বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
নড়াইলে মদসহ বাঁধন বিশ্বাস গ্রেফতার আজ ও আগামী কালের আবহাওয়া পূর্বাভাস কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর প্রতিবাদ সভা রাণীশংকৈলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত রাণীশংকৈলে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত রামরায় দিঘি লক্ষ্মীপুরে নিষেধাজ্ঞার ভেতরেও নতুন ১০ ইটভাটা নড়াইলে হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধার র‌্যাব-১১’র অভিযানে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ধুনটে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালন নড়াইলে পৃথক অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ গ্রেফতার ২ নানা আয়োজনে পাবনায় এসএটিভি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন পলিমাটি কর্তৃক শীতবস্ত্র উপহার শহীদ আবু সাঈদের বাবা-মা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী ধুনটে গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন কৃষক দলের কৃষক সমাবেশ পাবনায় আ’লীগের অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে বিএনপি’র বিক্ষোভ পীরগঞ্জে নার্সের বিরুদ্ধে চিকিৎসা সেবা না দেয়ার অভিযোগ রাণীশংকৈলে যুব ঐক্যের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ কিশোরগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে ট্রাক্টর আহত ২ লক্ষ্মীপুরে তুচ্ছ ঘটনায় শত বছরের পুরাতন রাস্তা আউলিবেড়া দিয়ে বন্ধ রাণীশংকৈলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদক কারবারিকে কারাদন্ড

প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে শিক্ষক ও অভিভাবকগণের করণীয়

হাসানুর কবির মেহেদী- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
“শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড” আর সকল শিক্ষার ভিত্তিই হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। কিন্তু সার্বজনীন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ঝরে পড়া একটি বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার বহুবিধ কারন রয়েছে। আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে- “ঝরে পড়া রোধে শিক্ষক ও অভিভাবকদের করণীয়”।

ঝরে পড়া কি? প্রাথমিক শিক্ষায় কোন শিক্ষার্থী ৫ (পাঁচ) বছর মেয়াদী শিক্ষাচক্রে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পঞ্চম শ্রেণি সমাপ্ত করার পূর্বে যদি শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ত্যাগ করে বা লেখাপড়া ছেড়ে দেয় তখন তাকে ঝরে পড়া বলে।

প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকের করণীয়ঃ
ঝরে পড়া রোধ কল্পে একজন শিক্ষক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। নিম্নে ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকের করণীয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো।

বিদ্যালয়ে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যদিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বোধ সৃষ্টি করা। শিশুদের সঙ্গে মমত্ববোধ, স্নেহশীল, সহানুভূতিশীল এবং বন্ধুসূলভ আচরণ করা। সবল-দূর্বল শিক্ষার্থী চিহ্নিত করে দূর্বল শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ নিরাময়মূলক ব্যবস্থা নেয়া। শিখন অগ্রগতি যাচাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে পুরষ্কৃত করে শিক্ষায় উৎসাহিত করা। অভিভাবকের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা রাখা। উঠোন বৈঠক, মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা।

ম্যানেজিং কমিটির নিয়মিত সভার আয়োজন করা। শিক্ষক-অভিভাবক সমিতির নিয়মিত সভার ব্যবস্থা করা। অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুদ্ধসুরে জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, আবৃত্তি, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তব্য প্রদান, সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা প্রভৃতি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে। বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।শিক্ষার্থীদেরকে বেত্রাঘাত না করা।

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করা। শিক্ষার্থী সম্পর্কে অভিভাবককে হতাশা ব্যঞ্জক কথাবার্তা না বলা। পাঠকে সহজ বোধ্য করার জন্য শ্রেণি কক্ষে উপকরণের ব্যবহার করা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠকে সহজ ও আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে দল ভিত্তিক শিখন কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। কারণ শিক্ষকের চেয়ে সহপাঠীদের কাছ থেকে এক সঙ্গে কাজ করে নিঃসংকোচ পাঠ সহজে আয়ত্ত করতে পারবে। স্থানীয় জনসমাজকে সম্পৃক্ত করা।

শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন করা। বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্যবর্ধণ ও বিদ্যালয় প্রাঙ্গন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। মেয়ে শিশুদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করা। নিরাপদ স্যানেটেশন ব্যবস্থা রাখা। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া। আশা করা যায় একজন শিক্ষক উপযুক্ত কার্যক্রম গুলো সঠিক রুপে বাস্তবায়িত করলে বা মেনে চললে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধ অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।

প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে অভিভাবকের করণীয়ঃ
প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে অভিভাবকগণেরও অনেক গুরুত্বগূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো- শিশুদের সময়মত খাবাবের ব্যবস্থা করা। স্কুল ব্যাগ, বই, খাতা, কলম ইত্যাদির ব্যবস্থা করে দেওয়া। স্কুল ড্রেসের ব্যবস্থা করা। লেখাপড়ার অগ্রগতি সম্পর্কে বিদ্যালয়ে গিয়ে শ্রেণি শিক্ষক/প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলা। শিক্ষকের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলার জন্য সন্তানকে উপদেশ দেওয়া। বিদ্যালয় কর্তৃক আহুত বিভিন্ন সভায় অভিভাবকদের উপস্থিত থাকা। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিশুকে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করা।

সন্তানের নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখা। মৃদু শাসন ও আবদারের মাধ্যমে শিশুকে বিদ্যালয় মুখি করা। লেখাপড়া সম্পর্কে শিশুকে উৎসাহিত করা। বাল্যবিবাহ বা অল্প বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না করা। শিশুশ্রমে নিযুক্ত না করা। প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধ কল্পে অভিভাবকগণ যদি উল্লেখিত বিষয়গুলির প্রতি নজর দেন বা সচেতন হন তাহলে আশা করা যায় ঝরে পড়া অনেকটাই কমে আসবে।

প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার যেমন বহুবিধ কারণ রয়েছে তেমনি ঝরে পড়া রোধ কল্পে সরকার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সমাজ সচেতন নাগরিক, স্থানীয় জনসাধারণসহ শিক্ষক ও অভিভাবদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আজকের আলোচনায় প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ কল্পে শিক্ষক ও অভিভাবকের করণীয় যে বিষয়গুলোর উল্লেখ রয়েছে তা সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হলে ঝরে পড়া নিশ্চিত রুপে রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করি।

লেখকঃ
মোঃ মাহবুব হাসান
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
জলঢাকা, নীলফামারী।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com