শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ক্রিকেট জুয়ায় আসক্ত হয়ে ঘুমন্ত মাকে(৬৫) গলাকেটে হত্যার দায়ে তার ছেলে নাহিদ ইমরান নিয়নকে(৩৯) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার (১০ মার্চ)-২৪ ইং দুপুর ১২ টার দিকে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ আবুল বাশার মিঞা আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী নাহিদ ইমরান নিয়ন সদর উপজেলার খোর্দ্দ শিয়ালকোল গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হকের ছেলে। ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেবুন্নেসা ওরফে জেবা রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
মামলা ও ঘটনার বিবরণে প্রকাশ- ২০২০ সালের (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মুজিব সড়কস্থ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের পাশে নিজ বাসা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হকের স্ত্রী সাবেক স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা রশিদা খানমের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে নাছিম ইমরান নিশাত বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে তিনি উল্লেখ করেন যে, (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে তার বড় ভাই নাহিদ ইমরান নিয়নকে চাদর গায়ে দিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে যেতে দেখেন ভাবি পিংকি খাতুন। পরে পিংকি শাশুড়ি রশিদাকে কয়েকবার ডেকে সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরে গিয়ে দেখেন তার গলাকাটা মরদেহ পড়ে রয়েছো।
পরবর্তীতে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি (নিশাত) লোকমুখে জানতে পারেন যে তার বড় ভাই নিয়ন জুয়া খেলায় জড়িত হয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে অনেক টাকা ধার নিয়েছেন। এ কারণে তিনি তার মাকে হত্যা করে থাকতে পারেন।
এ ঘটনায় পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে নাহিদ ইমরান নিয়ন ক্রিকেট জুয়ায় আসক্ত হয়ে অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ঋণের কারণে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ছিলেন। তিনি তার মা রশিদা খানমের কাছে টাকা দাবি করেন। তার মা টাকা দিতে অস্বীকার করায় মা-ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই একপর্যায়ে নিয়ন মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ছুরি দিয়ে ঘুমন্ত মায়ের গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায় নিয়ন।
এই হত্যাকান্ডের পর থেকে দীর্ঘদিন নাহিদ ইমরান নিয়ন পালিয়ে ছিলেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন ভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। গ্রেপ্তারের পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আজ রবিবার এ রায় দেন আদালত।