সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:২৯ অপরাহ্ন
হারুন-অর-রশিদ বাবু- বিশেষ প্রতিনিধি.
অর্থ আত্মসাৎ এর দায়ে অভিযুক্ত হয়ে পদ হারিয়েছেন নাগদাহ আলাইকুমারী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রংপুর জেলা সমবায় অফিসার মো. আব্দুস সবুর স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয় ও একই সাথে সমিতির ব্যবস্থাপনায় শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ায় জরুরী ভিত্তিতে পীরগাছা উপজেলা সমবায় অফিসারকে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তাব প্রেরণের জন্য বলা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাগদাহ আলাইকুমারী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লিঃ এর বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদের বিরুদ্ধে সমিতির সাধারণ সদস্য মাসুদ রানা বাদী হয়ে গত ১৬ জুলাই ২০২৩ইং রংপুর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা সমবায় অফিসারের প্রাথমিক প্রতিবেদনের পর সমবায় সমিতি আইনের ৪৯ ধারায় দাখিলকৃত প্রতিবেদন ও ৮৩ ধারায় দাখিলকৃত দায় নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সভাপতি শফিকুল ও সাধারণ সম্পাদক সমিতির শেয়ার সঞ্চয়ের ১,৯৪,১৩৯ টাকা আত্মসাৎ ও গাছ বিক্রয়ের ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর দায়ে অভিযুক্ত হয়।
অভিযুক্তদের ১২০ দিনের মধ্যে অর্থফেরত ও ৩০ দিনের মধ্যে সাধারণ সভা করে ব্যবস্থাপনা কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার আদেশ প্রদান করে জেলা সমবায় কর্মকর্তা। কিন্তু সমবায় অফিসের আদেশ অগ্রাহ্য করে নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরেও কমিটি ভেঙ্গে না দেয়ায় ও কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দেয়ায় সমবায় সমিতি আইন ২০০১ এর ২২ (২) ধারা মোতাবেক রবিবার ব্যবস্থাপনা কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার অফিস আদেশ প্রদান করে রংপুর জেলা সমবায় অফিসার মো. আব্দুস সবুর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী মাসুদ রানা নয়ন জানান, গত দেড় বছর পূর্বে দুর্নীতিগ্রস্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাত থেকে সমিতিকে রক্ষার জন্য রংপুর জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছিলাম।আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত দেড় বছরে তিন দফায় তিনজন অফিসারের তদন্তে তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। এই দেড় বছরে সভাপতি ও সেক্রেটারি আমার নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করেছে। অর্থ আত্মসাৎ এর দায়ে এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক। সেই সাথে এলজিইডির অর্থায়নে আলাইকুমারী খাল পুনঃখননে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিলুপ্ত কমিটির এই সভাপতি ও সেক্রেটারি। আওয়ামীলীগের দলীয় ক্ষমতার দাপটে তারা এলজিইডি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে সেসময় বেঁচে গিয়েছিলো। এবিষয়ে পুনঃতদন্ত করা হোক।
এবিষয়ে নাগদাহ আলাইকুমারী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন,আমাকে অভিযুক্ত করার পর আপিল করেছিলাম কিন্তু তারপরেও কমিটি ভেঙ্গে দিলে একতরফাভাবে। সমিতির কোন টাকায় জমা ছিল না। আত্মসাৎ করবো কিভাবে। আমি নির্দোষ।
রংপুর জেলা সমবায় অফিসার মো. আব্দুস সবুর জানান, অর্থ আত্মসাৎ এর দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় সমবায় আইন অনুযায়ী বর্তমান কমিটিকে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। উপজেলা সমবায় অফিসার প্রস্তাবনা পাঠালে এডহক কমিটি গঠন করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত না দিলে নিয়ম অনুযায়ী সমবায় আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে পরবর্তী কমিটি।