সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
খলিলুর রহমান খলিল- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
৪ কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল ভবন। বিদ্যালয়ের সামনে উড়ছে জাতীয় পতাকা।
শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ও বারান্দায় বাঘ- বকরি খেলায় ব্যস্ত। বিদ্যালয়ে খাতায় কলমে ৪ জন শিক্ষক থাকলেও ৩জন শিক্ষকই অনুস্থিত ১ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামাল দিতে ব্যস্ত।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ইমানগঞ্জহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে মনোরম পরিবেশে এ বিদ্যালয়ের অবস্থান থাকলেও শিক্ষাব্যবস্থা ঝিমিয়ে পড়েছে। শিক্ষার নামে চলছে তেলেসমাতি কারবার।
শিক্ষার্থীদের সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কয়টি বিষয়ের পাঠদান হয়েছে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, আমাদের প্রতিদিন ৩টি বিষয়ের ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত মাত্র ১টি ক্লাস হয়েছে। বাকি ক্লাসের খবর নাই। স্যারেরাও স্কুলে নাই।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাফিজা বেগম জানান- আমাদের প্রধান শিক্ষক কাজ আছে বলে বিদ্যালয় থেকে বেড় হয়েছেন। কি কাজ তা জানি না।
একজন সহকারী শিক্ষক একটি ক্লাস নিয়ে বাড়িতে ভাত খেয়ে ও নামাজ পড়ে আসবেন। আরেকজন ছুটিতে আছেন।
দুপুর ১টা ১৪ মিনিটে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের জন্য ২বার চেষ্টা করলেও রিসিভ করেননি তিনি।
একই অবস্থা দেখা গেছে- শ্যামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার রায়ে বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার কারনে বিদ্যালয়ে সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা অফিস যাওয়ার ছলে কর্মে ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যঘাত ঘটেছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- বিদ্যালয়ে দু’টি শ্রেণী কক্ষে পাঠদান চলছে। অফিস কক্ষের দরজা খোলা কিন্তু প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার অফিস কক্ষে নেই।
একজন সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক অফিসে না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন- স্যার একটু আগে বাইরে গেলেন।
মনে হয় স্যার তারাগঞ্জে যাবেন। স্কুল থেকে ফেরার পথে দেখা যায় এলাহীর বাজারের একটি দোকানে কয়েকজন লোকের সাথে খোশগল্পে মেতে আছেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের দেখতে পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে যাওয়ার অজুহাত দেখান।
সকাল ১১টা ১০ মিনিটে প্রধান শিক্ষকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথম বার তিনি ফোনটি কেটে দেন।
দ্বিতীয়বার মোবাইলে কল দিলে রিসিভ করেন এবং তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন- আমি এখন ব্যস্ত আছি। তারাগঞ্জে শিক্ষা অফিসে যাচ্ছি বলে ফোনটি কেটে দেন।
প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে বুড়িরহাট ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন- ওনাকে তো আমি এখন অফিসে আসতে বলিনি। দুপুরের পর আসতে বলেছি।
তিনি আরও বলেন- আমার কাছে আগে স্কুল, পরে অফিস। এটা আমি সবসময় শিক্ষকদের বলি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন- বিষয়টি জানা ছিলনা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। এর তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।