সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
আবীর আকাশ- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১২ সালের পরে আর কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া হবে না বলে নির্দেশনা দিলেও তা অমান্য করে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ নতুন বছরের বই দিয়েও পাঠদান শুরু করেছে একটি সুবিধাভোগী মহল। স্কুল ঘর না তুলতেই শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে মাত্র চারজন ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহ করে নতুন বছরের বইও ম্যানেজ করে ফেলেছে শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে। সরকারকে ফের বেকায়দায় ফেলতে, শিক্ষকদের আন্দোলন ভারী করতে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা এরকম বেশ কয়েকটি নাম ঠিকানাহীন প্রাইমারি স্কুলের। কোনটি তৈরী হচ্ছে, কোনটি গেল বছর হয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতিষ্ঠাকালিন সন দেখানো হচ্ছে ২০১০ সাল।এমন একটি হচ্ছে পশ্চিম চর ইন্দুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখনো স্কুল ঘর তৈরীই হয়নি কিন্তু নাম দিয়ে নতুন বই এনে মাত্র চারজন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করেছে পাঠদান। এ কাজগুলো করছেন চর ইন্দুরিয়া গ্রামের মাস্টার আবদুস সোবহান নামে হাওলাদার স্কুলের শিক্ষক। তিনি এ পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে প্রায় একশ’র কাছাকাছি প্রাইমারি স্কুল খুলেছেন বলে সরেজমিন গেলে স্থাণীয়রা জানান। তন্মধ্যে ২০১১ সালের লটে কিছু স্কুল সরকারি অনুমোদন পেয়েছে।
রুবেল হোসেন নামক এক ব্যক্তি নিজেকে শিক্ষক পরিচয় দিয়ে ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকার কথা বললেও ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন এই সংখ্যা অনধিক ২০ জন হবে। তবে কেউই এ স্কুলের ছাত্র ছাত্রী নয়, তারা অন্য স্কুলের। নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত মাস্টাররা অভিভাবকদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন রকম কৌশল অবলম্বন করে এখানে আনার চেষ্টা করছেন। ফজল করিম নামের এক ব্যাক্তি জানিয়েছেন আবদুস সুবাহান হাওলাদার স্কুলের শিক্ষক হলেও তার মূল পেশা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে স্কুল নির্মাণ করা। এ পর্যন্ত সে প্রায় একশোর কাছাকাছি স্কুল নির্মাণ করেছে।
মাস্টার আবদুস সোবাহান বলেন এর আগে অবশ্য দুই একটা স্কুলের সংস্কার কাজ আমি করেছি। এই স্কুলটি আগে ছিল অন্য এক জায়গায়। এখন জমি কিনে তারা নতুন স্কুল ঘর করছে। কত সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে? তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর কিবা সরকারি হয়েছে কিনা? এর কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি ওই শিক্ষক। তবে তিনি বলেন এগুলা সব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মোঃ টিপু সুলতান বলেন- এ ধরনের কোন স্কুলের কথা আমি কখনো শুনিনি। আমাদের সরকারি বেসরকারি বা রেজিস্টার্ড স্কুলের তালিকাতেও এ ধরনের কোন নাম নেই। সোবহান মাস্টার প্রসঙ্গে বলেন -তিনি কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন, তার কিছু স্কুল সরকারি অনুমোদন হয়েছে। স্কুলঘর না হতেই শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই কিভাবে গেল এমন প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেননি শিক্ষা অফিসার টিপু সুলতান। বলেছেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মঈনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলেও তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি। তবে নতুন বই কিভাবে তাদের কাছে গেলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন সহকারী শিক্ষা অফিসারের কাছে বইয়ের চাহিদা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তার মাধ্যমে গেল কিনা আমার জানা নেই।