রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন
মুন্না শরীফ- মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লিবিয়ায় নিয়ে নির্মম নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দালাল অলিল বেপারীর বিরুদ্ধে। অলিল বেপারী মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পৃর্ব বনগ্রামের লতিফ বেপারীর ছেলে। গত রমজান মাসে ওই গ্রামের মোনাই মাতুব্বরের ছেলে মোঃ সোহেল মাতুব্বরকে আট লাখ টাকায় ইতালী নেয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে নির্মম নির্যাতন করেন অলিল বেপারী। আজ শনিবার সকালে এবিষয়ে ডাসার উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী পবিরার।
নির্যাতনের স্বীকার সোহেল মাতুব্বর সংবাদ সম্মেলনে বলেন- গত রমজান মাস থেকে প্রায় ১০ মাসে বিভিন্ন মেয়াদে আমার কাছ থেকে সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা নিয়েছে অলিল বেপারী। লিবিয়ায় আমাকে গেম করার কথা বলে তিন বার মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে, আর নির্যাতন করে টাকা আদায় করে। পরে আমার পরিচিত লোকের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দেশে ফিরে আসি। আমার মত এরকম আরো ৪/৫ জন লোক আছে, তারা এখনও লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে বন্ধী আছে। অলিল আমার পরিবার শেষ করে দিয়েছে। ভিটে মাটি যা ছিল, সব বিক্রি করে পরানডা নিয়ে বাড়ি ফিরছি। স্ত্রী ও তিনটি মেয়ে নিয়ে আমি এখন মানবতার জীবনযাপন করছি। সরকারের কাছে একটাই আবেদন আমি যাতে অতিদ্রুত আমার টাকা ফেরতসহ দালাল অলিল ও তার শাশুড়ি মাহিনুর বেগম এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।
সোহেল মাতুব্বরের পিতা মোনাই মাতুব্বর বলেন- আমার ছেলেকে আট লক্ষ টাকায় ইতালী পৌঁছে দেয়ার কথা বলে অলিল বেপারী ও তার শাশুড়ি মাহিনুর বেগম। পরে লিবিয়া নিয়ে আমার ছেলে সোহেলকে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে। কিছুদিন পর আমার ছেলের কোন সন্ধান পাইনা। হঠাৎ একদিন রাতে মোবাইলে ফোন আসলে, রিসিভ করে ছেলের কান্না শুনতে পাই এবং ওই পাশ থেকে বলে ছেলেকে বাঁচাতে চাইলে, আরও নয় লাখ পয়ত্রিশ হাজার টাকা দে। পরে ছেলেকে বাঁচাতে জায়গা জমি বিক্রি করে আবার টাকা দেই। এমন করতে করতে আরেক জনের মারফতে এক লাখ টাকা দিয়া পোলাডার জানডা ফিরাই আনছি দেশে। আমি এর বিচার চাই। আমার টাকা পয়সা ফেরত চাই, আমার প্রায় সাড়ে ২২ লাখ টাকা গেছে।
কালকিনি উপজেলা মৎসজীবী লীগের সহঃ সভাপতি মোঃ ওসমান সরদার বলেন- ঘটনা মর্মান্তিক, লোভ লালসা দিয়া এই অলিল বেপারী অনেক লোককে নিঃস্ব করে ফেলছে, আমার ভাইগ্না আছে, বার বার গেমে নিয়া টাকা নিছে। পরে এর আত্মীয় সজন কান্নাকাটি করে, আবার অলিলের বাড়ি গেছি। পরে এরা নেই নিছি, এরকম বলে। এক পর্যায় সোহেরের জানটা বাঁচিয়ে দেশে ফেরত আসে। এরকম বার বার জায়গা জমি বিক্রি করে টাকা দিয়া একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত দালালের শাশুড়ি মাহিনুর বেগম বলেন- এসব মিথ্যা কথা। আমার কাছে কোন টাকা পয়সা দেয় নাই। আমার জামাই লোক ঠিক করে দিছে, এরা সবাই ওই লোকের কাছে টাকা দিছে।
এ ব্যাপারে ডাসার থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন- আমরা এখনও অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।