সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১২ অপরাহ্ন
মোস্তফা মিয়া- পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ
রংপুরের পীরগঞ্জে ৯ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১১টায় পীরগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর পীরগঞ্জের যোদ্ধাগণ এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পীরগঞ্জের অন্যতম যোদ্ধা. নওশিন তাবাসসুম অর্পা। শুরুতেই পীরগঞ্জের সংবাদকর্মী ও জনতার পক্ষেে বীরযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান গণমাধ্যমকর্মী সেবু মোস্তাফিজ।
লিখিত বক্তবে আয়োজকগণ শুরুতেউ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০২৪ পীরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ ছাত্র সমাজের শুরু থেকে চলমান কার্যক্রমের বিবৃতি ও কতিপয় সুবিধালোভী রাজনৈতিক মতাদর্শ মহলের মিথ্যাচার, সহিংসতা, গুজব ছড়ানোর জন্য নিন্দা প্রকাশ করেন।
তারা আরও জানান, (১৬ জুলাই) ২০২৪, আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ শহীদ হলে ছাত্র আন্দোলন আরো দৃঢ় হয়। পরদিন (১৭ই জুলাই) আবু সাইদের হত্যার বিচারের দাবিতে তার নিজ উপজেলা পীরগঞ্জে সাধারণ ছাত্র ও বৈষম্যবিরোধীরা প্রতিবাদ মিছিল করে। এতে আওয়ামীলীগ সরকারের ছাত্রলীগ কর্মী ও নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সহিংসতা চালায় এবং প্রতিবাদ মিছিল ভেঙ্গে দেয়।
এরপর ১৯শে জুলাই ২০২৪, সাধারণ ছাত্র সমাজ চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০২৪ সরকারের গণহত্যা, সহিংসতা ইত্যাদির প্রতিবাদে পীরগঞ্জেও গণমিছিল, মানববন্ধন পালন করে। এতে পীরগঞ্জের সাধারণ মানুষ তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে। এরপর ৩রা আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা ১ দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলে পীরগঞ্জের সাধারণ শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে পরদিন (৪ঠা জুলাই) সকালে তাদের আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে চায়।
কিন্তু উপজেলার বড় দুই রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষের আভাস পেয়ে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে বলে এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে। এতে উপজেলার দুই রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে (একদল অন্য দলের) আগুন, ভাংচুর, ভারি অস্ত্র, লাঠি নিয়ে দুদল সহিংসতা চালায়, যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেউই ছিল না। এর দায়ভার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পীরগঞ্জ, রংপুরের সাধারণ ছাত্রদের না।
এরপর ৫ অগস্ট ঢাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাপে স্বৈরাচারী সরকার পদত্যাগ করলে সারাদেশের মত পীরগঞ্জের সাধারণ ছাত্র সমাজ দুপুরের পরে আনন্দ মিছিল ও সন্ধ্যায় শহিদের স্মরণে পীরগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জলন ও মশাল মিছিল করে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালে একটি সুবিধালোভী চক্র লুটপাট, সহিংসতা চালাতে থাকে। এদিকে সোশাল মিডিয়া, টেলিভিশনে প্রচার হয় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, সহিংসতা হচ্ছে, মন্দির, মূর্তি ভাঙ্গা হচ্ছে। যা সাধারণ ছাত্র সমাজের কাজ না।
তারা আরও বলেন, এই আন্দোলনে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের আহ্বানে, পীরগঞ্জের ভীত, আতঙ্কিত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায় পীরগঞ্জের সাধারণ ছাত্র সমাজ। ওইদিন থেকে আজ পর্যন্ত পীরগঞ্জের মাঝিপাড়া, বৈরাগিপাড়া, পালপাড়া, কুমোরপাড়া ও কসবায় ভীত মানুষদের খোজ নেয়া, তাদের সাথে দেখা করা, তাদের মনোবল বাড়ানো, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, তাদের সচেতন করতে কাজ করছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। ছাত্রদের চলমান কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের রক্ষা ও ভীত অন্যধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তাদের কিছু রাজনৈতিক মতাদর্শের সুবিধাভোগী মহল যারা সহিংসতা, গুজব ইত্যাদি ছড়িয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তারাই ৫ অগস্ট পীরগঞ্জ উপজেলায় সহিংসতা চালায়। এখন তাদের এ সহিংসতাকে সাধারণ শিক্ষার্থী সমাজের হিসাবে চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের একজনের সাথে কথা বলে আমরা জেনেছি তারা উপজেলা পর্যায়ে এখনও কোনো সমন্বয়কের লিস্ট দেয়নি। অথচ পীরগঞ্জ উপজেলায় রাজনৈতিক মতাদর্শের এই মহল নিজেদের একটি সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়কের তালিকা প্রকাশ করে ফেসবুকে মিথ্যা প্রচারণা করছে। আমরা এই মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই। পরে তারা সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।