রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০০ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পথ হারিয়ে দিশেহারা ছোট্ট মেয়ে সানজিদা আক্তার রিমি। বয়স মাত্র ১৩ বছর। পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। কিন্তু বাবা মায়ের উপর অভিমান করে এই প্রথম এসেছে ঢাকা শহরে। এসেই সে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর ট্রাফিক পুলিশ তাকে প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসা ছোট্ট মেয়েকে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তার পিতা-মাতা।
ট্রাফিক-মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আশফাক আহমেদ গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গতকাল রবিবার ১৭ই এপ্রিল ২০২২ইং সকাল ১০ ঘটিকার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকার সামনে মেয়েটিকে এলোমেলোভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত লোকজন মেয়েটিকে বাসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় একজন পথচারী দায়িত্বরত সার্জেন্ট মোঃ ইকরামুল আলমকে জানান। তিনি তখন মেয়েটিকে মহাখালী ট্রাফিক জোন অফিসে নিয়ে আসেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়- তার নাম সানজিদা আক্তার রিমি। বয়স ১৩ বছর, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তার বাড়ি গাজীপুর জেলার কালিয়াকুর থানায়।
শনিবার ১৬ই এপ্রিল ২০২২ইং রাতে বিভিন্ন কারণে বাবা-মার সাথে সে অভিমান করে। পরের দিন ভোর ৫-টা ৩০ ঘটিকার সময় সে একা একা চন্দ্রা মোড় হতে মহাখালী বাস টার্মিনালের বাসে করে প্রথমবারের মতো ঢাকা শহরে চলে আসে। মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় নেমে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন- পরবর্তীতে তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে তার বাবা-মার সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা হয়। মেয়ের খোঁজ পেয়ে তারা তড়িঘড়ি করে নিজ বাড়ি হতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন। তার বাবা-মা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আসার আগ পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন উৎসাহমূলক এবং মোটিভেশনাল কথাবার্তা বলা হয় যাতে সে স্বাভাবিক হতে পারে এবং খুশিমনে বাবা-মার সাথে ফিরে যেতে পারে। তার বাবা-মা ঢাকায় পৌঁছানোর পর মহাখালী ট্রাফিক জোন অফিসে আসেন এবং তাদের মেয়েকে সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি আরও বলেন- বাবা-মা এবং সন্তানের মাঝে যেন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে এবং এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যাপারে তাদেরকে কাউন্সেলিং করা হয়। মেয়েটির বাবা-মা যে তাদের মেয়েকে ঢাকা শহরের ব্যস্ততম বাস টার্মিনাল মহাখালী হতে অক্ষত এবং সুস্থ অবস্থায় ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় ফিরে পেয়েছে সেজন্য মহাখালী ট্রাফিক জোনের পুলিশ সদস্যদের সকলের প্রতি তিনি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ জানান।