়াল, কাতলা, রুই, কারপু, শউল, গণিয়া, মিরকা’সহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ।

পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নিতে ও দেখতে সোমবার সকাল ৮টা থেকেই গোয়াহরি গ্রামবাসীর পাশাপাশি আশপাশের গ্রামের লোকজন বিলের পাড়ে এসে জমায়েত হতে থাকেন। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা আসেন বিলে পাড়ে। শিশুরাই বা কম কিসে। ঝপ-ঝপা-ঝপ শব্দের তালে তালে প্রায় ২ঘন্টা চলে বার্ষিক ওই পলো বাওয়া উৎসব।

তবে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো পলো বাইতে পারেননি অনেকেই। তবে মাছ শিকার করতে নিজ নিজ পলো নিয়ে বিলের ঝাঁপিয়ে পড়া শিকারীদেরকে এসময় মাছ ধরার এ দৃশ্যটি উপভোগ করতে বিলের পারে আসা শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের পুরুষ-মহিলা এবং দূর থেকে আসা আত্বীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিতে দেখা যায়।

সৌখিন মাছ শিকারী সাহিদুর রহমান বলেন, গত বছর ১৫টি মাছ শিকার করে ছিলাম। কিন্তু এবার মাত্র ১টি মাছ শিকার করেছি। কিসমতোও আছিল ১টা কাতলা, শিকার করছি।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলম খান বলেন, ছোট বেলা ৩টা মাছ শিকার করে ছিলাম। তা নিয়ে বাড়িতে অনেক আনন্দ হয়ে ছিল। দীর্ঘদিন পর আজ আবার পলো বাওয়াতে অংশ নিয়ে মাছ শিকার করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

সৌখিন মাছ শিকারী তাজ উদ্দিন বলেন, বিলে পানি কম থাকায় কেউ মাছ শিকার করতে পারছে, আবার কেউ পারতেছে না। তবে আমি ২টি বোয়াল শিকার করতে পেরে আনন্দ লাগছে।

গ্রামে আসা আত্মীয় সৌখিন মাছ শিকারী শামীম আহমদ বলেন, পলো বাওয়াতে অংশ নিতে খালার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। আর পলো বাওয়াতে অংশ নিয়ে ১টি বোয়াল শিকার করতে পেরে আনন্দই লাগছে।

৫ বছর পর সৌদি আরব থেকে দেশে আসা প্রবাসী গোলাম কামরান বলেন, দীর্ঘদিন পলো বাওয়া উৎসবে অংশ গ্রহন করা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। তাই এবারে দেশে এসে পলো বাওয়া উৎসবে যোগ পেতে পেরে খুবই আনন্দ পেয়েছি। আর মাছ শিকার করতে পেরে এর পরিধি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

মাছ শিকার কম হওয়ার ব্যাপারে গ্রামের প্রবীন মুরব্বী ময়না মিয়া বলেন, দিন বিলের সাথে এলাকার নদী-নালার পানি চলাচল না থাকার কারনে বিলের পানি কমে গেছে। তাছাড়া কচুরিপানাও আছে প্রচুর। এসব কারণে এবার মাছ কম শিকার করতে পেরেছেন শিকারীরা।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com