বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২২ অপরাহ্ন
মাসুদ রানা- সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নাসিমা খাতুন(২২) নামে এক গৃহবধূকে জোরপূর্বক গ্যাস ট্যাবলেট সেবন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সুমন(২৬) ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটক করেছে তাড়াশ থানা পুলিশ।
শনিবার ২৪শে সেপ্টেম্বর ভোর রাতে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের চক ঝুরঝুরি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সকালে নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার ও শ্বশুর সরোয়ার হোসেন এবং শাশুড়ি ফিরোজা বেগমকে আটক করে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ নাসিমা খাতুন একই উপজেলার বেত্রাসিন গ্রামের গহের সরকারের মেয়ে ও চক ঝুরঝুরি গ্রামের সুমনের স্ত্রী।
চক ঝুরঝুরি গ্রামের খোকন আলীসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়- সাত/আট বছর আগে সুমনের সঙ্গে বিয়ে হয় নাসিমার।তাদের সংসারে দু-সন্তানের জন্ম হয়। সম্প্রতি শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে নাসিমার দ্বন্দ্ব চলছিল। এ অবস্থায় সুমন কিছুদিন আগে নাসিমাকে চাকরির জন্য ঢাকায় নিয়ে যান।
শুক্রবার ২৩শে সেপ্টেম্বর বিকেলে তারা ঢাকা থেকে ফিরে আসেন। খোকন আলী আরও বলেন- শুক্রবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ৩শ মিটার দূরে ভ্যাবড়া পুকুরপাড়ে নাসিমাকে নিয়ে যায় সুমন ও তার তিন সহযোগী। পুকুরপাড়ে তাকে প্রথমে শ্বাসরোধে ও পরে জোরপূর্বক গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
এ সময় স্থানীয় সমেজ আলী শব্দ পেয়ে বাইরে বের হন। তিনি বাড়ির লোকজনকে ডেকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সুমন ও তার সহযোগীরা নাসিমাকে অর্ধমৃত অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়।
পরে গ্রামবাসী এসে তাকে উদ্ধার করে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে গেলেও তার শ্বশুর-শাশুড়ি বাড়ির গেট খোলেনি। এ অবস্থায় অর্ধমৃত নাসিমা বলেন- তার স্বামী ও অপরিচিত তিনজন লোক তাকে খুন করার চেষ্টা করেছে। এর কিছু পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। তার মৃত্যুর পর গ্রামবাসী শ্বশুর-শাশুড়িকে অবরুদ্ধ করে রেখে পুলিশে খবর দেন।
তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরে আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- স্বামী সুমন ও তার তিন সহযোগী মিলে পুকুরপাড়ে নিয়ে নাসিমাকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর শ্বশুর সারোয়ার হোসেন ও শাশুড়ি ফিরোজা বেগমকে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।