বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৩ অপরাহ্ন
মোঃ নূরন্নবী- পাবনা জেলা প্রতিনিধিঃ
একমাত্র ছেলে মিরাজুল মন্ডলকে অচল সংসার সচল করতে মালয়েশিয়া পাঠিয়েছিলেন বাবা- মা । কিন্তু সংসার সচলত দুরের কথা একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব বাবা-মা। মালয়েশিয়া যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই খোঁজ মিলছে না মিরাজুল মন্ডলের। প্রায় ৪ বছর ধরে ছেলের খোঁজে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, মালেশিয়া হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গা ধারণা দিয়ে কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বাবা-মা।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে পাবনা আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন মিরাজুলের বাবা দুলাল হোসেন এবং মা রিতা খাতুন।
দুলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ইং সালের মার্চে ঢাকার মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয় ছেলে মিরাজুল মণ্ডলকে (৩২)। যাওয়ার প্রায় দেড় বছর ভালোই চলছিল। এরপর থেকে ছেলে মিরাজুল তার রুমমেট মিলন, ফরহাদ এবং এজেন্ট রুহুল আমিন স্বপনের সঙ্গে বিরোধের কথা জানায়। তারা বিভিন্ন সময় আমার ছেলেকে হুমকি-ধামকি দিতো, টাকা-পয়সা জোর করে কেড়ে নিতো। এরই এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে আমার ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল মজনু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমার ছেলের সন্ধান দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে কিন্তু আমার ছেলের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল আমাকে সমঝোতার অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে মৃতঃ অথবা জীবিত পাওয়ার দাবি জানায়। এরপর থেকে তারা আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মানবপাচার দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দেই। এরপরও আমি কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা গরীব এবং অসহায় পরিবার। ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে এবং স্ত্রীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে জমিজমা বিক্রি করে পথে বসে গেছি। এরপর ছেলের সন্ধান পেতে অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।
মা রিতা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার সন্তানের সন্ধান চাই জীবিত অথবা মৃত অবস্থায়। মৃত্যু হলেও অন্তত তার লাশ ও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চাই। আমরা গবির মানুষ আরও কোথায় গেলে আমার সন্তানের খোঁজ পাবো? কেউ আমাদের সঠিকভাবে সাহায্য করছে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এজেন্ট রুহুল আমিন স্বপন এবং দালাল মজনু বিশ্বাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।