শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
সৌদি দূতাবাসের আয়োজনে রংপুরে হিফযুল হাদীস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ব্যাটারী চালিত ভ্যানে মাদক পরিবহন কালে আটক ১ পিকআপে মাদক পরিবহনকালে গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাবের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সংবাদিকের পিতার মৃত্যুতে ফুলবাড়ী থানা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের শোক ধুনটে জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা রংপুর ক্যাডেট কলেজের আন্তঃহাউজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু সম্প্রীতির দেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রংপুরে ইসলামী আন্দেলনের গণ সমাবেশ কিশোরগঞ্জে বিলুপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্বপদে বহালের দাবি ঠাকুরগাঁওয়ে নানা আয়োজনে প্রাক-বড়দিন উদযাপন নবম বারের মতো শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক হলেন প্রফেসর আজাদ ফুলবাড়ীতে মাদক কারবারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সোনালী সকাল ও সোনালী অতীত ফুটবল ক্লাবের প্রীতি ম্যাচ সম্পন্ন থানচিতে মহান বিজয় দিবস পালন জলঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবস পালন বিজয় দিবসে রাজশাহী জেলা পরিষদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন বিজয় দিবস উপলক্ষে রংপুর মহানগর জামায়াতের আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে ইউএনও অপসারণের দাবীতে বৈষম্যের মানববন্ধন নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজাসহ দুইজন গ্রেফতার

জুয়ার টাকার জন্য মা-ছেলেকে গলাকেটে হত্যা- খুনী সাদিকুরের আদালতে জবানবন্দি

রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূলসহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সারা দেশব্যাপী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক যথারীতি অভিযান চলমান রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের ব্রাহ্মণদী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দি এলাকার মা রাজিয়া সুলতানা কাকলি এবং তার শিশু সন্তান তালহা(৮) হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নারায়ণগঞ্জ। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাদিকুর সাদি(২৪) নামে এক যুবককে গত ৯ই জুলাই নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আজ সোমবার ১১ই জুলাই ২০২২ইং রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআইর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিপিআইর মহাপরিচালক বনজ কুমার মজুমদার। বনজ কুমার জানান- জোড়া খুনের ঘটনায় নিজের সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত সাদিকুর সাদি। সে বেশ কিছু টাকা ধার করে আইপিএল ক্রিকেটে জুয়া খেলে নষ্ট করে। পরে পাওনাদারদের চাপে তার মাথা নষ্ট হয়ে যায়। তখন সে পাগলের মতো আরও টাকা খুঁজতে থাকে।

একপর্যায়ে সে জানতে পারে তার পাশের বাড়ির কাকলি ভাবির কাছে বেশ কিছু টাকা এবং ঘরে অনেক সোনাদানা আছে। সে জানতো কাকলি ভাবির একটা শিশুসন্তান ছাড়া ওই ঘরে কেউ থাকে না। কাকলির স্বামী বছর দুয়েক আগেই মারা যায়। আসামি সাদিকুর কাকলির কাছ থেকে টাকা ধার করার চিন্তা করে।

পিবিআই মহাপরিচালক জানান- ঘটনার দিন ৭ই জুলাই সন্ধ্যায় কাকলির বাড়ির আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতে থাকে সাদিকুর। রাতে যখন আশপাশের সবাই ঘুমিয়ে পড়ে তখন সে কাকলির বাড়ির গেটে গিয়া ভাবি ভাবি বলে ৩-৪ বার ডেকে গেট খুলতে বলে। কিছু সময় পর কাকলি দরজার কলাপসিবল কেচি গেট খুললে সে জানায়, তার মা ইলেকট্রিক ব্লেন্ডার মেশিনটি ধার নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছে। তখন আসামি ভিকটিমের ঘরে ঢোকে। আসামি রুমে ঢুকে দেখে ছেলে তালহা (৮) ভাত খেয়ে ঘুমের ভাবে আছে। আসামি তখন ভিকটিম কাকলিকে পাশের রুমে আসার জন্য বলে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কাকলি পাশের রুমে আসার পর আসামি ভিকটিমের হাতে-পায়ে ধরে ১০ হাজার টাকা চায়। ভিকটিম বলে তার কাছে কোনও টাকা নেই। তখন আসামি অনেক জোরাজুরি করার পর কাকলি তাকে আলমারি খুলে বলে, দেখ আলমারিতে শুধু ১০০ টাকা আছে। আর কোনও টাকা নেই। আলমারিটা খুললে সে কিছু সোনার জিনিসপত্র দেখতে পায়। তখন সোনা নেওয়ার জন্য তার লোভ লেগে যায়। ভিকটিম কাকলি তখন চাবিটা আলমারির ওপরে রাখলে আসামি দেখে ফেলে।

পরে কাকলিকে চেয়ারে বসিয়ে বিছানার ওপর থেকে তার ব্যবহৃত ওড়না দিয়া গলায় ফাঁস দেয় সাদিকুর। কাকলি নিস্তেজ হয়ে পড়ে গেলে বিছানার পাশেই রাখা ইস্ত্রি দিয়া ভিকটিমের মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে ভিকটিম পুরাপুরি অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন সাদিকুর দ্রুত ভিকটিমের রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে কাকলিকে জবাই করে ফেলে।

তারপর সে দ্রুত আলমারি খুলে স্বর্ণালংকার (দুটি স্বর্ণের আংটি, দু’টি স্বর্ণের চেইন, এক জোড়া কানের দুল) নিয়ে নেয়। আসামি ঘরের ওয়ারড্রবসহ সব জায়গায় খুঁজে নেওয়ার মতো আর কিছু পায়নি। তারপর সে পাশের রুমের খাটে ঘুমন্ত তালহাকে (ভিকটিম কাকলির ছেলে) ওই বঁটি দিয়েই জবাই করে। তখন তালহা একটি চিৎকার দিয়েছিল। তারপর সাদিকুর দ্রুত বের হয়ে যায়। এ সময় ভিকটিমের ঘরের পেছনে অজিদকে ফোন চাপতে দেখে। আসামি তখন অজিদের সঙ্গে কোনও কথা না বলে দ্রুত চলে যায়।

আসামির দেওয়া তথ্যমতে ভিকটিমের ঘর থেকে খোয়া যাওয়া একটি স্বর্ণের আংটি, একটি স্বর্ণের চেইন, এক জোড়া কানের দুল উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আসামির শোবার ঘরের বিছানার তোশকের নিচ থেকে জব্দ করা হয়। পরে আসামির দেওয়া তথ্যমতে একটি স্বর্ণের আংটি এবং একটি স্বর্ণের চেইন আড়াইহাজার থানাধীন ডরগাঁও এলাকার ক্ষুদ্র স্বর্ণের দোকানদার গোপালের কাছে থেকে জব্দ করা হয়।

আসামি সাদিকুর এগুলো তার মায়ের স্বর্ণ উল্লেখ করে ১৭ হাজার টাকায় বন্ধক রেখেছিল গোপালের কাছে। এছাড়াও আলামত হিসেবে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লোহার হাতলযুক্ত বঁটি, একটি ইস্ত্রি মেশিন ও একটি রক্তমাখা ওড়না জব্দ করা হয়।

আসামি সাদিকুর সাদি রবিবার ১০ই জুলাই নারায়ণগঞ্জ আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী অজিদ কাজীও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com